ভারতে আগামী ২৭ মার্চ থেকে স্বাভাবিক ভাবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা শুরু হতে চলেছে। যার অর্থই হল, বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে এ দেশে নতুন প্রজাতিটির ছড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
আবার বাড়ছে কোভিড। জোর দেওয়া হচ্ছে টিকাকরণে।
নতুন করে কোভিড বাড়ছে চিন, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে। সেখানে করোনার ওমিক্রন স্ট্রেনের যে শাখা প্রজাতিটি ছড়াচ্ছে, সেটি সংক্রমণের প্রশ্নে ওমিক্রনের চেয়েও শক্তিশালী বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। এই সংক্রমণের আঁচ ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ ডেকে আনতে পারে, এমন আশঙ্কাও করছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই রাজ্যগুলিকে আগেভাগেই প্রস্তুত থাকা, পরীক্ষা বাড়ানো ও প্রয়োজনে কোভিড বিধি ফের এক বার আরোপ করার সুপারিশ করে সব রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। যাঁদের ইনফ্লুয়েঞ্জা বা শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাঁদের করোনা পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক নমুনা জিনোম পরীক্ষার জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই দেশে ওমিক্রনের জন্য করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল। যদিও সংক্রমিতদের অধিকাংশের মৃদু উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বড় সংখ্যক মানুষ করোনার দু’টি টিকা নিয়ে নেওয়ায় তখন সে ভাবে ক্ষতি করতে পারেনি করোনার ওই প্রজাতি। কিন্তু এ যাত্রায় ওমিক্রনের যে শাখা প্রজাতির মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে, তা সংক্রমণের প্রশ্নে ওমিক্রনের থেকেও কয়েক গুণ শক্তিশালী। বিষয়টি বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে যে গতিতে চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকংয়ের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি এবং ইউরোপের কিছু অংশে ওই নতুন প্রজাতি ছড়াচ্ছে, তাতে খুব অল্প সময়েই সেই সংক্রমণের কবলে বিশ্বের একটি বড় অংশ আসতে চলেছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভারতে আগামী ২৭ মার্চ থেকে স্বাভাবিক ভাবে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা শুরু হতে চলেছে। যার অর্থই হল, বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে এ দেশে নতুন প্রজাতিটির ছড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিমানবন্দরগুলিতে বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা ও সেই নমুনাকে ইন্ডিয়ান সার্স কোভ-২ জিনোমিক্স কনর্সোটিয়াম (আইএনএসএসিওজি)-তে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনও রাজ্যের কোনও এলাকায় যদি হঠাৎ করে সংক্রমণের প্রকোপ বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে সেই এলাকার বাসিন্দাদের নমুনাও জিনোম পরীক্ষার জন্য পাঠাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই সব এলাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর পিছনে নতুন কোনও প্রজাতি রয়েছে কি না তা জানাই জিনোম সিকোয়েন্সের লক্ষ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘দেশে সংক্রমণ শুরু হওয়ার বার্তা বুঝতে যাতে সমস্যা না হয়, তাই পরীক্ষা ও জিনোম সিকোয়েন্সের উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।’’
বিশ্বের নানা প্রান্তে সংক্রমণ বৃদ্ধি দেখে গত বুধবার শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ চিঠিতে জানান, বুধবারের বৈঠকে প্রতিটি রাজ্যকে পরীক্ষা ও নজরদারি বাড়ানো, যাঁরা প্রতিষেধক নেননি তাঁদের টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার মতো ধাপগুলি গুরুত্ব দিয়ে পালন করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। রাজেশ চিঠিতে জানিয়েছেন, আর্থিক ও সামাজিক গতিবিধি স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে যাতে কোভিড নিয়মবিধি পালনের প্রশ্নে কোনও শিথিলতা না দেখা যায় সেই বিষয়টির দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
অন্য দিকে দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ আরও কমল। সংক্রমণের হার ১ শতাংশের নীচে। এই নিয়ে টানা ১৭ দিন এই হার বজায় রয়েছে। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫২৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
যা গত কাল ছিল ২৫২৮। মৃত্যুর সংখ্যা অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৪৯ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy