নয়ডার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র সব ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হল। প্রতীকী ছবি।
উজবেকিস্তানে ১৮ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনার জেরে নয়ডার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র সব ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হল। শুক্রবার একটি টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কনট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থায় তল্লাশি অভিযান চালায়। তারপরই বৃহস্পতিবার রাতে ওই সংস্থার নয়ডা ইউনিটে সব ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ম্যারিয়ন বায়োটেকের অন্যকম শীর্ষকর্তা হাসান হ্যারিস সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, তাঁরা তদন্তকারীদের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। রিপোর্ট না আসা অবধি তাঁরা সব ধরনের ওষুধের উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবারই ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডকে সর্দি-কাশির সিরাপ ‘ডক-১ ম্যাক্স’ উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। পাশাপাশি, প্রোপিলিন গ্লাইকলযুক্ত অন্য ওষুধগুলির উৎপাদনও বন্ধ রাখতে বলা হয় অভিযুক্ত সংস্থাকে।
বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়, ‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ এবং সে রাজ্যের ‘ড্রাগ কন্ট্রোলিং অ্যান্ড লাইসেন্সিং অথরিটি’-র যৌথ বিশেষজ্ঞ তদন্তকারী দল অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার পরেই নয়ডার ওই সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলি উৎপাদনের ছাড়পত্র বহাল রাখার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বৃহস্পতিবার তদন্তকারী দলের সদস্যরা নয়ডার ওই কারখানা ঘুরে দেখেন। তাঁরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন বলেও সরকারি একটি সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য দফতর বুধবার জানিয়েছে, ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডের তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে এখনও পর্যন্ত ১৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ বেশ কয়েক জন। ২০১২ সালে উজবেকিস্তানে নাম নথিভুক্ত করিয়েছিল ম্যারিয়ন বায়োটেক। তাদের সরবরাহ করা সর্দিকাশির সিরাপ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে উজবেকিস্তান সরকার। সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে ওই সর্দিকাশির সিরাপে প্রোপিলিন গ্লাইকলের মাত্রার তারতম্যের কারণে এমনটা হতে পারে।
অক্টোবরে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় চার ধরনের ভারতীয় সর্দিকাশির সিরাপে অস্বাভাবিক মাত্রায় ডাইথিলিন গ্লাইকল এবং এথিলিন গ্লাইকলের উপস্থিতির কারণে কিডনি বিকল হয়ে প্রায় ৭০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সবগুলি সিরাপের প্রস্তুতকারী ছিল হরিয়ানার সোনিপতের ‘মেডেন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড’ নামের একটি ওষুধ নির্মাতা সংস্থা। বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। গাম্বিয়া এবং উজবেকিস্তান-কাণ্ডের জেরে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি বার বার শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ভারতীয় ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy