গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৪ হাজার ৫৫৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিকত দেবনাথ।
দেশে দৈনিক নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা দিন তিনেক ধরে ৬০ হাজারের ঘরেই ঘোরাফেরা করছে। শুক্রবারও সেই ধারা অব্যাহত। যদিও গতকালের তুলনায় আজ নতুন আক্রান্ত একটু কম। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু এই সময়কালে দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে সর্বোচ্চ। সঙ্গে সংক্রমণ হার কমে আট শতাংশের নীচে নেমেছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৪ হাজার ৫৫৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫১ হাজার ৭২২ ও ৬০ হাজার ৯১ জন। এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের থেকে এগিয়ে ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত ২৪ লক্ষ ছাড়াল। এখনও পর্যন্ত দেশে ২৪ লক্ষ ৬১ হাজার ১৯০ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫২ লক্ষ ৪৮ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩২ লক্ষ ২৪ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। মঙ্গলবার থেকেই এই হার রয়েছে নয় শতাংশের কম। আজ তা আরও কমে হল ৭.৬১ শতাংশ। সংক্রমণ হার কমার সঙ্গে সঙ্গে গত এক সপ্তাহে নিয়মিত ভাবে বেড়েছে করোনা পরীক্ষা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭২৮ জনের। যা করোনাকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও শুরু থেকেই স্বস্তি দিয়ে আসছে। গত ক’দিনে রোজই ৫০ হাজারেও বেশি মানুষ সুস্থ হচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত মোট ১৭ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৫ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের ৭১ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৫ হাজার ৫৭৩ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালির পর ব্রিটেনকেও পিছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও দেশে মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৪৮ হাজার ৪০ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৯ হাজার ৬৩ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত ৫ হাজার ৩৯৭ জন ছাড়িয়েছে। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ১৬৭ জন।
জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছিল কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি ৩ হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে ২ হাজার ৭১৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। অন্ধ্রপ্রদেশ (২,৩৭৮), উত্তরপ্রদেশ (২,২৮০) ও পশ্চিমবঙ্গে (২,২৫৯) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (১,০৬৫), রাজস্থান (৮৩৩), তেলঙ্গানা (৬৭৪), পঞ্জাব (৭০৬), হরিয়ানা (৫১১), জম্মু ও কাশ্মীর (৫০৯), বিহার (৪২৬), ওড়িশা (৩১৪), ঝাড়খণ্ড (২০৯), উত্তরাখণ্ড (১৪৩), ছত্তীসগঢ় (১১৪) ও পন্ডিচেরী (১০২)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ১২৬ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৩৫৫ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৪২ জন। সংক্রমণের নিরিখে চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট আক্রান্ত হয়েছেন আজ দু’লক্ষ ছাড়াল। তবে জুলাই থেকেই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। রাজধানীতে এখনও অবধি মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪৯ হাজার ৪৬০ জন। উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৭৭৫ জন। পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৭ হাজার ৩২৩ জন।
বিহার (৯৪,১৯৩), তেলঙ্গানা (৮৮,৩৯৬), গুজরাত (৭৫,৪০৮), অসম (৭১,৭৯৫), রাজস্থান (৫৭,৪১৪) ও ওড়িশাতে (৫২,৬৫৩) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে হরিয়ানা (৪৪,৮১৭), মধ্যপ্রদেশ (৪২,৬১৮), কেরল (৩৯,৭০৮), জম্মু ও কাশ্মীর (২৬,৪১৩), পঞ্জাব (২৭,৯৩৬), ঝাড়খণ্ড (২০,৮৮১), ছত্তীসগঢ় (১৩,৯৩৭), উত্তরাখণ্ড (১১,৩০২) ও গোয়া (১০,৪৯৪)-এর মতো রাজ্য। ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমা
পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে ২ হাজার ৯৯৭ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৭ হাজার ৩২৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। করোনার কবলে রাজ্যে এখনও অবধি মোট প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২৫৯ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy