প্রতীকী ছবি।
সিবিএসই এবং আইসিএসই-র বাকি থাকা বোর্ড-পরীক্ষা (দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণি) বাতিলে সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বাতিল হওয়া বিষয়গুলিতে সিবিএসই যে সূত্র মেনে নম্বর দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতেও সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। থমকে যাওয়ার আগে হওয়া পরীক্ষার মূল্যায়নের ভিত্তিতে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে সিবিএসই। আইসিএসই বোর্ডের তরফেও সচিব জেরি অ্যারাথন জানিয়েছেন, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে দশম ও দ্বাদশের ফল প্রকাশিত হবে।
নীতিগত ভাবে সিবিএসই-র সিদ্ধান্ত অনুসরণের কথাই বলেছে আইসিএসই। তবে তাদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত জানান, বাতিল হওয়া বিষয়ের নম্বর ঠিক করতে হিসেব সামান্য আলাদা হতে পারে। রাতে আইসিএসই বোর্ডের সচিব জানান, যে পরীক্ষাগুলো হল না সেই পরীক্ষার নম্বর কী পদ্ধতিতে দেওয়া হবে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে সংসদের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সিবিএসই জানিয়েছে, দশম শ্রেণির বাকি পরীক্ষা আর নেওয়া হবে না। এমনিতেই তা হওয়ার কথা ছিল শুধু উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। তবে দ্বাদশের যে সমস্ত পড়ুয়া আরও ভাল নম্বরের আশায় পরীক্ষায় বসতে চান, পরিস্থিতি শোধরালে তাঁদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে। এই সুযোগের দরজা আবার শুধু মাত্র দ্বাদশের জন্য খুলে রাখতে চায় না আইসিএসই। পরীক্ষা নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে, দশমের পরীক্ষার্থীদেরও সেই সুযোগ দিতে চায় তারা। তবে সে ক্ষেত্রে সেই লিখিত পরীক্ষার নম্বরই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র এবং সিবিএসই-র তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, বাতিল হওয়া পরীক্ষার নম্বর আগে হয়ে যাওয়া পরীক্ষার মূল্যায়নের ভিত্তিতে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যেমন, কেউ হয়তো তিনটির বেশি বিষয়ের পরীক্ষা আগেই দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে, তার মধ্যে যে তিনটি বিষয়ের নম্বর সব থেকে বেশি, সেগুলির গড়ই বসানো হবে বাতিল হওয়া বিষয়গুলির নম্বর হিসেবে। সিবিএসই-র দাবি, মাত্র এক বা দু’টি পরীক্ষা দিয়েছেন খুব কম জনই। তাঁরা মূলত দিল্লির। তবে যে কেউ যদি পরে পরীক্ষায় বসেন, সে ক্ষেত্রে সেটির নম্বরই তাঁর ক্ষেত্রে চূড়ান্ত। এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সিবিএসই।
পরীক্ষা বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। আগে হওয়া পরীক্ষার মূল্যায়ন অনুসারে হাতে পাওয়া রেজাল্ট মনমতো না-হলে, পরে পরীক্ষা দেওয়ার দরজা খোলা থাকছে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরীক্ষার্থীদের একাংশ হতাশ। উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের অনেকেও।
কেন্দ্র প্রথমে সিবিএসই-র বাকি পরীক্ষা জুলাইয়ের প্রথম দু’সপ্তাহে নেওয়ার কথা বললেও তার বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন অভিভাবকদেরই একটি অংশ। প্রশ্ন তুলেছিলেন, করোনার এই কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কী ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে? এ দিন রায়ের পরে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন তাঁরা। কিন্তু তেমনই পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের অনেকে মনে করছেন, সারা বছরের পরিশ্রম এবং প্রস্তুতি অনেকটাই এতে জলে গেল।
এক-এক জনের ক্ষেত্রে সমস্যা এক-এক রকম। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সিবিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষা আটকে গিয়েছিল গোষ্ঠী সংঘর্ষে। জীবনের ‘প্রথম বড় পরীক্ষায়’ অনেককে তার খেসারত দিতে হল। করোনার জেরে দ্বাদশের পরীক্ষা শেষ হয়নি প্রায় সারা দেশেই। সে ক্ষেত্রে অনেকের আক্ষেপ, প্রথম এক-দু’টি বিষয়ের পরীক্ষা সামান্য খারাপ হলেও পরে অন্য বিষয়গুলিতে পুষিয়ে দেওয়ার যে সুযোগ মেলে, এ বার তা হাতছাড়া। কারও মন খারাপ বেশি নম্বর তোলার মতো অনেক বিষয় আর দেওয়াই গেল না বলে।
একই সঙ্গে রয়েছে অনিশ্চয়তা। নম্বর ভাল করতে পরে পরীক্ষায় বসার সুযোগের কথা বলা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কত দিনে পরিস্থিতি তার উপযুক্ত হবে, বলা কঠিন। কত দিনের মধ্যে সেই সুযোগ নেওয়ার কথা বলতে হবে, তা-ও অস্পষ্ট। অত দেরিতে হওয়া পরীক্ষার রেজাল্ট কত জায়গায় আদৌ কাজে লাগবে, প্রশ্ন তা ঘিরেও।
তা ছাড়া, দ্বাদশ পেরিয়ে অনেকে যে সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা জেইই-মেন কিংবা ডাক্তারি প্রবেশিকা এনইইটি (ইউজি)-তে বসেন, সেগুলির ভবিষ্যৎ কী, তা এখনও জানা নেই। ধোঁয়াশা বহাল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা বাতিল হওয়া-না-হওয়া নিয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy