গ্রাফিক: শোভিক দেবনাথ।
ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেল। জানুয়ারির শেষ থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৩০ লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৪০ জন নোভেল করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। রবিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান থেকে এমনই তথ্য সামনে এল। তবে এর মধ্যেও সুস্থতার হার আশা জাগাচ্ছে। মোট সংক্রমিতের মধ্যে ২২ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৬৬ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে দেশে সুস্থতার হার ৭৪.৯০ শতাংশ।
দৈনিক সংক্রমণের ক্ষেত্রে শনিবারই সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয় দেশে। গত কাল দেশে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হন ৬৯ হাজার ৮৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় তা সামান্য কমে হয়েছে ৬৯ হাজার ২৩৯। পর পর দু’দিন দৈনিক সংক্রমণ ৭০ হাজারের কাছাকাছি থাকায় উদ্বেগ দেখা গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে আমেরিকা ও ব্রাজিলের চেয়েও এগিয়ে ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকায় ৪৫ হাজার ৮৭৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ব্রাজিলে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ৩২ জন।
মোট সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫৬ লক্ষ ৬৭ হাজার ১৭৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ব্রাজিলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লক্ষ ৮২ হাজার ৩৬২। কিন্তু প্রতি দিন দেশে যে ভাবে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, তাতে খুব শীঘ্র ভারত দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: দাউদের ঠিকানা পাকিস্তানেই, কবুল করল ইসলামাবাদ
গত কালের তুলনায় এ দিন দেশে মৃত্যুসংখ্যা খানিকটা হলেও কমেছে। গত কাল যেখানে ৯৪৫ জন করোনা রোগী প্রাণ হারান, গত ২৪ ঘণ্টায় তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯১২। সবমিলিয়ে দেশে এখনও পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৭০৬ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৯৮৯ জন করোনা রোগী। গতকাল যদিও ৬৩ হাজার ৬৩১ মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন।
প্রতি দিন যত সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হয় এবং তাঁদের মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। অগস্টের শুরু থেকে যত সম্ভব বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়। গতকাল সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৩৬ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। তার পরেও সংক্রমণের হার ৬.৮৩ শতাংশ ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ ১ হাজার ১৪৭ জনের করোনা পরীক্ষা হলেও সংক্রমণের হার বেড়ে ৮.৬৪ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটে
দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৬ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৪২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ৯৯৫ জনের। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই ২৯৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেখানে। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার ১১৪ জন করোনা রোগী সেরে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯ হাজার ২৪১ জন।
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। সেখানে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৭৩ হাজার। করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত ৬ হাজার ৪২০ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ২৮০ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার মানুষ নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৮৯ জনের।
তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে কর্নাটক। সেখানে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৭৬। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪ হাজার ৬১৫ জন করোনা রোগী। পঞ্চম স্থানে থাকা উত্তরপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৮২ হাজার মানুষের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮৬৭ জনের। সেই তুলনায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ঢের বেশি। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৪ হাজার ২৮৪ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। সবমিলিয়ে আক্রান্ত ১ লক্ষ ৬০ হাজার ১৬ জন।
তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলায় এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৯৬ জন কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৪ হাজার ৯৫৯ করোনা রোগী। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৭৩৭ জনের। তালিকায় অষ্টম, নবম এবং দশম স্থানে যথাক্রমে রয়েছে বিহার, তেলঙ্গানা এবং অসম। বিহারে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫০৩ জনের। তেলঙ্গানায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪ হাজার ২৪৯। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৭৫৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অসমে মোট ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২৩৪ জনের।
এ ছাড়াও গুজরাতে মৃত্যুসংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ২ হাজার ৮৮১-তে। মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং পঞ্জাবে।
আরও পড়ুন: তৃণমূল সরকারের কাছ থেকে পাওয়া জমি ফিরিয়েই দিলেন সৌরভ
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy