Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Policy Commission

জানলা খোলা রাখার পরামর্শ

দেশে জীবনদায়ী ওষুধের স্বল্পতা, কোন বয়সিরা দ্বিতীয় দফায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তা জানাতে আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্র।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫০
Share: Save:

করোনা ভাইরাস হাওয়ায় ছড়াতে পারে, এমন সম্ভাবনার দাবি করা হয়েছিল ছ’জনের গবেষণায়। আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় উল্লিখিত সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন না কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা।

দেশে জীবনদায়ী ওষুধের স্বল্পতা, কোন বয়সিরা দ্বিতীয় দফায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তা জানাতে আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্র। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল আজ জানান, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। যার মধ্যে একটি হল, এটি হাওয়ার মাধ্যমে ছড়াতে পারে এবং সেই তথ্য কিছুটা হলেও ঠিক। তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। ল্যানসেটে প্রকাশিত ওই গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিনোদ বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ সারফেস বা পৃষ্ঠতলের চেয়ে বায়ুমাধ্যমে বেশি ছড়ায়। এ ধরনের সংক্রমণের আশঙ্কা বদ্ধ ঘরে বেশি থাকে। বদ্ধ ঘরে যেখানে অনেক লোকের সমাগত হতে পারে এবং সেখানে শীতাতপ যন্ত্র চললে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। তাই এই পরিস্থিতিতে জানলা-দরজা খুলে রাখা শ্রেয়।’’ এর বেশি আর এ নিয়ে ব্যাখ্যা করতে চাননি নীতি আয়োগ কর্তা। তবে তিনি জানান, এর জন্য কোভিড সতর্কবিধিতে পরিবর্তন হচ্ছে না। আমেরিকা, কানাডা ও ব্রিটেনের ছ’জন বিজ্ঞানী সম্প্রতি গবেষণার পর দাবি করেছেন, এমন কিছু পরিবেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, যার সঙ্গে জলকণার সম্পর্ক নেই, বরং বায়ু চলাচলের মাধ্যমে তা ছড়িয়েছে।

দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ে কারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। আজ তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের ডিজি বলরাম ভার্গব দাবি করেন, প্রথম দফা সংক্রমণের সময় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসে মোট সংক্রমিতের মধ্যে ৩১ শতাংশের বয়স ছিল ত্রিশ বছরের নীচে। এ বার দ্বিতীয় দফায় মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ত্রিশ বছরের কমবয়সিরা মোট সংক্রমণের ৩২ শতাংশ। প্রথম ও দ্বিতীয় দুই দফাতেই মোট সংক্রমিতের মধ্যে ২১ শতাংশের বয়স ৩০-৪০ বছরের মধ্যে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রেমডেসিভিয়ার ওষুধের খোঁজে হাহাকার শুরু হয়েছে দেশে। এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া আজ জানান, রেমডেসিভিয়ার ম্যাজিক ওষুধ নয় যে তা দিলেই করোনা রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন। বরং সময়ের আগে বা সময়ের পরে ওই ওষুধ প্রয়োগ হলে রোগীর জীবন সঙ্কট হতে পারে। তাঁর ব্যাখ্যা, গবেষণায় দেখা গিয়েছে রেমডেসিভিয়ার মৃত্যুহার কমাতে পারে না। রোগীর হাসপাতালে থাকার মেয়াদ কিছু দিন মাত্র কমাতে পারে। গুলেরিয়ার কথায়, রেমডেসিভিয়ার কখন প্রয়োগ হবে, সেটাই হচ্ছে বড় কথা। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে ভাইরাল লোড কমানোর প্রশ্নে রেমডেসিভিয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠিক তেমনই স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সংক্রমণের গোড়ায় দিলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

বর্তমানে রোগীদের চিকিৎসকেরা রেমডেসিভিয়ার, টোসিলিজুমাবের মতো ওষুধ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যা উচিত নয় বলে মনে করেন গুলেরিয়া-ভার্গবেরা। তাঁদের দাবি, চিকিৎসকেরা না বুঝে রোগীর ক্ষতি করছেন। বরং জাতীয় কোভিড প্রোটোকল মেনে চিকিৎসা করার উপরে জোর দিয়েছেন দুই স্বাস্থ্যকর্তাই। গুলেরিয়া বলেন, ‘‘করোনা প্রোটোকলে রেমডেসিভিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল ড্রাগ। মাত্র ২% রোগীর প্রয়োজন হয়ে থাকে টোসিলিজুমাব।’’ তাঁর দাবি, উন্নত দেশে রোগীকে কেবল প্যারাসিটামল, স্যালাইন ও মাল্টি ভিটামিন দিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে। বাড়িতে থাকা রোগীকে রেমডেসিভিয়ার না দেওয়ার উপরে জোর দিয়ে গুলেরিয়া বলেন, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি ও শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে এমন রোগীকেই শুধু ওই ওষুধ দেওয়া উচিত।’’ কালোবাজারি ঠেকাতে ওই ওষুধের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিনোদ।

কেন দ্বিতীয় দফায় অক্সিজেনের প্রয়োজন বেশি পড়ছে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গবের মতে, সম্ভবত যাঁরাই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাঁদের সামান্য শ্বাসকষ্ট হলেই অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তাই এই ঘাটতি। তাই রাজ্য প্রশাসন ও হাসপাতালগুলিকে বিবেচনা করে অক্সিজেন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন ভার্গব।

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Coronavirus in India Policy Commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy