ফাইল চিত্র।
প্রতিষেধক নীতি নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপ বাড়ছে মোদী সরকারের। এক দিকে ঘরোয়া ভাঁড়ারে টান। বিরোধীরা প্রতি দিন তোপ দাগছেন ভিন্ দেশে রফতানি বন্ধের দাবিতে। অন্য দিকে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের প্রাধান্য বাড়াতে ‘প্রতিষেধক-মৈত্রী’তে অটল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি জানিয়েছেন, “ভারত তার সম্পদ অন্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” এরই মধ্যে নেপাল, ইরানের মতো দেশগুলি থেকে অভিযোগের স্বর প্রকাশ্যে চলে এসে সরকারের অসহায়তাকে প্রকট করে তুলল। দেশগুলির বক্তব্য, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নেওয়ার পর হা করে বসে আছে তারা। দু’মাস অতিক্রান্ত হতে চলল, দ্বিতীয় ডোজ়ের দেখা নেই!
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে নেপালের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ গাওয়ালি সরাসরি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বক্তব্য, পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে ১০ লক্ষ ডোজ় কোভিশিল্ড আসার জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন। এখনও যা রওনা হয়নি ভারত থেকে। ফলে নেপালবাসীর দ্বিতীয় ডোজ়ের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ইরানের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, ভারত বায়োটেকের বকেয়া কোভ্যাক্সিন ডোজ় (যার দাম চুকিয়ে দিয়েছে তেহরান) যেন দ্রুত তেহরানে পৌঁছয়। নয়াদিল্লির ইরান দূতাবাস থেকে করা বেশ কিছু টুইটে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ইরান বা কাঠমান্ডুর পাশাপাশি ব্রাজিল, সৌদি আরব, মরক্কো, দক্ষিণ কোরিয়া ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স এবং ভিয়েতনামে প্রতিষেধক পরিকল্পনাও ধাক্কা খেয়েছে ভারত রফতানি বন্ধ রাখায়।
সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মোট ২০ লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক আমদানির চুক্তি করেছিল নেপাল। প্রথম দফায় তার অর্ধেকটা পাঠানো হয়েছে ছ’সপ্তাহ আগে। সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফার ডোজ় পাঠাতে বিলম্বের কারণে হাপিত্যেশ করে বসে আছেন নেপালবাসী। নেপাল বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, গাওয়ালি ভারতের বিদেশমন্ত্রীকে বলেছেন, “নেপালবাসী খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ফলে প্রতিষেধক পাঠানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য ভারত পদক্ষেপ করুক।” জানা গিয়েছে, জয়শঙ্কর তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, “অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেপালের পাশে আছে ভারত।”
শুধু বিদেশে রফতানি নয়, দেশেও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ় দিতে পারাটাও অনেক রাজ্যে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে অদূর ভবিষ্যতে, তৈরি হয়েছে এমন আশঙ্কাও। সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদার পুনাওয়ালা আজ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অনুরোধ করেছেন, কোভিশিল্ড তৈরির জন্য যে কাঁচামাল সে দেশ থেকে আমদানি করা হয়, তার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে। তাঁর টুইট, “মাননীয় প্রেসিডেন্ট, এই ভাইরাসকে ধ্বংস করার জন্য যদি সত্যই আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকি, তা হলে আমেরিকার বাইরের প্রতিষেধক সংস্থার পক্ষ থেকে আমার বিনীত অনুরোধ, কাঁচামালের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন। তা হলে প্রতিষেধক উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।” বাইডেন প্রশাসন ফেব্রুয়ারি মাসে এই কাঁচামাল রফতানির প্রশ্নে স্বল্প মেয়াদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সূত্রের খবর, নিজেদের দেশে উৎপাদনের ক্ষেত্রে যাতে কাঁচামালের ঘাটতি দেখা না-দেয়, তাই এই সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy