ছবি: পিটিআই।
করোনাভাইরাস আতঙ্ক এ বার জোরদার চেপে বসল সংসদে। একদিকে যেমন সাংসদদের একের পর এক কোয়রান্টিন হওয়ার খবর আসছে, অন্য দিকে বিমানবন্দরের ভিতর দিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অগ্রাহ্য করে অনেক সাংসদই ফিরে যাচ্ছেন নিজেদের রাজ্যে।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া ‘জনতা কার্ফু’র নিদান নিয়ে আজ দিনভর চাপানউতোর চলেছে সংসদে। কংগ্রেস, তৃণমূল–সহ বিরোধীদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী উপদেশ দিচ্ছেন বয়স্কদের বাড়ি থেকে না বেরতে। নিজেও সংসদে আসছেন না। কিন্তু এত বার সাময়িক অধিবেশন মুলতুবির অভিযোগ সত্ত্বেও সংসদ চালিয়ে যাচ্ছেন!
আজ কোয়রান্টিনে চলে গিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। গায়িকা কণিকা কপূর সম্প্রতি লন্ডন গিয়েছিলেন। তিনি ফিরে এসে বেশ কয়েকটি পার্টিতে যান। তাতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী বসুন্ধরা রাজের পুত্র তথা সাংসদ দুষ্মন্ত সিংহও। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের নমুনা পাওয়া যায় ওই গায়িকার শরীরে। দুষ্মন্তের মতো অনেককেই তিনি সংক্রমিত করেছেন বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। ১৮ তারিখ এই দুষ্মন্তের সঙ্গে ডেরেক দু’ঘণ্টা বসেছিলেন একটি সংসদীয় বৈঠকে। আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি একটি ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়ে নিজের কোয়রান্টিন হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ডেরেক। তাঁর কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বেশির ভাগ সময়েই সংসদে দেখা যাচ্ছে না। উনি নিজে না এসে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় বলছেন, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়স্কদের বাড়ি থেকে না বেরোতে। উনি পরস্পরবিরোধী বার্তা দিচ্ছেন। যা উপদেশ দিচ্ছেন, তার বিপরীত কাজ করছেন সংসদ খুলে রেখে।’’ তাঁর বক্তব্য, চলতি সংসদ অধিবেশনে দু’টি কক্ষ মিলিয়ে মোট আলোচনার মাত্র ৩% ব্যয় করা হয়েছে করোনাভাইরাস মোকাবিলা নিয়ে।
আরও পড়ুন: রবিবারের জনতা-কার্ফুতে বাতিল হচ্ছে প্রায় ৩৭০০ ট্রেন
প্রধানমন্ত্রীর গতকালের বক্তৃতা নিয়ে আজ লোকসভায় সরব হন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর বাজারে আগুন লেগে গিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় দেশের মানুষের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা উচিত ছিল। যারা দিনমজুর, অটো বা ট্যাক্সি চালক, রাস্তার দোকানি, ছোট বা মাঝারি ব্যবসায়ী, তাঁদের জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ৩ মাসের অগ্রিম দেওয়া হোক।’’ অধীরের বক্তব্যের সমর্থনে উঠে দাঁড়ান তৃণমূলের সৌগত রায়, ডিএমকে-র কানিমোজি। সাময়িক কক্ষত্যাগ করে কংগ্রেস।
পরে রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার স্বপক্ষে বলতে উঠে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘‘দেশের সংসদ নিজের গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালন করছে। গোটা দেশের কাছে সরকারি নেতৃত্বের একটি বার্তা যাচ্ছে। আমরা করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছি একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে।’’ তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, আত্মবিশ্বাস দেখাতে হলে সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী আসুন এবং কথা বলুন। বিরোধীদের বক্তব্য, বাজেটের প্রক্রিয়ার একটি বিলই বাকি রয়েছে, সেটি হল অর্থ বিল। চাইলে সরকার বুধবারই সেটি পাশ করাতে পারত। কিন্তু ইচ্ছা করে তা করছে না। যাতে জোর করে সংসদের অধিবেশন টেনে রাখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy