গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ষাটের গণ্ডি পেরিয়ে এ বার পঁয়ষট্টি ছুঁইছুঁই! শুক্রবার ষাট হাজারের বেড়া টপকানোর পরে কিছুটা থমকেছিল করোনার গতি। গত ২৪ ঘণ্টার তা ফের দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হল। নতুন করে সংক্রমিত হলেন ৬৪,৩৯৯ জন। ফলে সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছল ২১ লক্ষ ৫৩ হাজার ১০-এ।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণের হার ৮.৯৫ শতাংশ। যা গত দু’দিনের চেয়ে সামান্য কম। প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ১০ শতাংশের নীচে ছিল এই হার। কিন্তু শুক্রবার তা বেড়ে ১০.৮৮ শতাংশ হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই মূহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৬ লক্ষ ২৮ হাজার ৭৪৭। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯,৬৫৯ জন অ্যাক্টিভ করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও ৮৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে সারা দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৪৩ হাজার ৩৭৯।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চললেও, ভারতে করোনা রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই স্বস্তি দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ লক্ষ ৮০ হাজার ৮৮৪ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সুস্থতার হার প্রায় ৬৮.৭৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৩ হাজার ৮৭৯ জন।
সংক্রমণের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে ভারত। প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে যথাক্রমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিল। মৃত্যুর নিরিখেও ওই দুই দেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে। সংক্রমণের সংখ্যার নিরিখে ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকলেও মৃত্যুর হিসেবে এগিয়ে গ্রেট ব্রিটেনও। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে সব দেশকে ছাপিয়ে প্রথম স্থানেই রয়েছে ভারত।
চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, এক-একটি রাজ্যে এক-এক সময়ে শীর্ষে পৌঁছবে করোনা সংক্রমণ। অর্থাৎ, দেশ জুড়ে এক বারে নয়, বরং বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্ন ভাবে একাধিক বার (মাল্টিপল) সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটবে করোনার।
আরও পড়ুন: মৃত ২ হাজার পার, করোনা সংক্রমণে কেন্দ্রের নজরে এ রাজ্যের ৫ জেলা
সংক্রমণ ও মৃত্যু দু’টি ক্ষেত্রেই এখনও প্রথম স্থানে মহারাষ্ট্র। সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৭ হাজার ৩৬৭ জন করোনা আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। তামিলনাড়ুতে ৪,৮০৮, দিল্লিতে ৪,০৯৮, কর্নাটকে ৩,০৯১, গুজরাতে ২,৬২৮, উত্তরপ্রদেশে ২,০২৮, পশ্চিমবঙ্গে ২,০০৫ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ১,৯৩৯ জন করোনা আক্রান্তের এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি সঞ্জয় দত্ত
সংক্রমণের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে মোট ৫ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪ জন করোনা আক্রান্ত। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৯০ হাজার ৯০৭ জন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে আক্রান্ত ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৪০ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৯২৪ জন। পঞ্চম স্থানে থাকা দিল্লিতে আক্রান্ত ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ১২৭ জন। ষষ্ঠ উত্তরপ্রদেশে ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৩৮। সপ্তম স্থানে থাকা পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমিত ৯২ হাজার ৬১৫ জন।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy