চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার সেই দৃশ্য।
কয়েক দিন আগেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ‘ঈশ্বরের অবতার’ বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেই চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। হেনস্থার শিকার হচ্ছেন পুলিশকর্মীরাও।
করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, এমন এক ব্যক্তিকে খুঁজে বার করতে গতকাল মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের টাটপাট্টি বাখাল এলাকায় গিয়েছিল ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঁচ জনের একটি দল। অভিযোগ, দলের সদস্যদের গালিগালাজ করা হয় এবং তাঁদের উপরে হামলা চালান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন দুই মহিলা চিকিৎসক। গোটা ঘটনার ভিডিয়ো সামনে এসেছে। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দলটির দিকে ইট-পাটকেল ছোড়া হচ্ছে। লাঠি হাতে তাঁদের তাড়া করছে ক্ষুব্ধ জনতা। তবে এই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। এই ঘটনায় মামলা রুজু করে সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইনদওরের কালেক্টর মণীশ সিংহ বলেন, ‘‘ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে কেউ রেহাই পাবে না। তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এই হামলার কড়া নিন্দা করে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, "করোনা-যুদ্ধে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁদের উপরে এমন হামলা অত্যন্ত অন্যায় এবং নিন্দাজনক। অন্য কোথাও যাতে আর এ ধরনের ঘটনা একটাও না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য এবং কেন্দ্রকে।" সোমবার ইনদওরেরই রানিপুরা এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের হামলার মুখে পড়েছিল কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির খোঁজ নিতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দল।
গতকাল হায়দরাবাদের এক সরকারি হাসপাতালে মারা যান ৪৯ বছরের এক করোনা রোগী। মৃতের তিন আত্মীয় করোনার উপসর্গ নিয়ে সেখানে চিকিৎসাধীন। পরিজনের মৃত্যুর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। হাসপাতালেও ভাঙচুর চলে। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন তাঁরা। হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার অঞ্জনি কুমার হাসপাতালে পৌঁছলে ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনিও। ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন তেলঙ্গানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী এতেলা রাজেন্দ্র। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থার খবর মিলেছে গুজরাতের সুরাত থেকেও। রেহাই পায়নি পুলিশও। গতকাল বিহারে মুঙ্গেরে করোনা সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ করতে যান স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশকর্মীরা। অ্যাম্বুল্যান্স এবং পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন স্থানীয়রা। দিল্লির নিজামুদ্দিনের জমায়েতে যোগদানকারীদের খোঁজ নিতে গিয়ে বেঙ্গালুরুতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন এক মহিলা সমাজকর্মী। মুম্বইয়ে একই কাজ করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন এক ব্যক্তি। বেঙ্গালুরুতেই করোনা নিয়ে বাড়ি বাড়ি সচেতনতা প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হন আশাকর্মী কৃষ্ণাবেণী। মারধর করে তাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy