প্রতীকী ছবি।
আইসোলেশন ওয়ার্ডে ডিউটি পড়েছিল। তার জন্য চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন এক চিকিৎসক। ওই হাসপাতালেরই অন্য ওয়ার্ডে চাকরিরত তাঁর স্ত্রীও পদত্যাগ করেছেন। ঝাড়খণ্ডের সিংভূম জেলার ওই চিকিৎসক দম্পতিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে মহামারি আইনে এফআইআর দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বাতিল হতে পারে তাঁদের মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)-এর রেজিস্ট্রেশন। যদিও ওই চিকিৎসক দম্পতির দাবি, তাঁরা অফিসে রাজনীতির শিকার। আপাতত কাজে যোগ দিলেও তাঁরা করোনা বিপর্যয় কাটলেই ইস্তফা দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
সিংভূম সদর হাসপাতালের এই ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের চিকিৎসক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, তিন দিন আগেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অলোক তিরকেকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পর সোমবার রাতে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠান। মঙ্গলবার সকালে ই-মেলের মাধ্যমেও একই চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। এর পরেই স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক মঞ্জু দুবে জানিয়েছেন, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নিতিন মদন কুলকার্নির নির্দেশ মতো অলোক তিরকেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। না হলে ঝাড়খণ্ড মহামারি (কোভিড-১৯) নিয়ন্ত্রণ আইন ২০২০ এবং ১৯৮৭ সালের মহামারি আইনে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে। কাজে যোগ না দিলে এমসিআই-এর রেজিস্ট্রেশনও বাতিল হতে পারে।
আরও পড়ুন: তামিলনাড়ুতে করোনায় মৃত ১, দেশে মৃত্যু বেড়ে ১১
অলোক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আগে সিংভূম জেলাতেই কর্মরত ছিলেন তিনি। সম্প্রতি ইস্তফা দিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠিত দুমকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাজে যোগ দেন। কিন্তু কয়েক দিন আগেই সেখান থেকে আবার ইস্তফা সিংভূম সদর হাসপাতালে কাজে যোগ দেন। তিন দিন আগে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ডিউটি দেওয়া হয়। দু’দিন সেই ওয়ার্ডে কাজ করার পরেই ইস্তফার চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। ওই হাসপাতালেই অন্য বিভাগে কর্মরত তাঁর চিকিৎসক স্ত্রী। তিনিও ইস্তফা দেন। মঞ্জু দুবে জানিয়েছেন, হাসপাতালের ২৩ জন চিকিৎসকের মধ্যে আর কেউই ইস্তফার কথা বলেননি।
অন্য দিকে ইস্তফা দেওয়া অলোক তিরকের দাবি, ‘‘আমার স্ত্রী ও বোন দু’জনেই অসুস্থ ও সংক্রমণপ্রবণ। বোনের সম্প্রতি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়েছে। আমি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকলে তাঁদেরও সংক্রমণের প্রবল সম্ভাবনা। সেই কারণেই আমরা ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমি অফিস রাজনীতির স্বীকার।’’ তাঁর বক্তব্য, আমি এখানে পুনরায় কাজে যোগ দিয়েছি সংক্রমিণের সম্ভাবনা নেই এমন রোগের চিকিৎসা বিভাগে। কিন্তু চার দিন আগে কাজে যোগ দেওয়ার পরের দিনই আমাকে করোনা আইসোলেশন বিভাগে নিযুক্ত করা হয়েছে। অন্য কোনও চিকিৎসককে কেন ওই জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হল না। আমি একা কী ভাবে এত রোগীর চাপ সামলাব?’’
আরও পড়ুন: এ বার করোনার ভরকেন্দ্র হতে চলেছে আমেরিকা? অশনি সঙ্কেত দিল হু
আপাতত কাজে যোগ দিচ্ছেন জানিয়েও অলোক তিরকের বক্তব্য, করোনা সঙ্কট কাটলেই পাকাপাকি ভাবে ইস্তফা দেবেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘পালিয়ে যাওয়ার মানসিকতা আমার নেই। কিছু দিনের জন্য পরিষেবার কাজে যুক্ত থাকব। তবে মাসখানেকের মধ্যে কোভিড-১৯ বিপর্যয় মিটে গেলেই চাকরি থেকে ইস্তফা দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy