চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত। ছবি- পিটিআই।
করোনা সংক্রমণের ঘটনা ভারতকে আরও স্বনির্ভর হয়ে ওঠার শিক্ষা দিল বলে মনে করেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত। তাঁর মতে, এই ঘটনাই শেখাল, চেষ্টা করলে আমরা সব ক্ষেত্রেই অন্যের উপর নির্ভরতা ছাড়তে পারি। গত কয়েক সপ্তাহে যেমন আমরা দেশীয় প্রযুক্তিতে ভারতেই ভেন্টিলেটর বানিয়েছি, তেমনই বিদেশ থেকে কিনে না এনে এ দেশেই বানাতে পারি বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র ও সমর-সরঞ্জামও। আর ভেন্টিলেটর বানানোর মতোই সমরাস্ত্র, সমর-সরঞ্জাম বানাতে নিতে পারি এ দেশের বিজ্ঞানী, অধ্যাপকদের পরামর্শ, পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতাকে মূলধন করে। এই পরিস্থিতিতে যে ধৈর্য আর নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজনই সবচেয়ে বেশি, সে কথাও মনে করিয়ে দেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ।
রাওয়ত রবিবার বলেন, ‘‘আমাদের বড় শিক্ষা হয়েছে। এত দিন যে ভেন্টিলেটর আমরা বিদেশ থেকে আনতাম, দেশেই তা সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে বানাতে এগিয়ে এলেন বিজ্ঞানী ও বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। তার ফলে, ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আমরা ভারতেই ভেন্টিলেটর বানাতে শুরু করেছি। এটা অভূতপূর্ব ঘটনা।’’
তাঁর মতে, এর থেকে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেরও অনেক কিছু শেখার আছে। আমরা বিদেশ থেকে সমরাস্ত্র কিনে আনি। কিন্তু এ বার যদি সে সব বানানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য আমাদের দেশের বিজ্ঞানীদের ভাবতে বলা হয়, তা হলে আমরা সেগুলি ভারতেই বানাতে পারব।
রাওয়তের কথায়, ‘‘এখন আমাদের সব ক্ষেত্রেই স্বনির্ভর হয়ে ওঠার সময় এসেছে। সঙ্কটের সময়েই দেশকে আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে হয়। আমরা যদি আঞ্চলিক শক্তি হয়ে উঠতে চাই, তা হলে আমাদের অন্য দেশকেও সাহায্য করতে হবে। এই সঙ্কটের সময় যে ভাবে এগিয়ে এল দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্র, আমি নিশ্চিত, সেটা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও করা সম্ভব।’’
ভিডিয়ো কনফারেন্সে গ্রামপ্রধানদেরও শুক্রবার একই কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন- আমেরিকায় মৃত্যু ছাড়াল ৫৩ হাজার
আরও পড়ুন- এ বার কিম জংয়ের ‘মৃতদেহ’ ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়
চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের বক্তব্য, সেনাবাহিনীকে এখন কারও নির্দেশের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে চলবে না। মানুষ ও সরকারের প্রয়োজনে যত তাড়াতাড়ি কাজটা করা যায়, সে দিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে।
রাওয়তের কথায়, ‘‘সেই কাজটা করার জন্য সবচেয়ে আগে প্রয়োজন করোনা সংক্রমণ থেকে সেনাবাহিনীকে দূরে রাখা। যদি আমাদের বায়ুসেনা, নৌসেনা ও পদাতিক সেনারাই সংক্রমিত হন, তা হলে তাঁরা মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন কী ভাবে?’’
রাওয়ত স্বীকার করেছেন, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীতে কয়েক জন সংক্রমিত হয়েছেন। ‘‘তবে সংখ্যাটা খুবই অল্প। নৌবাহিনীর ২১ জনের সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে’’, বলেছেন রাওয়ত।
জানিয়েছেন, তার পরেই কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে সেনাবাহিনীতে। আর সেটা সকলেই মেনে চলছেন অক্ষরে অক্ষরে।
তবে সেনাবাহিনী আর আমজনতা যে এক নন, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের মন্তব্য, ‘‘সেনাবাহিনীতে নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা আর ধৈর্যের শিক্ষাটা শুরু থেকেই দেওয়া হয়। তাতেই জওয়ান, অফিসাররা অভ্যস্ত। তাই কড়া নির্দেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তাঁদের তেমন অসুবিধা হয় না। সে জন্যই করোনা সংক্রমণ ব্যাপক আকার নিতে পারেনি সেনাবাহিনীতে। এটা বুঝতে পারছি, লকডাউনের সময় গৃহবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে মানুষ ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন। কিন্তু সেটা হারিয়ে ফেললে চলবে না।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy