Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Corona Virus in India

Coronavirus in India: স্কুল খোলার শর্ত সব ছাত্রের টিকাকরণ নয়, জানিয়ে দিল কেন্দ্র

কোভিডের তৃতীয় ঢেউ দরজায় কড়া নাড়ার সময়ে এমনিতেই ছোটদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে সংশয়ে বহু অভিভাবক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২৮
Share: Save:

করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে প্রত্যেকের প্রতিষেধক নেওয়া ছাড়া যে গতি নেই, তা বার বার বলেছে কেন্দ্র। একই কথা শোনা গিয়েছে অধিকাংশ চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞের মুখে। কিন্তু তা বলে সমস্ত স্কুলপড়ুয়ার টিকাকরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসরুমের দরজা তাদের জন্য বন্ধ করে রাখার পক্ষপাতী নয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার তারা জানিয়েছে, স্কুল খোলার প্রশ্নে শিশুদের টিকাকরণ আবশ্যিক নয়। অর্থাৎ, দেশে সমস্ত স্কুলপড়ুয়ার প্রতিষেধক নেওয়ার পালা শেষ হলে তবে বিদ্যালয়ের দরজা খুলবে, এমন শর্ত চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় তারা।

কোভিডের তৃতীয় ঢেউ দরজায় কড়া নাড়ার সময়ে এমনিতেই ছোটদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে সংশয়ে বহু অভিভাবক। তার উপরে কেন্দ্রের এই ঘোষণা রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে তাঁদের অনেকের। সম্ভবত সে কথা মাথায় রেখেই মন্ত্রক একই সঙ্গে জানিয়েছে, স্কুল খোলার ক্ষেত্রে সমস্ত পড়ুয়াদের এখনই টিকাকরণ না হলেও, তার থেকে অনেক বরং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের টিকা নেওয়া। পড়ুয়াদের বাবা-মাকেও টিকা নেওয়ার সুপারিশ করেছে মন্ত্রক।

চলতি মাসের শুরু থেকেই বহু রাজ্যে খুলে গিয়েছে স্কুল। প্রথমে স্কুলের উঁচু শ্রেণি ও পরবর্তী ধাপে ছোটদের জন্যও ক্লাসরুম খোলার কথা ভেবে রেখেছে দিল্লি, হরিয়ানা, বিহার, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি। পশ্চিমবঙ্গেও পুজোর মরসুমের পরে পরিস্থিতি কেমন থাকে, তা খতিয়ে দেখে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু যেখানে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে ছোটদের প্রতিষেধক না দিয়ে স্কুলে পাঠানো আদৌ কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কায় রয়েছেন অভিভাবদের একাংশ। আজ এ প্রসঙ্গে বাবা-মায়েদের আশ্বস্ত করতেই ছোটদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই বেশি থাকার বিষয়ে ফের আলো ফেলেছে কেন্দ্র।

বর্তমানে ভারতে ১২ বছরের বেশি বয়সিদের শরীরে টিকা প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে শুধু জ়াইডাস ক্যাডিলা। কিন্তু তাদের টিকা এখনও বাজারে আসেনি। দ্বিতীয় হিসেবে ছাড়পত্রের মুখে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। সুতরাং, এই মুহূর্তে সরকারের হাতে ছোটদের দেওয়ার মতো প্রতিষেধক নেই। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সেই কারণেই কি স্কুল পড়ুয়াদের জন্য টিকা আবশ্যক করা হচ্ছে না?

এই প্রশ্নের জবাবে আজ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল বলেন, ‘‘খুব অল্প কিছু দেশই শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু করেছে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে ছোটদের টিকাকরণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশিকা নেই। বিশেষত স্কুল খোলার প্রশ্নে পড়ুয়াদের টিকাকরণ কখনও আবশ্যিক শর্ত নয়। শুধু ভারতে নয়, পৃথিবীর কোথাও তা আবশ্যিক শর্ত নয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে হু— কেউই তা মনে করেননি।’’

ছোটদের পরিবর্তে স্কুলের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী, এমনকি পড়ুয়াদের বাবা-মায়ের টিকাকরণ অনেক বেশি জরুরি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বিনোদের ব্যাখ্যা, ‘‘ছোটদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণত বড়দের থেকে অনেক বেশি। তাই পড়ুয়াদের চেয়ে বরং স্কুলের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের প্রতিষেধক নেওয়া বেশি জরুরি। যাতে তাঁদের মাধ্যমে অন্তত সংক্রমণ না ছড়ায়।’’
একই সঙ্গে, শ্রেণিকক্ষে দূরত্ব বজায় রেখে বসা, আপাতত কিছু দিন জলের বোতল বা খাবার ভাগ করে না খাওয়া, বিভিন্ন ক্লাসের জন্য মধ্যাহ্নভোজনের আলাদা বিরতি— এ ধরনের নিয়ম পালনও একান্ত জরুরি বলেও সওয়াল করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

এ ছাড়া, পড়ুয়াদের বাবা-মা বা বাড়িতে থাকা বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকাকরণও জরুরি বলে মত বিনোদের। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘কোনও পড়ুয়া যদি সংক্রমিত হয়, তা হলে তার থেকে বাড়ির বড়দের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। করোনা আক্রান্ত হলে যেহেতু বয়স্ক মানুষদের বিপদ বেশি, তাই তাঁদের হাসপাতালে যাওয়া ও মৃত্যুহার রুখতে প্রবীণদের টিকাকরণ সবার আগে জরুরি।’’

তবে স্বাস্থ্যকর্তদের আশ্বাস, সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য, আঠারো বছরের ঊর্ধ্বে যে প্রায় ৯৪ কোটি মানুষ রয়েছেন, তাঁদের প্রথমে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসা। গত এক-দেড় মাসে বড়দের টিকাকরণ গতি পাওয়ায় ইতিমধ্যেই বয়স্ক জনসংখ্যার ৫৮ শতাংশকে টিকার একটি ডোজ়ের আওতায় নিয়ে আসা গিয়েছে। আগামী দিনে ছোটদেরও ক্ষেত্রেও একই ভাবে টিকাকরণ শুরু করবে সরকার। বড়দের মতো আঠারো বছরের নীচে থাকা প্রত্যেককে টিকার আওতায় নিয়ে আসাও লক্ষ্য কেন্দ্রের।

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Virus in India School Reopening Ministry of Health & Family Welfare
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy