Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

কোভ্যাক্সিনে অসুস্থ হলে ক্ষতিপূরণ দেবে বায়োটেক

অনুমতিপত্রে সই করানোর পাশাপাশি কোভ্যাক্সিন প্রাপকদের হাতে একটি বিবরণপত্র এবং একটি ফর্ম দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০২:০৭
Share: Save:

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শনিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল দেশ। শুরু হয়ে গেল টিকাকরণ অভিযান। যে কর্মসূচি বিশ্বের মধ্যে সর্ববৃহৎ বলে দাবি প্রশাসনের। তবে অনেকের মতে, এই সাফল্যের উদ্দীপনায় খানিকটা হলেও ছায়া ফেলেছে আশঙ্কার মেঘ। যার বড় কারণ, ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘দেশীয় প্রতিষেধক’ কোভ্যাক্সিন। কেন্দ্রের তরফে তড়িঘড়ি প্রতিষেধকটিকে জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হলেও সেটির তৃতীয় তথা চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল এখনও শেষ হয়নি। যে কারণে এই ভ্যাক্সিন দেওয়ার ক্ষেত্রে আগে টিকাপ্রাপকের ‘অনুমতি’ চেয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে প্রস্তুতকারক সংস্থা, হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক। সেই অনুমতিপত্রে সইয়ের পরেই কোভ্যাক্সিনের ডোজ় দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। তা ছাড়া, প্রতিষেধকটি নেওয়ার পরে কোনও রকমের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সংস্থার তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও উল্লেখও করা হয়েছে ওই অনুমতিপত্রে।

ভারত বায়োটেকের তরফে জারি করা ওই অনুমতিপত্রের বয়ানে এও স্পষ্ট করা হয়েছে যে, জরুরি পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রিত ভাবে জনস্বার্থে এই ভ্যাক্সিন প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে থাকা এই প্রতিষেধকটির কার্যকারিতা ক্লিনিকালি প্রতিষ্ঠা হওয়া এখনও বাকি। যদিও ভ্যাক্সিনটি প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আক্রান্তের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে তা সাফল্যের ইঙ্গিত দেখিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংস্থার ওই ফর্মে। পাশাপাশি প্রতিষেধকটি নিলেও যে টিকাপ্রাপককে আগের মতোই কোভিড-১৯-এর অন্যান্য বিধিনিষেধ মানতে হবে, বলা হয়েছে তা-ও।

প্রতিষেধকটি নেওয়ার পর কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সরকারি বা সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র বা হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। সমস্যা যদি গুরুতর হয় এবং প্রতিষেধকটির কারণেই যে তা হয়েছে তা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ভারত বায়োটেকের তরফে। ফর্মটিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে এমনটাই।

আরও পড়ুন: অনেকেই নিলেন না কোভিশিল্ড, থমকে গেল ১৬ হাজারেই, আগামী সপ্তাহে ৪ দিন

আরও পড়ুন: জেলায় জেলায় বিভিন্ন কেন্দ্রে চলছে টিকাকরণের কাজ

অনুমতিপত্রে সই করানোর পাশাপাশি কোভ্যাক্সিন প্রাপকদের হাতে একটি বিবরণপত্র এবং একটি ফর্ম দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে প্রতিষেধক নেওয়ার দিন সাতেকের মধ্যে জ্বর বা অন্য কোনও উপসর্গ তাঁদের মধ্যে দেখা দিলে তা নথিভুক্ত করে রাখতে বলা হচ্ছে টিকাপ্রাপকদের।

তবে বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা যতই কোভ্যাক্সিন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করুন না কেন কেন্দ্রের তরফে তা নিয়ে খুব একটা হেলদোল নজরে পড়েনি। বরং এ দিন রীতিমতো অনুমতিপত্রে সই করেই এই প্রতিষেধক গ্রহণ করেছেন এমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া, ভ্যাক্সিন কমিটির প্রধান তথা নীতি আয়োগের সদস্য বি কে পল এবং তাঁর স্ত্রী বিজ্ঞানী শশী পল-সহ অনেকেই। এমনকি দিল্লির এমসে সাফাইকর্মী হিসেবে কর্মরত দেশের প্রথম টিকাপ্রাপক মণীশ কুমারকেও কোভ্যাক্সিনই দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি এ দিন সকালে টিকাকরণ কর্মসূচির উদ্বোধনের পর ‘বিরোধীদের’ দিকে কটাক্ষ ছুড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘আমাদের বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরা ভারতে তৈরি দুই প্রতিষেধকের (কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড) কার্যকারিতা এবং তা কতটা নিরাপদ সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরেই সেগুলিকে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফলে সব রকমের ভুল তথ্য এবং গুজবের থেকে দূরে থাকুন।’’ প্রসঙ্গত, গত কালই ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর তরফেও একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড দু’টি ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা এবং তার নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য খতিয়ে দেখেই সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভ্যাক্সিনগুলি সম্পর্কে ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো তথ্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং করোনার থেকেও ক্ষতিকর।’’ উল্লেখ্য, দু’টি ভ্যাক্সিনের মধ্যে কোনটি কাকে দেওয়া হবে, তা বেছে নেওয়ার কোনও সুবিধা নেই টিকাপ্রাপকদের।

অন্য দিকে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর দিনই করোনাভাইরাসের নয়া স্ট্রেন, ‘ব্রিটেন স্ট্রেন’-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬। আক্রান্তদের সকলকেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অন্তর্গত নির্দিষ্ট চিকিৎসা কেন্দ্রের নিভৃতবাসে আলাদা রাখার ব্যবস্থা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE