দিল্লির মডেল টাউনে ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক।—ছবি পিটিআই।
দেশে ফি দিন হু হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক প্রান্তে স্থানীয় পর্যায়ে গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল আগেই জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ-শৃঙ্খল (চেন) ভাঙতে না পারলে গোষ্ঠী সংক্রমণ গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।
এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া আজ বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণে সার্বিক ভাবে দেশ এখনও দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকলেও, মুম্বইয়ের মতো কিছু কিছু জায়গায় সংক্রমণ স্টেজ থ্রি অর্থাৎ গোষ্ঠী সংক্রমণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। তাই আরও সতর্ক থাকতে হবে।’’ এই পরিস্থিতিতে দেশে করোনা সংক্রমণের প্রসার খতিয়ে দেখতে সংক্রমিত গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (ক্লাস্টার) ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, দিল্লির নিজামুদ্দিনের মতো জমায়েত হয়েছে এমন এলাকায় প্রচুর সংখ্যায় অ্যান্টিবডি পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আগামী বুধবারের মধ্যেই প্রথম দফায় অ্যান্টিবডি-কিট হাতে আসবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। তার পরেই শুরু হতে চলেছে ওই পরীক্ষা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে বিকেলে জানানো হয়েছে, আজ বিকেল চারটে পর্যন্ত হিসেবে ২৯১ জন সুস্থ হয়েছেন। গত কাল থেকে আজ ওই সময় পর্যন্ত ৬৯৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭৬ শতাংশ পুরুষ। মারা গিয়েছেন ১০৯ জন। শুধু গতকালই মারা গিয়েছেন ৩০ জন। ইতিমধ্যেই রাজস্থানের ভিলওয়াড়া, উত্তরপ্রদেশের আগরা, গৌতম বুদ্ধ নগর, পূর্ব দিল্লি ও মুম্বইয়ের বিভিন্ন স্থানে অনেক করোনা আক্রান্ত রোগী থাকায় সেগুলিকে করোনা সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। গোষ্ঠী সংক্রমণ ঠেকাতে পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তদের চিহ্নিতকরণই একমাত্র পথ বলে শুরু থেকেই সরব বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা আজ আরও বেশি করে পরীক্ষা করার উপরে জোর দেন।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) ভাইরোলজি ও কমিউনিকেবেল ডিজ়িজ়-এর প্রধান রমন গঙ্গাখেদকর আজ জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ লক্ষ অ্যান্টিবডি পরীক্ষা কিটের বরাত দেওয়া হয়েছে। যার অর্ধেক আগামী দু’দিনের মধ্যে চলে আসবে। ওই ব্যবস্থায় খুব অল্প সময়ে ফল জানা সম্ভব। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব বলেন, ‘‘যে সব এলাকা থেকে বেশি রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বা দিল্লির নিজামুদ্দিনের মতো যে এলাকায় এক সঙ্গে বহু লোকের জমায়েত হওয়ার তথ্য রয়েছে, সেই ক্লাস্টারে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের উপসর্গ (ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস বা আইএলআই) দেখা দিলে ওই পরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে আইএলআই রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না, তা দেখা হবে। যদি অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না। ওই পরীক্ষার তথ্য যে ভাবে আইসিএমআর পোর্টালে দিতে হয়, সে ভাবেই যে বেসরকারি ল্যাব অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করবে, তাদেরও রোগী সংক্রান্ত তথ্য সমস্ত পোর্টালে দিতে হবে। যাতে যাঁদের দেহে অ্যান্টিবডি পাওয়া যাচ্ছে, এমন রোগীকে দ্রুত নিভৃতবাসে পাঠিয়ে, তাঁর সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন তা খুঁজে বার করা সম্ভব হয়।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের অন্যতম উপসর্গ শ্বাসকষ্ট। তাই অক্সিজেনের উৎপাদন ও সরবরাহে যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে, সেজন্য রাজ্যগুলিকে আজ চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব ভল্লা। চিকিৎসার বিভিন্ন জিনিস উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ ও আন্তঃরাজ্য পরিবহণে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy