ফাইল চিত্র।
শ্রীক্ষেত্রে এখনও দেখা মেলেনি করোনাভাইরাসের। তবে গোটা দেশ থেকে আসা ভক্তের ঢল নিয়ন্ত্রণে দেরি করছে না ওড়িশা সরকার। খাতায়-কলমে শ্রীমন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ হচ্ছে না ঠিকই। কিন্তু গোটা পুরীর অন্তত ৩৩টি পর্যটনস্থল বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জগন্নাথদেবের কাছে পৌঁছতেও পদে পদে নিষেধের বেড়া। করোনা-আতঙ্কে ভক্তদের ছোঁয়াছুঁয়ি কমাতেও বিশেষ তৎপরতা চলছে পুরীর মন্দিরে। সম্প্রতি তিরুপতির কাছে নেল্লোরে এক ছাত্রের দেহে কোভিড-১৯ জীবাণুর হদিস মেলার পর থেকে পুরীতেও সতর্কতা তুঙ্গে। তিরুপতিতে দু’ঘণ্টা অন্তর মন্দির-চত্বর জীবাণুমুক্ত করা, দর্শনার্থীদের আগাম বুকিং বাতিলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে আসা ভক্তদের উপরে প্রায় এক মাসের নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। আজ, সোমবার পুরীর মন্দিরের সামনেও দর্শনার্থীদের বিদেশ-সংস্রব যাচাই করতে চালু হচ্ছে ‘হেল্প ডেস্ক’। শারীরিক পরিস্থিতি যাচাই করিয়ে নির্দিষ্ট ফর্মে গত ১৫ দিনের গতিবিধির ফিরিস্তি না-দিয়ে বিনা ‘মাস্কে’ পারতপক্ষে মন্দিরে ঢোকা যাবে না। ওই তল্লাটে মাস্ক, হাত ধোয়ার তরল (স্যানিটাইজ়ার) মজুত থাকবে। এত কিছু ঝকমারি পেরিয়ে যদিও বা মন্দিরে ঢুকলেন, ছোঁয়াছুঁয়ি নিয়ে পদে পদে বারণ। রবিবার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ওড়িশা সরকার নিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটি এবং মন্দিরের সর্বস্তরের সেবায়েতদের প্রতিনিধিদের সমিতি বা ‘ছত্রিশ নিজোগের’ বৈঠকের পরে এই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রবীণ দয়িতাপতি তথা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রামচন্দ্র দয়িতাপতি বললেন, ‘‘প্রভু কখনওই ভক্তের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকেন না। কিন্তু আমরাই বলছি, পারলে ১ এপ্রিল পর্যন্ত মন্দিরে আসার দরকার নেই। ঈশ্বরভক্তির সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তো বিরোধ নেই।’’ ঠিক হয়েছে, সিংহদরজা দিয়ে ঢুকলেও অরুণস্তম্ভে মাথা ঠেকানো যাবে না। জগমোহনের ভিতরে গরুড়স্তম্ভ আলিঙ্গন করা যাবে না। এক দর্শনার্থী থেকে অন্য দর্শনার্থীর মধ্যে দেড় মিটারের মতো ব্যবধান রাখতে হবে। বিগ্রহের সামনে ভিতরকাঠ পেরিয়ে এক জনের বেশি দাঁড়াতে পারবেন না। মুক্তিমণ্ডপে প্রণাম করার রীতি বহাল থাকলেও ভক্তের মাথা স্পর্শ করে ব্রাহ্মণ সেবায়েতের আশীর্বাদ নিষিদ্ধ। এই নিয়ন্ত্রণের ফলে দৈনিক জগন্নাথ-দর্শনে আসা ভক্তসংখ্যা ৮০-৯০ হাজার থেকে চার-পাঁচ হাজারে নেমে আসতে পারে বলে মনে করছেন মন্দির প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ।
মন্দিরের ভিতরে ভোগ খেতেও বারণ করা হচ্ছে। তবে একান্তই বিশেষ কারণে জগন্নাথের প্রসাদ বিলির উঠোন আনন্দবাজারে প্রসাদ খেতে বসলে ২-৩ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ভক্তদের মধ্যে। মন্দির-চত্বরে হাত ধোয়ার ঢালাও বন্দোবস্ত। প্রভুর সেবাকাজের সময়টুকু ছাড়া সেবায়েতদেরও মাস্ক পরতে হবে।
পুরীর কালেক্টর বলবন্ত সিংহ অযথা আতঙ্কিত না-হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলছেন। পুরীর সমুদ্রতট থেকে কোণার্ক, চিলিকা, পিপলি, রঘুরাজপুর, সাক্ষীগোপাল— সর্বত্রই প্রবেশ নিষিদ্ধ। স্বভাবতই বুকিং বাতিলের হিড়িক পড়েছে হোটেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy