ছবি: পিটিআই।
দ্রুত গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে গোটা দেশে। তার জন্য আর্থিক গতিবিধি যাতে নতুন করে থমকে না-যায়, তা নিশ্চিত করতে দেশের তিনটি মুখ্য অর্থনৈতিক কেন্দ্রে অত্যাধুনিক করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ মুম্বই, নয়ডা এবং কলকাতায় বিশ্বমানের কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সাহায্যে তৈরি ওই পরীক্ষাগারগুলিতে দিনে ১০ হাজার পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। গোটা দেশের মধ্যে কেন ওই তিন শহরে ওই পরীক্ষাগার বানানো হল, তার ব্যাখ্যায় অর্থনীতিকেই মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিল্লি ও রাজধানী সংলগ্ন অঞ্চল (নয়ডা), মুম্বই ও কলকাতা আর্থিক গতিবিধির বড় কেন্দ্র। ওই শহরগুলিতে গোটা দেশ থেকে লক্ষাধিক যুবক নিজেদের কেরিয়ার গড়তে, নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে যায়। তাই ওই তিন শহরে বাড়তি ১০ হাজার পরীক্ষা করার ক্ষমতা যোগ করা হল।’’
টানা লকডাউনের জেরে এক সময়ে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল দেশের অর্থনীতি। সেই চরম সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ২০ লক্ষ টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করে কেন্দ্র। তাতে অর্থনীতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে বলে মনে করছে শাসক দল। এ দিকে লকডাউন উঠতেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কোভিড সংক্রমণও। এ পর্যন্ত সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষ। রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন ৫০ হাজারের কাছাকাছি। সংক্রমণের কারণে দেশের তিনটি বড় আর্থিক কেন্দ্রে ফের লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ইতিমধ্যেই নতুন করে আংশিক লকডাউনের পথে হেঁটেছে। নয়ডাতেও সপ্তাহান্তে লকডাউন চলছে। আর মুম্বইয়ে গোড়া থেকেই সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী।
আরও পড়ুন: মরুরাজ্যের প্রেমপত্রে তিন প্রশ্নের কাঁটা!
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে ফের রেকর্ড, বাড়ছে সুস্থতাও
কেন্দ্র বুঝতে পারছে দেশের তিন প্রান্তের ওই তিন কেন্দ্র যদি ফের দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের পথে হাঁটে, তা হলে ফের হোঁচট খাবে অর্থনীতি। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে ওই পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে এমনিই জাতীয় গড়ের চেয়ে কম পরীক্ষা হচ্ছে। কেন্দ্র চাইলেও পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে নির্দিষ্ট সংখ্যক পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ব্যর্থ ওই দুই রাজ্য। সে কারণেও ওই কেন্দ্রের মাধ্যমে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো কেন্দ্রের লক্ষ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রক আশা করছে, এতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা সাময়িক বাড়লেও ধীরে ধীরে সংখ্যা কমতে থাকবে। ফলে চাঙ্গা হবে অর্থনীতি।
এ দিকে গত তিন সপ্তাহে সংক্রমণের হার বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞদের মত হল, সংক্রমণ এ বার শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। সেই কারণে এত বেশি সংখ্যক লোক রোজ সংক্রমিত হচ্ছেন। আজ প্রধানমন্ত্রীও নিজের বক্তব্যে গ্রামীণ ভারতকে আলাদা করে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্য, জেলা ও ব্লকের পাশাপাশি গ্রামেও ডিমান্ড-সাপ্লাই চেন মজবুত করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামীণ অঞ্চলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই যাতে কমজোরি না হয়, তার জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতিসাধন করতে হবে। এখনও পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে করোনা রোখার কাজে আমরা ভাল কাজ করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy