—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভোট-রাজনীতিতে মানুষের মন পেতে অনুদান প্রকল্পগুলির দিকে বেশি করে ঝুঁকছে বিভিন্ন রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গও এর ব্যতিক্রম নয়— আর্থিক বিশ্লেষক এবং মূল্যায়ন সংস্থা ‘কেয়ার-এজ’ এক সমীক্ষায় (এই অর্থবর্ষের প্রথমার্ধ এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের নিরিখে) এই দাবি করে জানিয়েছে, এর প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। রাজ্যে মূলধনী খরচ ক্রমশ কমছে। বাড়ছে রাজস্ব খরচের পরিমাণ। যদিও রাজ্যে অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই সমীক্ষা কী ভাবে হয়েছে আমরা জানি না। তবে আমাদের মূল্যধনী খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বরং এই খাতে বেশি খরচ করা এবং তা ব্যবহারের শংসাপত্র দেওয়ার পরেও কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বকেয়া রেখেছে। তা ছাড়া আমরা যেহেতু কল্যাণমূলক রাজ্য, তাই আমাদের রাজস্ব খরচ সামাজিক খাতে হবে এটাই স্বাভাবিক। তাতে বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন, এটাও মাথায় রাখা প্রয়োজন। ফলে মূলধনী খরচ হচ্ছে না, এটা বলা ঠিক নয়।’’
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন রাজ্যকে এ নিয়ে সতর্ক করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও। তারা বলেছে, অনেক রাজ্যই বিদ্যুৎ, পরিবহণ, কৃষক ঋণ মকুব-সহ বিভিন্ন ‘খয়রাতি প্রকল্প’ এনে আমজনতার মন জিততে চায়। কিন্তু বাস্তবে এই ধরনের কাজে অর্থ বরাদ্দ করায় রাজ্যগুলির জরুরি খাতে খরচ করার ক্ষমতা কমছে। মার খাচ্ছে সামাজিক এবং আর্থিক পরিকাঠামো উন্নয়নের সম্ভাবনা। যা আখেরে রাজ্য অর্থনীতির ক্ষতি করে দিচ্ছে। আরবিআই অবশ্য সতর্কবার্তায় কোনও রাজ্যের নাম উল্লেখ করেনি।
কেয়ার-এজের সমীক্ষা অনুযায়ী, বছরে পশ্চিমবঙ্গের রাজস্ব খরচ ১৩.৫% বেড়েছে। অথচ মূলধনী খরচ বেড়েছে মাত্র ৭.৭%। বড় ২০টি রাজ্যের রাজস্ব খরচ গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৪১.৫%। তা ছিল প্রায় ৪০%। ঋণ মকুব, আর্থিক সহায়তা প্রদানের মতো নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা এর অন্যতম কারণ। পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এ রাজ্যে অন্যতম বড় আর্থিক অনুদান প্রকল্প হল লক্ষ্মীর ভান্ডার। সাম্প্রতিক কালে তেমন প্রকল্প চালু করেছে আরও কয়েকটি রাজ্য।
আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মূলধনী খরচে পরিকাঠামোর মতো স্থায়ী সম্পদ তৈরি হয়। তার হাত ধরে আর্থিক কর্মকাণ্ড এবং কর্মসংস্থান বাড়ে। ফলে সংস্থার বিচারে দীর্ঘ স্থায়ী আর্থিক বৃদ্ধির দিকে নজর দিলে মূলধনী খরচ কম হওয়া শুভ লক্ষণ নয়। যদিও রাজ্য সরকার বারবার দাবি করে আসছে, গত ২০১০-১১ অর্থবর্ষে রাজ্যের মূলধনী ব্যয় যেখানে ছিল মাত্র ২২২৬ কোটি টাকা, সেখানে চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে তা বেড়ে হয়েছে ৩৫,৮৬৫.৫৫ কোটি টাকা।
সমীক্ষক সংস্থাটির অবশ্য দাবি, এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ গড় উৎপাদন বা জিএসডিপি-র নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের রাজকোষ ঘাটতি ছুঁয়েছে ৩.৭%। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন যে ঘাটতি ৩ শতাংশে বাঁধার সুপারিশ করেছিল। কেয়ার এজের সমীক্ষা বলছে, ওই সময় কেন্দ্রের রাজকোষ ঘাটতিও বাজেটে বাঁধা লক্ষ্যে ৪৬.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। মূলধনী খরচ হয়েছে শ্লথ। তবে রাজস্ব আদায় ইতিবাচক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy