প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
নীতি আয়োগের পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় এবং সমঝোতার উপর গুরুত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবারের এই বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির লেফটেন্যান্ট গভর্নরেরা যোগ দিলেও গরহাজির ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অমরিন্দর সিংহ।
রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, কেন্দ্র-রাজ্য সুসম্পর্কের উপর জোর দিয়ে সুকৌশলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিতে চেয়েছেন মোদী। বিধানসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র প্রচারে এসে অমিত শাহ, জে পি নড্ডা মতো বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা সম্প্রতি রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকারের’ পক্ষে সওয়াল করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিজেপি-তে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেতাদের মুখেও একই কথা শোনা গিয়েছে।
শনিবারের বৈঠকে কৃষি পরিকাঠামোর উন্নয়ন, কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি, মানব সম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। মোদী বৈঠকে বলেন, ‘‘উন্নয়নের লক্ষ্য ছোঁয়ার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির সমন্বয় অতি গুরুত্বপূর্ণ।’’ পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাজেটের দরাজ প্রশংসাও করেছেন তিনি। পাশাপাশি, উন্নয়নের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের অংশীদার করতে চেয়েছেন জেলাগুলিকে। পাশাপাশি, উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক সমন্বয়ের এই উদ্যোগ গণতন্ত্রকে মজবুত করবে বলেই প্রধানমন্ত্রীর মত। সেই সঙ্গে বলেছেন আত্মনির্ভর ভারতের স্লোগান সফল করার জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে সহযোগিতার কথাও। তবে বাজেট প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের কথা বলে শনিবার বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তিনি। তাঁর এই মন্তব্য সংবিধানের মূল ভাবধারা এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, নীতি আয়োগ পরিচালন পর্ষদের ষষ্ঠ দফার বৈঠকে সংস্থার সিইও, ভাইস চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ পরিচালন পর্ষদের অন্য সদস্যেরা যোগ দিয়েছিলেন। প্রথম বার যোগ দিয়েছিলেন, দেশের নয়া দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নরেরা। তাঁদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘কেন্দ্র এবং অঙ্গরাজ্যগুলি উন্নয়নের একই দিশায় পরিচালিত হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে।
প্রথম দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদের গোড়াতেই কার্যত একতরফা সিদ্ধান্তে যোজনা কমিশন তুলে দিয়ে নয়া প্রতিষ্ঠান নীতি আয়োগ গঠন করেছিলেন মোদী। তার পর থেকে একাধিক বার নীতি আয়োগের বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। নীতি আয়োগ তৈরির আগে ২০১৪-র ডিসেম্বরে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে মোদী যে বৈঠক করেছিলেন, তাতেও যাননি মমতা। নীতি আয়োগ তৈরির পর পরিচালন পর্ষদের প্রথম বৈঠকেও মমতা গরহাজির ছিলেন। আর্থিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতাহীন নীতি আয়োগের পক্ষে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy