কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে। ফাইল চিত্র।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হতে গিয়ে গোটা লিঙ্গায়েত সমাজকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দেগে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার মতোই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই হলেন লিঙ্গায়েত সমাজের নেতা। তাঁর মন্তব্যকে বিজেপি ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বিকৃত করছে বলে পাল্টা সরব হয়েছেন সিদ্দারামাইয়াও।
কর্নাটকের অন্যতম প্রভাবশালী জাতিগোষ্ঠী হল লিঙ্গায়েত। দল এ যাত্রায় জিতলে ইয়েদুরাপ্পা বা বোম্মাইয়ের মতো লিঙ্গায়েত সমাজের কোনও নেতাকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করবে বলে ‘লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রচারে নেমেছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। পাল্টা আক্রমণে কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলে ফেলেছেন, ‘‘নতুন করে লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রী বলে প্রচারের কী আছে! বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই তো লিঙ্গায়েত সমাজেরই। ওই তো সমস্ত দুর্নীতির অন্যতম কারণ।’’ সিদ্দারামাইয়া নিজে কুরুবা জাতিগোষ্ঠীর। ওই মন্তব্য সামনে আসতেই সেটিকে হাতিয়ার করে ‘কংগ্রেস লিঙ্গায়েত-বিরোধী’ বলে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, বোম্মাইকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলার মধ্য দিয়ে গোটা লিঙ্গায়েত সমাজকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বোঝাতে চেয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। বোম্মাই নিজে বলেন, ‘‘সিদ্দারামাইয়ার ওই কথা বলা ঠিক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে লিঙ্গায়েত সমাজকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছিলেন। লিঙ্গায়েত সমাজ আসন্ন ভোটে এই অপমানের বদলা নেবে। শিক্ষা দেবে সিদ্দারামাইয়া ও তাঁর দল কংগ্রেসকে।’’ সিদ্দারামাইয়া পাল্টা বলেছেন, ‘‘আমি দুর্নীতিগ্রস্ত বোঝাতে বোম্মাইকে বুঝিয়েছিলাম। আমি কখনওই বলিনি যে সব লিঙ্গায়েতরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। অতীতে বীরেন্দ্র পাটিল, এস নিজালিঙ্গাপ্পার মতো সৎ লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রীরা ছিলেন। এখন আমার মন্তব্যকে বিকৃত করে লিঙ্গায়েত সমাজকে খেপানো হচ্ছে।’’
তবে সিদ্দারামাইয়ার মন্তব্যে সামগ্রিক ভাবে লিঙ্গায়েত সমাজের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাওয়ায় অস্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব। দল তাঁকে আরও সাবধানে মুখ খোলার পরামর্শ দিয়েছে। সাধারণত বিজেপিকে সমর্থন করে আসা লিঙ্গায়েত সমাজের মধ্যে এ বার ফাটল ধরার প্রবল আশঙ্কা। বিজেপি থেকে এ যাত্রায় টিকিট পাননি জগদীশ শেট্টার, লক্ষণ সাভাদির মতো লিঙ্গায়েত নেতারা। তাঁরা শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচনে লড়ছেন। এতে লিঙ্গায়েত সমাজের মধ্যে বিভাজনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যাকে কাজে লাগাতে চাইছে কংগ্রেস। এখন সিদ্দারামাইয়ার বক্তব্যে হিতে বিপরীত হতে পারে বুঝে পাল্টা প্রচারে নেমে পড়েছেন শেট্টারের মতো কংগ্রেসের হাত ধরা লিঙ্গায়েত নেতারা। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই আদৌ দুর্নীতিগ্রস্ত কি না তা নিয়ে প্রশ্ন না তুলে বরং বিজেপির ‘লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রী’ প্রচারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন তিনি। শেট্টারের কথায়, ‘‘এত দিন কিছু না করে ভোটের আগে কেন ওই প্রচারে নামল বিজেপি? আগে কেন লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রী চাই বলে প্রচার করল না? আসলে বিজেপি যা করছে তা তাদের নির্বাচনী চমক মাত্র। তাই গত দু’দশক রাজ্যে লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও কেন ওই সমাজের উন্নতি হল না তার কোনও জবাব দিতে পারছে না বিজেপি। ফলে বিজেপি যদি লিঙ্গায়েত নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণাও করে, তা হলেও মানুষ আর বিজেপিকে বিশ্বাস করবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy