প্রতীকী ছবি।
মুসলিম মহিলাদের ‘তিন তালাকের অভিশাপ’ থেকে মুক্তি দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই স্বপ্ন বাস্তব হয় কি না দেখতে আজ ভিড় উপচে পড়ল সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে শুরু হয়ে গেল তিন তালাকের শুনানি।
শুনানির প্রথম দিনেই বিচারপতিরা জানান, তিন তালাক সংবিধান স্বীকৃত কি না, মূলত এই বিষয়টিই তাঁরা খতিয়ে দেখবেন! মুসলিম সমাজের বহুগামিতা ও নিকাহ হালালা নিয়ে আদালতের মাথা ঘামানোর ইচ্ছে নেই।
মুসলিম সমাজে কী ভাবে বিয়ে হয়, নিকাহনামা কী, কী ভাবেই বা তালাক হয়, শরিয়ত আইন কোনটি, তার সঙ্গে কোরানের সম্পর্ক কী, কাকে বলে হাদিস, এ সব খুঁটিনাটি বুঝতেই আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত শুনানির সিংহভাগ সময় ব্যয় হয়। স্পষ্ট হয়, মুসলিম সমাজে মূলত তিন রকম তালাক প্রচলিত। তালাক-এ-সুন্নত, তালাক-এ-এহসান এবং তালাক-এ-বিদ্দাত। প্রথম দু’টিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একবার তালাক বলেও তা থেকে সরে আসা, মিটমাট, স্ত্রীর ভরণপোষণ, সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তালাক-এ-বিদ্দাতে কোনও স্বামী তাঁর স্ত্রীকে পরপর তিনবার তালাক বললেই হল। এ নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক।
সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ মহিলা আবেদনকারীর অন্যতম সায়রা বানো। তাঁর আইনজীবী অমিত সিংহ চাড্ডা যুক্তি দেন, তিন তালাকের সঙ্গে কোরান বা ইসলামের কোনও সম্পর্ক নেই। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের মতো ইসলামিক রাষ্ট্রে তিন তালাক নিষিদ্ধ। তা শুনে বিচারপতিরা বলেন, তাঁরা ওই দেশের আইনগুলি খতিয়ে দেখতে আগ্রহী।
তিন তালাকের বিরুদ্ধে আজ প্রবীণ আইনজীবী দম্পতি আনন্দ গ্রোভার ও ইন্দিরা জয়সিংহ সওয়াল করেছেন। গ্রোভার বলেছেন, তিন তালাক প্রথা কিছু লোকের ব্যক্তিগত স্বার্থ পূরণের জন্য তৈরি হয়েছে। ইন্দিরা যুক্তি দেন, মুসলিম সমাজে পুরুষরা বিবাহবিচ্ছেদ চাইলে তালাক বললেই চলছে। কোথাও আইনের নজরদারি নেই। অথচ মহিলারা বিবাহবিচ্ছেদ চাইলে আদালতে গিয়ে ২৫ রকম শর্তপূরণ করতে হচ্ছে!
বিচারপতি কুরিয়েন মুচকি হেসে মন্তব্য করেন, ‘‘আপনাদের অবস্থানে ফারাক আছে নাকি!’’ আইনজীবী দম্পতি হাসতে হাসতে উত্তর দেন, ফারাক খুবই সামান্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy