দলের মন্ত্রীদের ছয় দফা নীতি মেনে চলার উপরে জোর দিয়েছেন তেজস্বী। ফাইল ছবি
দলীয় নেতৃত্বের ভাবমূর্তি উদ্ধারে মাঠে নামলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। আজ তিনি দলের মন্ত্রীদের জন্য ছয় দফা নীতি বেঁধে দিলেন। সেই সঙ্গে নতুন বিতর্কেও জড়ালেন অবশ্য। কারণ তেজস্বী এবং তাঁর ভাই, মন্ত্রিসভার সদস্য তেজপ্রতাপের সঙ্গে সরকারি আমলাদের বৈঠকে দলীয় কর্মী ও পরিবারের লোকেদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপির কটাক্ষ, আরজেডি মানেই যে পরিবারবাদের রাজনীতি, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল। তাঁদের প্রশ্ন, ফের কি ‘জিজা-শালা’ রাজত্ব ফিরে এল বিহারে?
নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভায় অর্ন্তভুক্তির পর থেকে আরজেডি-র একের পর এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে জোটের দুই প্রধান মুখ নীতীশ এবং তেজস্বী। পরিস্থিতি সামলাতে আজ দলের মন্ত্রীদের ছয় দফা নীতি মেনে চলার উপরে জোর দিয়েছেন তেজস্বী। ফেসবুক বার্তায় তেজস্বী আজ প্রথমেই মন্ত্রী হয়েই গাড়ি কেনার প্রবণতা আটকানোর উপরে জোর দেন। এমনকি মন্ত্রীর দফতরের জন্যও নতুন কোনও গাড়ি কেনা যাবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক মন্ত্রীকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসা লোকজনকে হাতজোড় করে প্রণাম বা আদাব জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন তেজস্বী। একই সঙ্গে বয়সে বড় কোনও কর্মী-সমর্থকেরা যাতে মন্ত্রীদের পায়ে হাত না দিয়ে প্রণাম না করেন, সে বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
অনেক সময়েই মন্ত্রী ও তাঁর দফতর ভাল কাজ করলেও জনগণ তা জানতে পারেন না। সে কারণে দফতরের ভাল কাজ সব সময়ে ফেসবুকে বা অন্য কোনও সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তেজস্বী। চতুর্থত, মন্ত্রীদের
বিরুদ্ধে যাতে কোনও ভাবেই দুর্নীতির অভিযোগ না ওঠে, তার জন্য বিশেষ ভাবে নজর দিতে বলা হয়েছে। সেই কারণে সততা, স্বচ্ছতা, বিচক্ষণতা সহকারে সরকারের নির্দেশ মতো দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণে জোর দিয়েছেন তিনি। প্রতিটি সরকারি অনুষ্ঠানে ফুলের তোড়া দেওয়ার পরিবর্তে খরচ কমাতে পেন বা বই উপহার দেওয়ার কথা বলেছেন। এবং সেই সঙ্গে সকলের সঙ্গে মন্ত্রীদের ভাল ব্যবহার, বিশেষ করে ধর্ম ও জাতের ঊর্ধ্বে উঠে দুর্বল ও গরিব শ্রেণির মানুষকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে।
দলের ভাবমূর্তি মেরামতে তেজস্বী এই ভাবে সক্রিয় হলেও আজই আবার নতুন করে তাঁর ও তেজপ্রতাপের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। লালু প্রসাদের সময়কালে অভিযোগ ছিল, বকলমে তখন সরকার চালাতেন রাবড়ী দেবীর ভাই সাধু যাদব। ‘জিজা-শালা রাজত্ব’ বাক্যবন্ধের সূত্রপাত সেই থেকেই। এ যাত্রা বিতর্কের সূত্রপাত দু’টি ছবিকে ঘিরে। তেজস্বী ও তেজপ্রতাপ দু’দিন আগে তাঁদের মন্ত্রকের বৈঠকের আলাদা আলাদা ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন। তাতে দেখা গিয়েছে, তেজস্বীর সঙ্গে দফতরের কর্তাদের ওই বৈঠকে উপস্থিত লালু-পুত্রের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সঞ্জয় যাদব। অন্য দিকে তেজপ্রতাপের দফতরের বৈঠকে বসে থাকতে দেখা যায় মন্ত্রীর ভগ্নীপতি শৈলেশ কুমারকে, যিনি লালু প্রসাদের বড় মেয়ে মিসা ভারতীর স্বামী।
ওই ছবি দু’টি সামনে আসার পরেই ফের স্বজনপোষণ ও সরকারের কাজে পরিবারের নাক গলানোর অভিযোগে সরব হন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের নেতা সুশীল মোদী বলেন, ‘‘লালু জমানায় এ ভাবে সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করতেন সাধু যাদব। সেই ইতিহাসের আবার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। আমার প্রশ্ন, নীতীশ কুমার কি মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজনৈতিক কর্মী ও পরিবারের লোকেদের বসার অনুমতি দিয়েছেন?’’ বিতর্ক জমে উঠতেই ছবিগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়। তেজপ্রতাপের দাবি, শৈলেশ তাঁকে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন। কথাবার্তা বলার জন্য সেখানে বসে অপেক্ষা করছিলেন। তেজস্বী শিবির অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy