প্রচারে: হিমাচলের কাংড়ায় এক জনসভায় রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস জিএসটি ঢেলে সাজবে। যেখানে যা বদল দরকার, তা করা হবে। হিমাচলে প্রচারে গিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী।
আজ হিমাচলে পওনটা সাহিবে এক সভায় রাহুল বলেন, ‘‘তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করতে গিয়ে ছোট ব্যবসার মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রয়োজন মতো সব রকম বদল করা হবে।’’ নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, ‘‘গীতায় বলেছে— কাজ করে যাও, ফলের কথা ভেবো না। মোদীজি তাঁর মতো করে এর ব্যাখ্যা করেছেন— সব ফল খেয়ে নাও। কাজের চিন্তা কোরও না।’’
আরও পড়ুন: নোট বাতিল কী দিল, প্রশ্ন বহাল বছর ঘুরলেও
নিজে একা নন। জিএসটি নিয়ে মোদী সরকার তথা বিজেপিকে প্যাঁচে ফেলতে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদেরও মাঠে নামাচ্ছেন রাহুল। গুজরাতের ভোটের আগে জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের কারণে বিজেপি এমনিতেই ব্যাকফুটে। সেই সুযোগ তিনি কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নন। কংগ্রেসের অর্থমন্ত্রীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই ১০ নভেম্বর জিএসটি পরিষদের বৈঠক। গুয়াহাটির ওই বৈঠকে জিএসটি-র যাবতীয় সমস্যা ও করের হার কমানো নিয়ে সরব হতে হবে। পঞ্জাব, হিমাচল, কর্নাটক, মেঘালয়, মিজোরাম ও পুদুচেরির মতো মাত্র গোটা ছয়েক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই এখন ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন রাহুল। সেখানেই এই রণকৌশল ঠিক হয়েছে।
এর মধ্যেই আজ পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত বাদল বলেন, ‘‘জিএসটি পরিষদে যখন করের হার নিয়ে আলোচনা হয়, তখন বিজেপির মধ্যে ঔদ্ধত্য দেখা যেত। এখন গুজরাতের ভোট এগিয়ে আসতে সুর নরম হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ— জিএসটি-র তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামোর প্রস্তুতি, ছোট-মাঝারি শিল্পের রিটার্ন ফাইলের সমস্যা, কাঁচা মালে মেটানো কর ঠিক সময়ে ফেরত না পাওয়া, বহু ক্ষেত্রে চড়া করের হারের মতো সমস্যা নিয়ে বিরোধীরা প্রতিটি জিএসটি পরিষদের বৈঠকে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই শোনা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখে ঠিক এই অভিযোগই তুলেছেন। তাঁরও দাবি, জুন মাসে জিএসটি-র প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু না-করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তাতে কান দেয়নি কেন্দ্র। তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়াগত জটিলতার জন্য করদাতার সংখ্যাও কমছে। রাজস্ব আদায়ও কমছে।
মনপ্রীত বলেন, প্রথম মাসে ৫৬ লক্ষ রিটার্ন ফাইল হয়েছিল। পরের মাসে তা নেমে এল ৫২ লক্ষে। তার পরের মাসে ৪৮ লক্ষে। আশানুরূপ রাজস্ব আদায় যে হচ্ছে না, তার প্রমাণ হল, প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজ্যগুলিকে ৮ হাজার কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। প্রথম দফায় প্রায় সব রাজ্যই ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। অথচ মনে করা হয়েছিল, ৭-৮টি রাজ্য ছাড়া কোনও রাজ্যের ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন হবে না।
কংগ্রেসের অর্থমন্ত্রীদের অভিযোগ, তাঁরা জিএসটি-র প্রক্রিয়ার সরলীকরণের দাবি তোলায় বলা হয়েছে, বিধিনিয়মে একটা কমাও বদলানো হবে না। এখন গুজরাতের ভোট এগিয়ে আসতে কেন্দ্রীয় সরকারই সংশোধনের কথা বলছে। কিন্তু তাতে অর্থনীতির হাল শোধরানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy