Advertisement
০৪ অক্টোবর ২০২৪

দিন ফুরোলেই কামড় দিতে জোটের চেষ্টা

চেয়ে নিয়েছিলেন পঞ্চাশ দিন। সে হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর হাতে আর ছ’টি মাত্র দিন। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে ঝাঁপানোর জন্য এখন থেকেই তোড়জোড় শুরু করে দিল কংগ্রেস।

ধর্মশালার এক সভায় রাহুল গাঁধী। শনিবার। ছবি: পি টি আই।

ধর্মশালার এক সভায় রাহুল গাঁধী। শনিবার। ছবি: পি টি আই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৪৯
Share: Save:

চেয়ে নিয়েছিলেন পঞ্চাশ দিন। সে হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর হাতে আর ছ’টি মাত্র দিন। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে ঝাঁপানোর জন্য এখন থেকেই তোড়জোড় শুরু করে দিল কংগ্রেস। নোট বাতিলের ঘটনায় মানুষের ভোগান্তিকে পুঁজি করে বিরোধী জোট সংসদে শীতকালীন অধিবেশন স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ বার সংসদের বাইরেও বাকি বিরোধীদের সঙ্গে নিয়েই এগোনোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, এখনও মানুষের দুর্ভোগ মেটার নাম নেই। গ্রাম-শহরের অর্থনীতির মাজা ভাঙা অবস্থা। এই অবস্থায় কংগ্রেসের লক্ষ্য একটাই, গোটা দেশে মোদীর ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া। নোট-বাতিলের জেরে মানুষের ভোগান্তিকে অস্ত্র করতে চায় বাকি বিরোধী দলগুলিও। যদিও কংগ্রেসের সঙ্গে ঝাঁপানোর প্রশ্নে প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু অঙ্কও রয়েছে।

তবে কংগ্রেসের একটি সূত্রের মতে, নতুন বছরের গোড়াতেই রাহুল গাঁধীকে বিরোধী জোটের মুখ করে সরকারকে আরও চাপে ফেলতে চান সনিয়া গাঁধী। তাঁর পরামর্শেই, সব বিরোধী দলের নেতাদের এক ছাতায় এনে আগামী মঙ্গলবার মোদীর বিরুদ্ধে কামান দাগার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল এ জন্য বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের ফোন করে আমন্ত্রণ জানাতে শুরু করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সীতারাম ইয়েচুরি, মুলায়ম, মায়াবতী— সকলকেই ওই দিন দিল্লিতে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই দিন বিরোধী দলের নেতারা বৈঠক করে মোদী-বিরোধী যৌথ কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। বৈঠকের পর তা নিয়ে একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও করা হতে পারে। রাহুলের নির্দেশে এ জন্য দিল্লিতে একটি সভাঘর বুক করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।

সংসদে সরকারকে চেপে ধরার ক্ষেত্রে বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয় দেখা গেলেও অধিবেশনের শেষ দিনে বিরোধী জোটে কিছুটা চিড় ধরে। ওই দিন বিরোধী নেতারা একজোট হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে নালিশ করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের সমস্যা ও দাবি নিয়ে রাহুল-সহ কংগ্রেসের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এতে রাইসিনা অভিযান থেকে পিছিয়ে আসেন মায়া-মুলায়ম-সহ আধ ডজন বিরোধী দল। কংগ্রেসের একাংশ নেতার মতে, বিরোধী শিবিরে সেই ফাটল মেরামত করতেই উদ্যোগী হয়েছেন সনিয়া। তা ছাড়া, রাহুলকে বিরোধীদের মুখ হিসেবে তুলে ধরার আগ্রহটাও অজানা কিছু নয়। নতুন বছরেই সভাপতি পদে রাহুলের আনুষ্ঠানিক অভিষেকের প্রবল সম্ভাবনা। দলের ওয়ার্কিং কমিটি ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে সুপারিশ করে দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে ধাপে ধাপে উত্থান হচ্ছে রাহুলেরও। মোদীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। আজও হিমাচলপ্রদেশের ধর্মশালায় তিনি বলেন, ‘‘নোটের কোনও রং হয় না। নোট বেইমানের হাতে পড়লেই কালো হয়। লাইনে দাঁড়ানো সৎ নাগরিকদের বিজেপি ৩ টাকার লাড্ডু খাইয়েছে, আর বিজয় মাল্যকে দেশ থেকে পালাতে দিয়ে ১২০০ কোটি টাকার লাড্ডু খাইয়েছে।’’

তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, সোমবার দুপুরেই দিল্লির যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের কোনও যৌথ বৈঠকে তিনি থাকবেন কি না তা এখনও চূড়ান্ত নয়। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি লন্ডন থেকে দিল্লি ফিরেছেন। সনিয়ার আমন্ত্রণ পাওয়ার পরে পলিটব্যুরো নেতারা তা নিয়ে আলোচনা করতে চান। স্বাভাবিক ভাবেই পশ্চিমবঙ্গের আলিমুদ্দিনের মতও নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE