ভারতে ইউএসএড-এর অর্থ নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা নিল।
আজ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেন যে, যে ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার ভারতের ভোটারদের ভোটদানের জন্য দেওয়া হয়েছিল বলে বলা হয়েছিল, এখন শোনা যাচ্ছে ওই টাকা ছিল বাংলাদেশের জন্য। আদৌ ভারতের জন্য ছিল না। ভারতে ওই টাকা আসেনি। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের ওই তথ্যের ভিত্তিতে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয় বিজেপি। এ বার আমেরিকার ছড়ানো ভুয়ো খবরের ভিত্তিতে ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপি আসলে দেশবিরোধী কাজ করেছে বলে সরব হয়েছেন জয়রাম। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে ভারতকে অপমান করা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নীরব কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের ওই নেতা। তাঁর মতে, আসলে বন্ধু শিল্পপতি গৌতম আদানিকে বাঁচাতে দেশের সম্মান আমেরিকার কাছে বন্ধক রেখেছেন মোদী ও তাঁর দল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে একাধিক বার জানিয়েছিলেন, ভারতে ভোটের হার বাড়ানোর জন্য ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার অনুদান দিয়েছিল পূর্বতন বাইডেন প্রশাসন। আজ জয়রাম রমেশ সমাজমাধ্যম এক্স-এ জানান, “ট্রাম্প প্রশাসন ওই তথ্য প্রচার করার পরে দেশে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে সরব হয় বিজেপি।” বিজেপি এ যাবৎ ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের অভিযোগে সরব ছিল। বিজেপির অভিযোগ ছিল, মোদীকে ক্ষমতা থেকে হটাতে বাইডেন প্রশাসন ওই টাকা কংগ্রেসকে অনুদান হিসেবে দিয়েছিল। রমেশ দাবি করেন, এখন দেখা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ খবরটিই ভুয়ো। ওই টাকা ছিল বাংলাদেশের জন্য। ইলন মাস্ক ভুয়ো তথ্য পেশ করেছিলেন। ট্রাম্প ঢাকা ও দিল্লি গুলিয়ে ফেলেছিলেন।
রমেশের দাবি, ২০২২ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে ‘আমার ভোট আমার নামে’ প্রকল্পে ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা। তার মধ্যে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ডলার ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগেই বিতরণ হয়েছিল।বিষয়টি নিয়ে কংগ্রসকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিজেপি ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, মনে করেন রমেশ। তাঁর কথায়, “কেন আমেরিকার শাসক শিবির ভারতের গণতন্ত্র সম্পর্কে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে, বিজেপির উচিত সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া। কেন আমেরিকার পরিকল্পিত ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেশবিরোধী কাজ করল বিজেপি?” রমেশের প্রশ্ন, এ জন্য কেন বিজেপির বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কাজের অভিযোগ আনা হবে না? রমেশ বলেন, “বারবার ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক ভারতকে অপমান করা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নীরব কেন? এমন তো নয় যে, আদানির জন্য করুণা ভিক্ষা করতে গিয়ে দেশের আত্মসম্মানের সঙ্গে আপস করা হচ্ছে!”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)