দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপরে মানসিক চাপ বাড়াতে তৎপর সব পক্ষই। ফাইল চিত্র।
গুজরাতে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ মিটতেই কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করলেন, তাঁরাই সরকার গড়বেন। দলের দাবি, প্রথম দফার ৮৯টি আসনের মধ্যে অন্তত ৫৫টি আসনে জিততে চলেছে তারা। অন্য দিকে, পদ্ম শিবিরেও গত কালের ভোটের পরে দৃশ্যত স্বস্তির হাওয়া। পিছিয়ে নেই আম আদমি পার্টি (আপ)। গত কাল গুজরাতবাসী তাঁর দলকে ঢেলে ভোট দিয়েছেন বলে দাবি করে তাঁদের ধন্যবাদ দিয়েছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপরে মানসিক চাপ বাড়াতে তৎপর সব পক্ষই।
গত কাল রাজ্যের ১৮২টি আসনের মধ্যে ১৯টি জেলার ৮৯টি আসনে ভোট হয়। আজ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৬২.৮%। ২০১৭ সালে গুজরাতে প্রথম দফায় ভোট পড়েছিল ৬৭% এবং সার্বিক ভাবে দু’দফায় ভোট পড়েছিল ৬৯.০১%। সে দিক থেকে বিশ্লেষণ করলে গত বারের মোট ভোটের চেয়ে এ বারের প্রথম দফায় প্রায় ছয় শতাংশ ও গত বারের প্রথম দফার চেয়ে এ বারের প্রথম দফায় চার শতাংশের কাছাকাছি ভোট কম পড়েছে। কংগ্রেস শিবিরের মতে, ওই ভোট মূলত বিজেপির ঘরের ভোট। বড় সংখ্যক একনিষ্ঠ কর্মী এ যাত্রায় বসে যাওয়ার জন্যই বিজেপির ভোট কম পড়েছে। আর তার ফায়দা পেতে চলেছে কংগ্রেস।
বিজেপি শিবির ঘরোয়া ভাবে মানছে, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের জন্য দলীয় কর্মীদের একটি অংশ ভোট দিতে সে ভাবে এগিয়ে আসেনি। কিন্তু প্রথম দফায় যে চার শতাংশ ভোট কম পড়েছে, তার গোটাটাই বিজেপির বলে মানতে চাননি দলীয় নেতারা। বিজেপির পাল্টা দাবি, বরং কংগ্রেসের বহু কর্মী এ বার বসে গিয়েছেন বিজেপির উপযুক্ত বিকল্প না থাকায়। পদ্ম শিবিরের মতে, যে চার শতাংশ ভোট কম পড়েছে, তাতে বিজেপির সমর্থকেরা যেমন রয়েছেন, তেমনই আছেন কংগ্রেসের ভোটাররা। পাল্টা কংগ্রেসের দাবি, গত বারের মতোই ভাবনগর, আমরেলির মতো আদিবাসী এলাকাগুলিতে ভাল ফল করতে চলেছে তারা। ওই এলাকাগুলিতে ভোটের হার এ বার ষাট শতাংশও পেরোয়নি, যা বিরোধীদের কাছে আশার বিষয়। প্রচলিত ধারণাই হল, শাসক শিবিরের পক্ষে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট না পড়লে সে ক্ষেত্রে ভোটের হার কম হয়ে থাকে, যেমনটা হয়েছে এ বারে। কংগ্রেসের দাবি, মূলত এ বার প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোটই বেশি পড়েছে। ফলে তাদের প্রার্থীদের জেতার সম্ভাবনা অনেক উজ্জ্বল।
গত কাল ভোট শেষ হতেই প্রথম পর্বের গতি-প্রকৃতি খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। বৈঠকে গুজরাতের কংগ্রেস নেতারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওই রাজ্যে দলের বর্ষীয়ান পর্যবেক্ষক অশোক গহলৌত। কংগ্রেসের দাবি, ভোট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৮৯টির মধ্যে অন্তত ৫৫টি আসনে জয়ের মতো পরিস্থিতিতে রয়েছেন তাদের প্রার্থীরা। উজ্জীবিত কংগ্রেস নেতৃত্ব তাই ঠিক করেছেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে কোনও ওবিসি নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। এ ছাড়া জনজাতি, মুসলিম ও দলিত সমাজের তিন নেতাকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে বড় মাপের প্রচারে নামার কৌশল নিয়েছে দল। মূলত রাজ্যের সব শ্রেণির মানুষের সমর্থন জোগাড়ের উদ্দেশ্যেই ওই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
গত কাল ভোটের পরে আজ সুরাতে হিরের ব্যবসায়ী ও প্রোমোটারদের ২০টি ঠিকানায় আয়কর দফতর হানা দেয়। কংগ্রেস নেতা পবন খেড়ার মতে, ‘‘প্রথম দফার ভোটাভুটি দেখে বিজেপি যে বিচলিত হয়ে পড়েছে, ওই আয়কর অভিযান থেকেই স্পষ্ট।’’ দলের দাবি, সুরাতের দু’টি আসনের মধ্যে সুরাত (পূর্ব) আসনটি জিততে চলেছে কংগ্রেস। অন্য দিকে কেজরীওয়ালের দাবি, সুরাত-সহ সৌরাষ্ট্র এলাকায় ভাল ফল করতে চলেছে আপ। বসে নেই বিজেপি নেতৃত্বও। প্রথম দফার ভোটের খামতি পুষিয়ে নিতে মাঠে নেমেছে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর বাহিনী। আজও আমদাবাদে দীর্ঘ শোভাযাত্রা করে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে রাজ্যবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মোদী। তবে এর পাশাপাশিই দ্বিতীয় দফায় যাতে বিজেপি কর্মীরা আত্মতুষ্টি ঝেড়ে ফেলে মাঠে নামেন, সে জন্য বিশেষ ভাবে তৎপর হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy