সলমন খুরশিদ। ফাইল চিত্র।
২০১৭-য় গুজরাতের নির্বাচনের আগে মণিশঙ্কর আইয়ার নরেন্দ্র মোদীকে ‘নীচ কিসিম কা আদমি’ বলে বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে তাঁর ‘চাওয়ালা’ মন্তব্যকেও বিজেপি হাতিয়ার করেছিল। চুরাশির শিখ নিধন নিয়ে স্যাম পিত্রোদার ‘হুয়া তো হুয়া’ মন্তব্যকেও বিজেপি কাজে লাগিয়েছিল।
এ বার উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে সলমন খুরশিদ তাঁর বইয়ে বিজেপি-আরএসএসের হিন্দুত্বের সঙ্গে আইএসআইএস ও বোকো হারামের জিহাদি ইসলামের তুলনা করতে গিয়ে আদতে দলের জন্য বিপদ ডেকে এনেছেন বলেই কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন। খুরশিদ উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ইস্তাহার তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক নিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা খুরশিদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর।
আজ কংগ্রেস নেতৃত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, খুরশিদ বইয়ে যা লিখেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। কিন্তু সে কথা বোঝানোর আগেই কংগ্রেস নেতারা খুরশিদের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বসে রয়েছেন। অযোধ্যা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে তাঁর সদ্য প্রকাশিত বইতে খুরশিদ সনাতন হিন্দুধর্ম ও বিজেপি-আরএসএসের হিন্দুত্বের মধ্যে ফারাক করেছেন। বিজেপি-আরএসএসের হিন্দুত্বকে তিনি রাজনৈতিক রূপ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। কংগ্রেস খুরশিদের মন্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরি করতে চাইলেও আজ সরাসরি
গাঁধী পরিবারকে আক্রমণ করে বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেন, “খুরশিদ যা করেছেন তা সনিয়া-রাহুল গাঁধীর নির্দেশেই করেছেন। এ ধরনের মনোভাব
কোনও কংগ্রেস নেতার বিচ্ছিন্ন চিন্তাধারা নয়। একের পর এক ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে এটা গোটা কংগ্রেস দলের মানসিকতা। সনিয়া গাঁধীদের উচিত এ বিষয়ে নীরবতা ভেঙে দলের মনোভাব স্পষ্ট করা।” অবিলম্বে খুরশিদকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন ভাটিয়া। খুরশিদের বিরুদ্ধে দুই আইনজীবী আজ অভিযোগও দায়ের করেছেন।
কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা আজ বলেছেন, খুরশিদ ভুল কিছুই বলেননি। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের মতে, খুরশিদ ভুল না বললেও ভুল সময়ে এটা বলেছেন। এর ফলে হিন্দু ভোটারদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের আগে খুরশিদের বই থেকে হিন্দু মেরুকরণের সুযোগ তৈরি হতেই বিজেপি ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর যুক্তি, মুসলিমদের তুষ্টিকরণের উদ্দেশ্যে হিন্দুত্বকে তুলনা করা হয়েছে ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, বিজেপি বরাবরই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের আঙুল তুলে হিন্দু ভোট ঝোলায় পোরার চেষ্টা করে। তা ঠেকাতে রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরতে হচ্ছে। খুরশিদের মন্তব্য সেই চেষ্টায় জল ঢেলে দিয়েছে। খুরশিদের অবশ্য মত, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সমর্থক ভাবমূর্তি নিয়ে দলের অনেকে আফশোস করেন। তাঁরাই কংগ্রেস নেতৃত্বের পৈতেধারী পরিচয় তুলে ধরেন। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস ২০১৭-র গুজরাত ভোটের সময় রাহুল গাঁধীকে ‘পৈতেধারী হিন্দু’ বলে তুলে ধরেছিল। অযোধ্যায় রামমন্দিরকেও স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু বুধবারই খুরশিদের বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে পি চিদম্বরম সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমালোচনা করে বলেছিলেন, দুই সম্প্রদায় ওই রায়কে মেনে নিয়েছেন বলেই তা সঠিক হয়ে গিয়েছে, বা রায় সঠিক বলে দুই সম্প্রদায় তা মেনে নিয়েছে, এমন নয়। একেও চিদম্বরমের ব্যক্তিগত মতামত বলে আজ কংগ্রেস বোঝানোর চেষ্টা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy