অসমের রূপহীহাটে মহিলাদের সিএএ-বিরোধী মিছিল। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে পথে নামলেন মহিলারা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে অসমের সবচেয়ে বড় মহিলা মিছিল ও সমাবেশ হল নগাঁওয়ের রূপহীহাটে। এর আয়োজন করেছিল কংগ্রেস। আজকের জনসভা থেকেই এনআরসি, সিএএ, বিভাজন রাজনীতি ও মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী বছরের ভোটে বিজেপিকে রাজ্য থেকে উৎখাত করার ডাক দেওয়া হয়। কংগ্রেসের বিধায়ক রকিবুল হুসেন দাবি করেন, সিএএর বিরুদ্ধে হাত মেলানো দলগুলি একশোর বেশি আসন পাবে। বিজেপি কমবেশি ২৬টি আসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। জনসভা থেকে কংগ্রেসের আবেদন, আসন্ন সুমারিতে সকলে যেন নিজেদের মাতৃভাষা অসমীয়া লেখেন। যদিও একই সঙ্গে, রকিবুল বলেন, “বিজেপি বড়ো চুক্তি করে বড়ো সমাজ, সিএএ করে অসমের সমাজ ভাগ করতে এসেছে। এখন বাঙালির ঘরে যেতে অসমিয়ারা সঙ্কোচ বোধ করেন। বাংলাভাষীরা ভয়ে আছেন। কিন্তু বৃহত্তর নগাঁওতে ১৯৭১ সালের পরে আসা বাঙালি নেই। আমাদের সিএএ লাগবে না। অসমে বাঙালিদের যথেষ্ট অবদান। বাংলাভাষীদের ভাগ করার চেষ্টা রুখতে হবে। এখনকার সকলেই মনেপ্রাণে অসমিয়া।
সিএএ নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্যে ভূমিপুত্র ও বহিরাগত মুসলিমদের আলাদা করা ও চারটি দেশীয় মুসলিম গোষ্ঠীর সুমারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ সংখ্যালঘু সমাজ। এ দিনের সভায় নতুন ভূমি নীতি, মুসলিমদের আলাদা করার চক্রান্তর বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন হাজার হাজার মহিলা।
এনসিআরবির রিপোর্ট অনুযায়ী মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে দেশের এক নম্বরে রয়েছে অসম। সেই প্রসঙ্গ বারবার তোলে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ রিপুন বরা বলেন, ‘‘নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা বিজেপি আদতে মহিলা-বিরোধী। এনআরসির নামে চল্লিশ লক্ষ বিবাহিত মহিলার নাম কাটার চক্রান্ত করেছিল তারা। বিজেপির মদতে চলা মাইক্রোফিনান্সের দৌরাত্ম্যে অনেক মহিলা আত্মঘাতী হচ্ছেন। গ্যাসের দাম সাড়ে ন’শো টাকা হয়েছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে মাইক্রোফিনান্সের এই অত্যাচার বন্ধ করবে ও সব মহিলার নেওয়া ঋণ মকুব করার ব্যবস্থা করবে।’’ স্থানীয় বিধায়ক নুরুল হুদার দাবি, আগের কোনও প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি বুঝেই সিএএ এনে, মুসলিম ও অসমিয়া-বাঙালির মধ্যে বিভেদ তৈরি করে জেতার চেষ্টা করছে বিজেপি। তাই প্রথম বার বেড়া ভেঙে সংখ্যালঘু মহিলারা দলে দলে মিছিলে হাঁটলেন।
সাংসদ গৌরব গগৈ বলেন, “পুলিশ, সিবিআই, ইডি দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে বিদ্রোহ দমন করছে বিজেপি। কিন্তু রূপহীর মহিলারা বার্তা দিলেন আমরা কাউকে ভয় পাই না।” তাঁর অভিযোগ, এআইইউডিএফের সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের ফলেই ইচ্ছাকৃত ভাবে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। বিধায়ক অজন্তা নেওগ বলেন, শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ৫৫০ বছর আগে ধর্মনিরপেক্ষতার বাতি জ্বালিয়েছিলেন। আজ রূপহীর মহিলারা ফের বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করলেন। সিএএর মাধ্যমে বিজেপি সংবিধান ও অসম চুক্তি ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে। তিনি অনুরোধ করেন, পরের সুমারির সময় এই অঞ্চলের সকলে যেন মাতৃভাষা হিসেবে অসমীয়া লেখেন।
বিজেপির হুমকি উড়িয়ে রকিবুল বলেন, “কংগ্রেস ইংরাজ, আলফাকে ভয় করেনি। বিজেপি কংগ্রেস নেতাদের মিথ্যে অভিযোগে গ্রেফতার করছে। আমরা ক্ষমতায় ফিরলে সব বিচার হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy