শশী তারু এবং মল্লিকার্জুন খড়্গে। ফাইল চিত্র।
প্রায় আড়াই দশক পরে ভোটাভুটির মাধ্যমে গান্ধী পরিবারের বাইরে কংগ্রেস সভাপতি বাছা হবে। আর সেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল শনিবার। এক দিকে গান্ধী পরিবারের বাছাই করা কংগ্রেস সভাপতি পদে প্রার্থী মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কংগ্রেসের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে। পাশাপাশি সভাপতি নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। মোট তিন জন কংগ্রেস নেতা মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে খড়্গে এবং শশী তারুর ছাড়াও ছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মন্ত্রী কে এন ত্রিপাঠী। কিন্তু ত্রিপাঠীর মনোনয়ন খারিজ হয়ে দিয়েছে। ফলে শশী তারুর এবং মল্লিকার্জুন খড়্গের মধ্যেই এখন চূড়ান্ত লড়াই। কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মধুসূদন মিস্ত্রি জানিয়েছেন, সই না-মেলা সংক্রান্ত সমস্যা থাকায়, ত্রিপাঠীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ৮ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন প্রার্থীরা।
গত কাল তারুর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়ে ‘কংগ্রেস কা কোহিনূর’ বলে স্লোগান দিয়েছিলেন সমর্থকেরা। আজ তাঁর প্রচার শুরু করলেন তারুর নাগপুরের দীক্ষাভূমি স্মরণস্তম্ভ থেকে। রবিবার তিনি যাবেন ওয়ার্ধায় মহাত্মা গান্ধীর সেবাগ্রাম আশ্রমে। তারুর আজ জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে খড়্গের কথা হয়েছে। দু’জনের মধ্যে কোনও বৈরিতা নেই, তাঁরা দলীয় সতীর্থ। খড়্গেকে কংগ্রেস দলের ‘পিতামহ ভীষ্ম’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন তারুর! শনিবার সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানান, কোনও নেতা নয় দলের কর্মীদের প্রস্তাব মেনেই কংগ্রেস সভাপতিপদে ভোটে লড়ছেন তিনি। দলের অন্দরে পরিবর্তনের কণ্ঠস্বর হওয়াই তাঁর লক্ষ্য। মতাদর্শগত ভাবে প্রতিপক্ষ মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে তাঁর বিরোধ নেই।
অন্য দিকে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে খড়্গে পদত্যাগ করার পরে কে হবেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তা নিয়ে। আপাতত স্থির হয়েছে, সভাপতি নির্বাচনের পাট চুকে যাওয়ার পরে এই বিষয়ে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, দৌড়ে আপাতত এগিয়ে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংহ। তিনি কংগ্রেস সভাপতি পদে লড়াইয়ে নামতে গিয়েও খড়্গেকে দেখে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। ফলে তাঁর এই ‘ইতিবাচক আচরণ’কে কংগ্রেস নেতৃত্ব হিসেবের মধ্যে রেখে তাঁকে রাজ্যসভার নেতা হিসেবে বাছতেও পারেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “দিগ্বিজয় সিংহ কোনও সাংগঠনিক পদে নেই এই মুহূর্তে। হিন্দি বলয় থেকে এক জন নেতাকে নেওয়া ভারসাম্যের খাতিরে লাভবান হতে পারে দলের কাছে।” সেইসঙ্গে তিনি জানান, মুকুল ওয়াসনিকের নামও বিবেচনার মধ্যে আসতে পারে।
অন্য দিকে কংগ্রেস নেতৃত্বের অপছন্দের তালিকায় চলে যাওয়া অশোক গহলৌত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদটি ধরে রাখতে কিছুটা রাজনৈতিক ভাবে প্রাসঙ্গিক থাকতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ধারণা। আজ তিনি তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার আবু রোডের জনসভায় মোদীর সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করার প্রসঙ্গ তুলে আজ গহলৌত বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন তিনি আমার থেকেও বেশি বিনম্র। তাই তিনি তিন বার সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করেছেন রাজস্থানের আবু রোডে।” কিছুটা আত্মপ্রচারের সুরেই তাঁর বক্তব্য, “রাজস্থানে গহলৌতের ভাবমুর্তি একজন সাদাসিধে বিনম্র মানুষের। তাই তিনি আমার থেকেও বেশি বিনীত হতে চেষ্টা করেছেন। উনি যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শান্তি, সংহতির কথা বলতেন তাহলে আমি নিজেই তাঁকে ধন্যবাদ জানাতাম। মানুষ তাঁর কথা শুনতেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy