সাক্ষী মালিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
বিরোধী সাংসদ তাঁকে নকল করেছেন বলে নালিশ করে উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেছিলেন, এক জন জাঠকে অপমান করা হয়েছে। ‘কিসান-পুত্র’-কে অপমান করা হয়েছে। তার পর থেকে বিজেপিও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা ধনখড়ের অনুকরণকে হরিয়ানার জাঠ ও কৃষকদের অপমান আখ্যা দিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছে।
আজ কংগ্রেস সাক্ষীকে সামনে রেখে অভিযোগ তুলল, বিজেপি হরিয়ানার মেয়ে ও কৃষকের কন্যাকে অপমান করেছে। অলিম্পিক্সে পদকজয়ী কুস্তিগিরকে কুস্তি ছাড়তে বাধ্য করেছে। মহিলা কুস্তিগির, কৃষক তথা দেশের কন্যার প্রতি এই অন্যায়ের জন্য মোদী সরকারই দায়ী। কারণ, মহিলা কুস্তিগিরদের উপরে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ সত্ত্বেও মোদী সরকার বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি।
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা আজ সাক্ষীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। প্রিয়ঙ্কা বলেন, এক জন মহিলা হিসেবেই তিনি সাক্ষীর কাছে গিয়েছিলেন। সাক্ষী-সহ কুস্তিগিরেরা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দিল্লির রাস্তায় নেমে ৩৯ দিন ধরে আন্দোলন করেছিলেন। তাঁরই ডান হাত জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি পদে জিতে এসেছেন। তার পরেই সাক্ষী কুস্তি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। আজ কংগ্রেসের হরিয়ানার নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা ও বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন ছুড়েছেন, কৃষক-কন্যা, পদকজয়ী মহিলা কুস্তিগিরদের সঙ্গে কি মোদী সরকার এই রকমই আচরণ করবে?
সাংসদদের সাসপেনশনের পরে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে কটাক্ষের মধ্যে কেন জাতপাত নিয়ে আসা হচ্ছে, তা নিয়ে আজ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে প্রশ্ন তুলেছেন। দিল্লির যন্তর-মন্তরে ১৪৬ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় খড়্গে বলেন, তিনি বার বার রাজ্যসভায় বলতে চাইলেও তাঁকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। খড়্গে তাঁর নিজের দলিত পরিচিতিকে তুলে ধরে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘তা হলে কি আমার বলা উচিত, বিজেপি এক জন দলিতকে বলতে দিল না?”
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর দাবি, ‘‘আমরা এত জন সাংসদকে সাসপেন্ড করতে চাইনি। কয়েক জন সাংসদ সাসপেন্ড হওয়ার পরে তাঁদের দলের অন্য সাংসদেরা এসে অনুরোধ করেন যে, তাঁদেরও সাসপেন্ড করতে হবে। কংগ্রেস ও বিরোধীদের অবস্থা এখন এতটাই নীচে নেমে গিয়েছে।’’ কংগ্রেসের পাল্টা প্রশ্ন, তাদের অনুরোধে যদি সাংসদদের সাসপেন্ডই করা হয়, তা হলে সেই তাদেরই অনুরোধে সংসদের ধোঁয়া-কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিবৃতি দিলেন না কেন।
বিজেপি আজ ফের অভিযোগ তুলেছে, কৃষক সমাজের প্রতিনিধি ধনখড়কে অপমান করা কোনও ব্যতিক্রম নয়। শুধু উপরাষ্ট্রপতি নন, প্রধানমন্ত্রী মোদী থেকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সকলেই পিছিয়ে পড়া সমাজের প্রতিনিধি হওয়ায় কংগ্রেস তাঁদের সহ্য করতে পারে না। সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালের অভিযোগ, সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় শীতকালীন অধিবেশন ভেস্তে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল কংগ্রেস। তাতে ইন্ধন জোগায় সংসদে হামলার ঘটনা।
মোদী ওবিসি সমাজের প্রতিনিধি। দ্রৌপদী জনজাতি সমাজের। আর জাঠ সমাজ তথা কৃষক সমাজের প্রতিনিধি ধনখড়। মেঘওয়ালের অভিযোগ, দেশের শীর্ষ
সাংবিধানিক পদে আসীন হওয়া ব্যক্তিত্বেরা পিছিয়ে পড়া সমাজের প্রতিনিধি হওয়ায় কংগ্রেস, বিশেষ করে গান্ধী পরিবার এঁদের কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। কারণ, কংগ্রেস তথা গান্ধী পরিবার মনে করে, এক মাত্র তাদেরই অধিকার রয়েছে দেশ শাসন করার। সেই কারণেই সময়ে সময়ে শীর্ষ পদে আসীনদের কটূক্তি করতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে। মেঘওয়াল বলেন, এঁদের মানসিকতাই হল দলিত, কৃষক ও ওবিসি সমাজকে অপমান করা। বিজেপি নেতৃত্বের কথায়, সংসদ চত্বরে ধনখড়ের যে অনুকরণ কল্যাণ করছিলেন, তা মোবাইলে রেকর্ড করেছেন রাহুল গান্ধী। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়া সত্ত্বেও ক্ষমা চাওয়ার পথে হাঁটেননি রাহুল। বিজেপি শিবিরের মতে, রাহুলের ঔদ্ধত্যই তাঁকে ক্ষমা চাইতে বাধা দিচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy