কেরল হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
স্ত্রীকে অন্য মহিলার সঙ্গে তুলনা এবং স্ত্রী হিসাবে তিনি প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ, স্বামীর তরফে এ হেন মন্তব্য আসলে মানসিক নির্যাতনের শামিল— এক মামলায় এমনটাই জানিয়েছে কেরল হাই কোর্ট।
ওই মামলায় দেখা গিয়েছে, বিয়ের পরে খুব কম সময়েই একসঙ্গে ছিলেন ওই দম্পতি। দীর্ঘ সময় বিচ্ছিন্ন থাকার পরে বিবাহ বিচ্ছেদের রায় দিয়েছিল পরিবার আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে কেরল হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু তাঁর আবেদন খারিজ করেছে হাই কোর্ট। সঙ্গে ওই মন্তব্যও করে। পরিবার আদালতে বিচ্ছেদের রায় ঘোষণার সময়ে জানানো হয়েছিল, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে পরিপূর্ণতা না-থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই পাল্টা মামলা করেন স্বামী। কেরল হাই কোর্টে বিচারপতি অনিল কে নরেন্দ্রন এবং বিচারপতি সিএস সুধার বেঞ্চ বিচ্ছেদের রায় বহাল রেখেও তার কারণ হিসাবে ১৮৬৯ সালের বিচ্ছেদ আইনের উল্লেখ করে জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে বিষয়টি মানসিক নির্যাতনের মধ্যে পরে।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, স্বামীর তরফে বার বার বলা হয়েছে স্ত্রী তাঁর প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। এ ক্ষেত্রে অন্য মহিলার সঙ্গে স্ত্রীর তুলনাও টেনে আনেন স্বামী। এ হেন আচরণ এক জন স্ত্রীর পক্ষে সহনীয় নয়। তা মানসিক নির্যাতনের শামিল।
এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে স্ত্রী ও তাঁর মায়ের সাক্ষ্য। সঙ্গে স্ত্রীকে পাঠানো স্বামীর ই-মেল। সেই ই-মেলে স্বামী নির্দেশ দিয়েছিলেন, সম্পর্ক রাখতে গেলে স্ত্রীকে কী ভাবে আচরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অবহেলার বিষয়টিও তুলে ধরেছে আদালত। সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী অভিযোগ এনেছেন যে, তিনি আকর্ষক নন বলে তাঁর সঙ্গে সহবাসেও অনিচ্ছুক ছিলেন স্বামী। গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দাম্পত্য সম্পর্কে স্বামীর ব্যবহার যথোপযুক্ত এবং স্বাভাবিক ছিল না বলেও উল্লেখ করেছে আদালত। যদিও খুব অল্প সময়েই একসঙ্গে থেকেছেন ওই দম্পতি।
প্রসঙ্গত ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে বৈবাহিক সম্পর্কে বাঁধা পড়েন তাঁরা। সেই সময়ে স্বামীর বয়স ২৯ বছর এবং স্ত্রীর ২৬। সেই বছরের নভেম্বরেই বিচ্ছেদের মামলা করেন স্ত্রী। সেই সময় থেকে খুব কম সময়েই একসঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁদের। দীর্ঘ সময় আলাদা থাকার সঙ্গে সঙ্গে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সে ভাবে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়নি।
আদলতের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে দু’জনের সম্পর্কের ত্রুটি-বিচ্যুতি মেরামত করা সম্ভব নয় বলেই মনে হচ্ছে। শুধুমাত্র নামেই বিয়ে টিকিয়ে রাখা অর্থহীন। তার জেরে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তই জারি রাখা বাঞ্ছনীয় বলে জানায় আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy