Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
By-Election in India

৫০ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শক্তি বাড়িয়ে নিল বিজেপি, ব্যতিক্রম বাংলা, কংগ্রেস কমে লোকসভায় হল ৯৮

বিধায়কেরা লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় দেশের বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। কিছু আসনে অবশ্য বিধায়কের মৃত্যু কিংবা দলবদলের কারণেও এই অকাল ভোট হয়েছে।

সারা দেশে উপনির্বাচনের ফলে স্বস্তিতে বিজেপি। রাজ্যে তৃণমূলের জয়জয়কার।

সারা দেশে উপনির্বাচনের ফলে স্বস্তিতে বিজেপি। রাজ্যে তৃণমূলের জয়জয়কার। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২০:২৪
Share: Save:

শুধু মহারাষ্ট্র নয়, দেশের ৪৮টি বিধানসভা এবং দু’টি লোকসভা উপনির্বাচনের ফলও ‘স্বস্তিতে’ রাখতে পারে বিজেপিকে। অন্য দিকে, উপভোটের ফল কংগ্রেস তথা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র জন্য যথেষ্ট হতাশাব্যঞ্জক। তবে ‘ইন্ডিয়া’র শক্তিক্ষয়ের মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল নিজেদের জমি ধরে রেখেছে। বস্তুত, রাজ্যের ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রেরই উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে তারা কেবল জমি ধরেই রাখেনি, বিজেপির জমি কেড়েও নিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এই ছ’টি কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র মাদারিহাটে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। সেই আসনটিও এ বার তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে।

বিধায়কেরা লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় দেশের বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছিল। কিছু আসনে অবশ্য বিধায়কের মৃত্যু কিংবা দলবদলের কারণেও এই অকাল ভোট হয়েছে। লোকসভা ভোটে রায়বরেলী এবং ওয়েনাড় কেন্দ্র দুই আসনেই জয়ী হয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। পরে তিনি ওয়েনাড় আসনটি ছেড়ে দেন। দাদার প্রাক্তন আসনে ভোটে লড়তে নামেন বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। ভোটের ফল বলছে, ওয়েনাড়ে সিপিআই প্রার্থীকে চার লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়ে প্রথম বার লোকসভায় যাচ্ছেন তিনি। তবে ওয়েনাড় আসনটি ধরে রাখলেও মহারাষ্ট্রের নান্দেড় লোকসভা আসনটি খুইয়েছে কংগ্রেস। ফলে পাঁচ মাসের মধ্যেই লোকসভায় কংগ্রেসের আসনসংখ্যা ৯৯ থেকে কমে হচ্ছে ৯৮।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

উত্তরপ্রদেশে কৌতূহলের কেন্দ্রে ছিল বিজেপি। কারণ, এই রাজ্যের সবচেয়ে বেশি (৯) বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছিল। লোকসভা ভোটে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র চমকদার ফলাফল করে বিজেপিকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু এসপি-র সাফল্যের সেই ধারা উপনির্বাচনে রইল না। নয় আসনের মধ্যে ছ’টিতে জিতল বিজেপি। একটিতে বিজেপির জোটসঙ্গী দল আরএলডি। মাত্র দু’টিতে এসপি। উল্টে এসপি-র হাতে থাকা দু’টি আসন ছিনিয়ে নিল বিজেপি।

অসমে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি তিনটি আসন নিজেদের দখলে রাখার পাশাপাশি একটি আসন কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তবে কংগ্রেসের মুখে হাসি ফুটিয়েছে কর্নাটক। সেখানকার দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গী জেডিএস-এর থেকে জিতে নিয়েছে ‘হাত’ শিবির। ঘটনাচক্রে, ওই দু’টি আসনের বিধায়ক ছিলেন রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী এবং বাসবরাজ বোম্মাই। মধ্যপ্রদেশের বিজয়পুর কেন্দ্রের বিধায়ক কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে উপনির্বাচনের ফল বলছে, এই আসনটি এ বারও নিজেদের দখলে রাখছে কংগ্রেস। অন্য দিকে, পঞ্জাবের বার্নালা আসনটি আপের হাত থেকে কেড়ে নিচ্ছে কংগ্রেস।

মরুরাজ্য রাজস্থানেও কংগ্রেসের শক্তিক্ষয়ের ইঙ্গিত স্পষ্ট। সাতটি বিধানসভা আসনের মধ্যে পাঁচটি নিজেদের দখলে রাখছে বিজেপি। বিহারেও দেখা গিয়েছে বিজেপি এবং এনডিএ-র দাপট। আরজেডি-র জেতা দু’টি আসনে এ বার ফুটেছে পদ্মফুল। সিপিআইএমএল-এর থেকেও একটি আসন জিতে নিয়েছে বিজেপি। দেশে বিধানসভা উপনির্বাচনের সামগ্রিক ফল বলছে, কংগ্রেসের আসনসংখ্যা ১৩ থেকে কমে সাত হচ্ছে। পক্ষান্তরে ১১ থেকে ২০ হয়ে শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে বিজেপির।

প্রতিটি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষিত ভিন্ন। সেই নিরিখেই উপনির্বাচনের এই ফলাফল বিশ্লেষিত হওয়ার কথা। তা ছাড়া, উপনির্বাচনে শাসকদলই জেতে, এমন একটি সরলীকৃত ধারণাও জনমানসে প্রতিষ্ঠিত। তবে এই ভোট দলগুলির কাছে শক্তি এবং জনসমর্থন যাচাইয়ের একটি সুযোগ। শক্তিবৃদ্ধি করে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার সুযোগও বটে। সেই দিক থেকে দেখলে কংগ্রেস এবং বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে কোণঠাসা করে কিস্তিমাত করল বিজেপি। জেতা আসন মাঝপথে খুইয়ে চাপে পড়ল কংগ্রেস, এসপি, আরজেডির মতো বিরোধী শিবিরের দলগুলি। ব্যতিক্রম হয়ে রইল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ।

অন্য বিষয়গুলি:

By Election 2024 By poll NDA BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy