Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Deepika Padukone

দীপিকাকে ট্রোলের জবাব! ‘ছপাক’ করমুক্ত করল কং-শাসিত দুই রাজ্য

জেএনইউ-কাণ্ডে পড়ুয়াদের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দীপিকা পৌঁছেছিলেন জেএনইউ-র সবরমতি টি পয়েন্টে। আর এর পরই গেরুয়া শিবিরের ‘চক্ষুশূল’ হয়ে উঠেছেন তিনি।

দুই রাজ্যে করমুক্ত ‘ছপাক’।

দুই রাজ্যে করমুক্ত ‘ছপাক’।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৩২
Share: Save:

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে ‘সংহতি’র বার্তা দেওয়ার পরই তাঁর উপর কোপ পড়েছিল গেরুয়া শিবিরের। এ বার সেই ট্রোলিংয়ের জবাব দিল কংগ্রেস শিবির। দীপিকা পাড়ুকোনের ছবি ‘ছপাক’-কে করমুক্ত ঘোষণা করল কংগ্রেস শাসিত দুই রাজ্য মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগড়।

জেএনইউ-কাণ্ডে পড়ুয়াদের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দীপিকা পৌঁছেছিলেন জেএনইউ-র সবরমতি টি পয়েন্টে। ছাত্রছাত্রীদের জমায়েতে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের পাশে দাঁড়িয়েই প্রতিবাদে সামিল হন তিনি। আর সেই ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে। আর এর পরই গেরুয়া শিবিরের ‘চক্ষুশূল’ হয়ে উঠেছেন তিনি।

মঙ্গলবার ঐশী ঘোষের সঙ্গে দীপিকা পাড়ুকোন।

ওই দিন সন্ধ্যায় প্রতিবাদী দীপিকার সমালোচনায় পোস্ট করেন বিজেপি মুখপাত্র তাজিন্দর পাল সিংহ বাগ্গা। টুইটারে তিনি দীপিকাকে বয়কটের ডাক দেন। এর পরই ইন্টারনেটে বাড়তে থাকে অভিনেত্রীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য। তীব্র হয় ‘বয়কটের ডাক’। টুইটারে ট্রেন্ডিং হয় ‘#বয়কট ছপাক’। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিরোধিতার সমস্ত স্বরকে চাপা দিয়েই টুইটার ট্রেন্ডিংয়ে এগিয়ে যায় ‘#আইসাপোর্টদীপিকা’। ‘ছপাক’-এর বিরোধিতায় নেমে ফেসবুকে অজস্র অ্যাকাউন্ট থেকে সিনেমাটির টিকিট বাতিলের ছবি পোস্ট করা হয়। সঙ্গে বার্তা দেওয়া হয়েছিল, ‘‘আমি টিকিট বাতিল করেছি। আপনিও করুন।’’ কিন্তু দেখা যায় একই টিকিটের স্ক্রিন শট শেয়ার করেছিলেন অনেকে। বিষয়টি ধরা পড়ে যেতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদেরও তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়।

বিতর্ক অবশ্য এখানেই থামেনি। একটি পত্রিকায় সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এই ছবির উপর। তাতে লেখা হয়েছিল, দিল্লির ওই ঘটনায় বাস্তবে অ্যাসিড আক্রমণকারীর নাম ‘নঈম খান’। কিন্তু ‘ছপাক’ সিনেমায় সেই নাম পাল্টে করা হয়েছে রাজেশ। এই তথ্যের বাছবিচার না করেই দীপিকাকে আক্রমণ শুরু হয়। সেই তালিকায় ছিলেন বিজেপির নেতা, মন্ত্রীরাও। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী টুইটে আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। বাবুল সুপ্রিয়ও টুইটারে লেখেন, ‘‘এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা অপ্রয়োজনীয় এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন।...’’ আসল ঘটনা অবশ্য ভিন্ন বলেই দাবি করছেন ফিল্ম রিভিউয়াররা। তাঁরা বলছেন, বাস্তবে চরিত্রের নাম ‘লক্ষ্মী আগরওয়াল’ (আক্রান্ত) ও ‘নঈম খান’ (আক্রমণকারী)। সিনেমার ওই দুটি চরিত্র ‘মালতি’ ও ‘বশির খান’ বলে দেখানো হয়েছে। রিভিউয়াররা জানান, চরিত্রের নাম বদলানো হলেও, ধর্ম বদলে দেওয়া হয়নি।

এই বিতর্কের মধ্যেই, মেঘনা গুলজার পরিচালিত, দীপিকা পাড়ুকোনের ওই ছবির উপর থেকে সব কর তুলে নেওয়ার কথা প্রথম ঘোষণা করে মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকার। মধ্যপ্রদেশের দেখানো হেঁটে এ বার ‘ছপাক’-এর কর মুক্তির কথা জানিয়ে দিয়েছে আর এক কংগ্রেস শাসিত রাজ্য ছত্তীসগড়ও।

১০ জানুয়ারি শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে দীপিকা পাড়ুকোনের ওই ছবিটি। এটা তাঁর প্রথম প্রযোজনাও বটে। কিন্তু, ছবি মুক্তির আগে দীপিকার জেএনইউ-যাত্রার পর থেকেই যেন তাল কেটেছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছিলেন বলিউডের একটি বড় অংশ। গত মঙ্গলবারের পর সেই বিরোধিতার তালিকায় যোগ হয়েছে দীপিকা পাড়ুকোনের নামও।

জেএনইউ ক্যাম্পাসে দীপিকা পাড়ুকোনের উপস্থিতি কিছুটা চমকে দিয়েছে বিভিন্ন মহলকেই। কিন্তু, রাজনৈতিক মত প্রকাশের ক্ষেত্রে এই প্রথম উদাহরণ তৈরি করলেন না ওই বলিউড স্টার। ২০১০ সালে দূরদর্শনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করে দেন, রাহুল গাঁধীকেই তিনি প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। গত মঙ্গলবার তাঁর জেএনইউ-যাত্রার পর সেই সাক্ষাৎকারের কথা তুলে আনছেন অনেকেই। বছর দু’য়েক আগেও রোষের মুখে পড়েছিল দীপিকা পাড়ুকোনের ছবি। ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর ‘পদ্মাবত’ ছবিটি করণী সেনার রোষের মুখে পড়ে। তাতে ছবির পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভন্সালীকে থাপ্পড় মারা, সেটে ভাঙচুর চালানোর মতো ঘটনাও ঘটেছিল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE