(বাঁ দিক থেকে) চন্দ্রবাবু নায়ডু, নরেন্দ্র মোদী এবং একনাথ শিন্ডে। —ফাইল ছবি।
শপথ গ্রহণের দিন অজিত পওয়ারের এনসিপি-কে নিয়ে বিজেপির ঘুম ছুটে গিয়েছিল।শপথ গ্রহণের পরের দিন চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি ও একনাথ শিন্ডের শিবসেনা বিজেপিকে চিন্তায় ফেলে দিল।
বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তেলুগু দেশমকে বিমান মন্ত্রক ছেড়ে দিলেও চন্দ্রবাবু নায়ডু এখনও লোকসভার স্পিকারের পদের দাবিতে অনড়। পাল্টা চালে বিজেপি অন্ধ্রপ্রদেশেরই বিজেপি সভানেত্রী ডি পুরন্দেশ্বরীর নাম স্পিকারের পদের জন্য এগিয়ে দিচ্ছে। পুরন্দেশ্বরী তেলুগু দেশমের প্রতিষ্ঠাতা এন টি রাম রাও-এর কন্যা। সেই হিসেবে তিনি চন্দ্রবাবুর শ্যালিকা। শ্যালিকার জন্য জামাইবাবু নিজের দাবি থেকে সরে আসতে পারেন বলে বিজেপি নেতাদের আশা। উল্টো দিকে কংগ্রেসের তরফে চন্দ্রবাবুকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তেলুগু দেশম স্পিকার পদের জন্য প্রার্থী দিলে কংগ্রেস সমর্থন করতে পারে।
রবিবার চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টির দুই সাংসদ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। রামমোহন নায়ডু পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি শপথ নেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। তেলুগু দেশমের দাবি ছিল পরিকাঠামো সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। সেই দাবি মেনে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তেলুগু দেশমকে বিমান মন্ত্রক ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানিকে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ও যোগাযোগ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, এর পরেও চন্দ্রবাবু লোকসভার স্পিকারের পদের দাবিতে অনড়। তার সঙ্গে এনডিএ-র আহ্বায়কের পদও দাবি করেছেন চন্দ্রবাবু। তাঁর যুক্তি, অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের সময়েও তেলুগু দেশমের জি এম সি বালাযোগীকে লোকসভার স্পিকারের পদ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। অতীতের মতো এনডিএ-র আহ্বায়কের পদও দাবি করছেন চন্দ্রবাবু। বুধবার চন্দ্রবাবু অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন। রবিবার চন্দ্রবাবু দিল্লিতে মোদীর শপথগ্রহণে ছিলেন। এই সৌজন্যের মধ্যেও টানাপড়েন অব্যাহত রয়েছে। এনডিএ-তে বিজেপির আর এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক নীতীশ কুমারের জেডিইউ-ও স্পিকারের পদ পেতে আগ্রহী।
কেন চন্দ্রবাবু ও নীতীশ, দু’জনেই লোকসভার স্পিকারের পদ চাইছেন? লোকসভায় তেলুগু দেশমের ১৬ জন ও জেডিইউ-এর ১২ জন সাংসদ রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য মোদী সরকারের দুই দলেরই সমর্থন প্রয়োজন। নীতীশ-নায়ডুর আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এনডিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের আঁচ পেলে বিজেপি তাঁদের দল ভেঙে দিতে পারে। দলছুট সাংসদেরা বিজেপিতে যোগ দিলে দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুযায়ী তাঁদের সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়ার ক্ষমতা স্পিকারের হাতেই থাকে। এনডিএ থেকে সরে গেলেও স্পিকারকে পদ থেকে সরাতে লোকসভার ৫০ শতাংশ সদস্যের সমর্থনে প্রস্তাব আনতে হয়।
এরই মধ্যে বিজেপির চিন্তা বাড়িয়ে আর এক শরিক একনাথ শিন্ডের শিবসেনা জানিয়ে দিয়েছে, তাদেরও একটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ দিতে হবে। শুধুমাত্র একটি প্রতিমন্ত্রীর পদে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে আসা শিন্ডের সেনারা খুশি নন। শিন্ডের দল লোকসভায় সাতটি আসনে জিতে এলেও তাঁদের দলের শুধুমাত্র এক জন সাংসদ, গণপতরাও প্রতাপরাও যাদবকে আয়ুষ মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। আজ দলের সাংসদ শ্রীরঙ্গ বার্নে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের পূর্ণমন্ত্রীর পদ চাই। শ্রীরঙ্গের বক্তব্য, ‘‘সাত জন সাংসদ থাকা সত্ত্বেও আমাদের একটি মাত্র প্রতিমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এইচ ডি কুমারস্বামীর জেডিএস-এর দু’জন সাংসদ থাকলেও তারা একটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ পেয়েছে। বিহারের জিতনরাম মাঝি তাঁর দলের একাই সাংসদ। তিনিও পূর্ণমন্ত্রীর পদ পেয়েছেন।’’
আজ খোদ শিন্ডের কাছেই তাঁর দলের সাংসদ, বিধায়করা নালিশ জানিয়েছেন, বিজেপি নির্বাচনের সময় তাঁদের দলের কাজেও নাক গলিয়েছে। উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত এই সুযোগে শিন্ডের শিবসেনা, অজিত পওয়ারের এনসিপি-কে তোপ দেগেছেন। তাঁর প্রশ্ন, এই দুই নেতা দল ভেঙে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রের জন্য কী পেলেন? এমনিতেই মহারাষ্ট্রে বিজেপির আর এক শরিক অজিত পওয়ারের এনসিপি-র নেতা প্রফুল্ল পটেল রবিবার মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেননি। কারণ বিজেপি তাঁদের প্রতিমন্ত্রীর পদ দিলেও অজিত পওয়ার-প্রফুল্ল পটেল দু’জনেই পূর্ণমন্ত্রীর পদের দাবিতে অনড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy