Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Girls Marriage

মেয়েদের বিয়ে কি আর একুশের আগে নয়?

স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মোদী বলেন, ‘‘মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়ালে তাদের মধ্যে অপুষ্টি রোখা যাবে কি না, তা পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। এই কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২০ ০৩:৩২
Share: Save:

মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে বাড়ানো যায় কি না, তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কমিটি রিপোর্ট জমা দিলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তৃতায় এই কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মোদী বলেন, ‘‘মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়ালে তাদের মধ্যে অপুষ্টি রোখা যাবে কি না, তা পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। এই কমিটি রিপোর্ট জমা দিলে তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।’’ সেই সঙ্গে ছক ভেঙে নারীস্বাস্থ্যের সঙ্গে স্যানিটরি ন্যাপকিনের প্রসঙ্গ তুলে নেটিজেনদের প্রভূত প্রশংসা কুড়িয়েছেন। নারী-ক্ষমতায়নের স্বার্থে মোদীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন সমাজকর্মীরা। যদিও তাঁদের একাংশের বক্তব্য, শুধু আইন করে বিয়ের বয়স পাল্টালেই কাজ হবে না। মহিলাদের শিক্ষা ও তথ্যের অধিকারের দিকটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে সরকারকে।

এখন এ দেশে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮, পুরুষদের ২১। এই দু’য়ের ফারাক ঘোচানোর দাবি আগেও তোলা হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০২০-২১ সালের বাজেট ভাষণে বলেছিলেন, ‘‘তৎকালীন ‘সারদা আইন (১৯২৯)’ সংশোধন করে নারীর বিয়ের বয়স ১৫ থেকে ১৮ করা হয়েছিল। তবে ভারতের অগ্রগতির সঙ্গে মহিলাদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। ‘মেটারনাল মর্টালিটি রেট’ বা প্রসূতি মৃত্যুর হার কমানো এবং মহিলাদের পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। মাতৃত্বে প্রবেশের বয়সের পুরো বিষয়টিকেই এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা প্রয়োজন।’’

অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সূত্র ধরেই গত জুন মাসে রাজনীতিবিদ তথা সমাজকর্মী জয়া জেটলির নেতৃত্বে একটি ১০ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গড়ে তোলা হয়। নারীদের বিয়ের বয়সের পরিবর্তন প্রয়োজন কি না, বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তা নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার কথা এই কমিটির। এই প্যানেলে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল ছাড়াও রয়েছেন উচ্চশিক্ষা, স্কুলশিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ও শিশুকল্যাণ সচিবেরা। রয়েছেন নাজমা আখতার, বসুধা কামাট এবং দীপ্তি শাহের মতো শিক্ষাবিদেরাও। গত ৪ জুন এই কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর।

মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১

হংকং , ইন্দোনেশিয়া , মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স , সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, নাইজার, নামিবিয়া, আইভরি কোস্ট , ক্যামেরুন , পুয়ের্তো রিকো, মিসিসিপি (আমেরিকা)

* তালিকা অসম্পূর্ণ

মাতৃত্বের বয়স, প্রসূতি মৃত্যুর হার কমানো ও মহিলাদের পুষ্টি হারের দিকে নজর রেখে রিপোর্ট তৈরি করার কথা সংশ্লিষ্ট কমিটির। প্রাথমিক ভাবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। যদিও নয়া শিক্ষানীতি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে সেই সময়সীমা কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি রিপোর্ট জমা দেবে এই কমিটি। যার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক এবং সামাজিক ন্যায় মন্ত্রক।

বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সমাজকর্মীদের একাংশের দাবি, বিয়ের বয়স বাড়ানো আসল সমস্যার সমাধান নয়। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন ললিতা কুমারমঙ্গলমের কথায়, ‘‘এখন বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮। তা সত্ত্বেও প্রত্যন্ত এলাকায়, এমনকি কিছু শহরেও, ঋতুমতী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, অর্থাৎ ১২-১৩-১৪ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা যাতে স্কুলে যেতে পারে, সবার আগে তা নিশ্চিত করা দরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Girls Marriage Age of Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE