(বাঁ দিকে) নীতীশ কুমার এবং নির্মলা সীতারামন (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
জেডিইউ-এর দাবি সত্ত্বেও বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দিচ্ছে না কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার বিহার-সহ দেশের অন্য অনগ্রসর রাজ্যগুলিকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে অর্থ মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছিলেন নীতীশ কুমারের দলের সাংসদ রামপ্রীত মণ্ডল। অর্থ মন্ত্রকের তরফে অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরি লিখিত জবাব দিয়ে জানিয়েছেন, বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই সিদ্ধান্তের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মন্ত্রী। ঘটনাচক্রে, তৃতীয় এনডিএ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হওয়ার আগেই নির্মলা সীতারামনের মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। শাসক জোট এনডিএ-র শরিক জেডিইউ-এর দাবি পূরণ না হওয়ায় বিজেপি এবং নীতীশের দলকে কটাক্ষ করেছে লালুপ্রসাদ যাদবের দল আরজেডি।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগে জাতীয় উন্নয়ন কাউন্সিলের প্রস্তাব মোতাবেক কয়েকটি মাপকাঠি বিশ্লেষণ করে কিছু রাজ্যকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হত। এই শর্তগুলির মধ্যে ছিল, রাজ্যটিকে পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত হতে হবে, রাজ্যটির জনঘনত্ব কম থাকবে এবং জনসংখ্যার একটি বড় অংশ তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষ হবে। শর্তগুলির মধ্যে এ-ও রয়েছে যে, রাজ্যটি প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী হবে কিংবা তার ভৌগোলিক অবস্থান কৌশলগত ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। একই সঙ্গে রাজ্যটি অর্থনৈতিক এবং পরিকাঠামোগত দিক থেকে পশ্চাৎপদ হবে। জেডিইউ সাংসদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থ মন্ত্রকের তরফে লেখা হয়েছে, “বিহারের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা সংক্রান্ত আর্জি খতিয়ে দেখার জন্য ২০১২ সালের ৩০ মার্চ একটি আন্তর্মন্ত্রক গোষ্ঠী রিপোর্ট পেশ করেছিল। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাতীয় উন্নয়ন কাউন্সিলের মানদণ্ডের ভিত্তিতে বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া যায় না।”
প্রসঙ্গত, কোনও রাজ্য বিশেষ রাজ্যের তকমা পেলে বিভিন্ন প্রকল্পে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মেলে। সংবিধানে কোনও রাজ্যকে এই বিশেষ তকমা দেওয়ার কোনও সংস্থান রাখা না হলেও অনগ্রসর এবং পশ্চাৎপদ রাজ্যগুলির উন্নতির স্বার্থে ১৯৬৯ সালে এই তকমা দেওয়ার প্রস্তাব করে পঞ্চম অর্থ কমিশন। এর আগে বিশেষ রাজ্যের তকমা পেয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলি। তবে চতুর্দশ কমিশনে কোনও রাজ্যকে বিশেষ তকমা দেওয়ার সংস্থান রাখা হয়নি।
দীর্ঘ দিন ধরেই বিহারের ‘অনগ্রসরতা’র কথা তুলে ধরে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে জেডিইউ। কয়েক দিন আগেই এই দাবিতে সরব হন নীতীশের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা সঞ্জয় ঝা। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার বাঁচাতে বিজেপির ভরসা মূলত দুই শরিক দলের উপর— নীতীশের জেডিইউ এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি। বিহারেও বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। টিডিপির তরফেও অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ রাজ্যের তকমা দেওয়ার দাবি উঠেছে। রবিবার সর্বদল বৈঠকে ওড়িশার বিজেডি এবং অন্ধ্রের ওয়াইএসআর কংগ্রেসও বিশেষ রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে সরব হয়েছে। বৈঠকে বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি তোলে এলজেপি এবং আরজেডিও।
এনডিএ-র গুরুত্বপূর্ণ শরিক দল হওয়া সত্ত্বেও জেডিইউ-এর দাবি পূরণ না হওয়ায় কটাক্ষ করেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক আরজেডি। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লালুর দলের তরফে লেখা হয়, “নীতীশ কুমার এবং জেডিইউ নেতারা ক্ষমতার ফল ভোগ করছেন আর বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা নিয়ে নাটুকে রাজনীতি করছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy