গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কাঁওয়ার যাত্রার পথে খাবার বিক্রেতাদের নাম লিখতে বাধ্য করা যাবে না। সোমবার উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের নির্দেশিকায় স্থগিতাদেশ দিয়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারকে শুক্রবারের মধ্যে নোটিস দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে হবে। আপাতত দুই সরকারের নির্দেশিকায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
অন্তবর্তী নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি রায় বলেন, যদি দুই সরকারের নির্দেশ কার্যকর করার অনুমোদন দেওয়া হয়, তবে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মামলাকারীদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। সওয়াল পর্বে তিনি এই ধরনের নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার পুলিশ-প্রশাসনের আদৌ রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
কাঁওয়ার যাত্রায় এই নাম-নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং নাগরিক সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। সেগুলি একত্র করে শুনানি হয় সোমবার। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরেই নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মহুয়া লেখেন, “কোনও দোকানদারের নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে আনার প্রয়োজন নেই। সুপ্রিম কোর্ট কাঁওয়ার যাত্রায় অবৈধ এবং অসাংবিধানিক নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সংবিধান দীর্ঘজীবী হোক। আমরা সর্বদা যেন এটিকে রক্ষা করতে পারি।”
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে কাঁওয়ার যাত্রা। প্রতি বছরই শ্রাবণ মাসের শুরুতে এই যাত্রায় শৈবতীর্থগুলির উদ্দেশে পাড়ি দেন পুণ্যার্থীরা। প্রসঙ্গত, কাঁওয়ার যাত্রার পথে যে সমস্ত খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের নাম বোর্ডে লিখে রাখার জন্য সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছিল মুজফ্ফরনগর জেলা পুলিশ। পুণ্যার্থীদের যাতে সংশ্লিষ্ট হোটেল বা ধাবা নিয়ে কোনও সংশয় না থাকে, তার জন্যই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন সেখানকার পুলিশ সুপার। তিনি জানান, রাস্তায় খাবারের অস্থায়ী স্টলগুলিকেও ওই নির্দেশিকা মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। এর আগে পুণ্যার্থীদের সম্মান জানিয়ে কাঁওয়ার যাত্রাপথে আমিষ বিক্রি বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “কাঁওয়ার যাত্রীদের যাত্রাপথের দু’পাশের যে সব খাবারের দোকান রয়েছে, তার মালিকদের বাধ্যতামূলক ভাবে দোকানের বোর্ডে নিজেদের নাম লিখে রাখতে হবে।’’ পরে অনুরূপ সিদ্ধান্তের কথা জানায় উত্তরাখণ্ড সরকারও।
কিন্তু এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবি ওঠে এনডিএ-র অন্দর থেকেই। মহুয়া সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে জানান, এই নির্দেশের ফলে সাম্প্রদায়িক অশান্তির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে এবং কয়েক জনের জীবিকা ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy