শিশু স্বাস্থ্য প্রকল্প। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাঁদের জন্য টাকা পাঠালেও প্রতি বছর কয়েকশো কোটি টাকা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ফেলে রাখছে বা ‘আনইউটিলাইজ়ড’ রাখছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ‘রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম’ (আরবিএসকে)-এ কর্মরত আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসারদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ।
আয়ুষ অর্থাৎ আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসার্স আরবিএসকে অ্যাসোসিয়েশন’-এর অভিযোগ, আরবিএসকে কার্যক্রমে মেডিক্যাল অফিসারদের প্রায় ৪৫০ শূন্য পদে নিয়োগ, তাঁদের বেতন বৃদ্ধি, দুর্ঘটনাজনিত বিমা-র মতো বহু দাবির প্রতি রাজ্য দীর্ঘ সময় ধরে কান দিচ্ছে না। অথচ, এই সব কাজের জন্য কেন্দ্র প্রতি বছর যে টাকা পাঠাচ্ছে সেটাও রাজ্য খরচ করছে না। যদিও এই অভিযোগ মানেনি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে জগদ্দলের বাসিন্দা এক আয়ুষ চিকিৎসকের করা আরটিআইয়ের জবাবে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ‘রিপ্রোডাকটিভ অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ’ বিভাগের অধিকর্তা ‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে’-র অন্তর্গত আরবিএস প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতরের টাকা খরচের খতিয়ান পাঠিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রতি বছরই আরবিএসকে-র মেডিক্যাল অফিসারদের খাতে রাজ্যকে দেওয়া টাকার মধ্যে কয়েকশো কোটি টাকা অব্যবহৃত থেকে গিয়েছে।
আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসারদের কথায়, তাঁরা মোবাইল ইউনিট ও ডিস্ট্রিক আর্লি ইন্টারভেনশন সেন্টারে কাজ করেন। স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ঘুরে শিশুদের কোনও গঠনগত ত্রুটি, বুদ্ধিগত এবং বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যা প্রভৃতি চিহ্নিত করে তাঁরা রিপোর্ট তৈরি করেন। তার ভিত্তিতে শিশুদের চিকিৎসা হয়। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে আরবিএসকে-র মেডিক্যাল অফিসারের ১৬৫৬ পদের মধ্যে মাত্র ১২০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ। বেতন দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৩২ হাজার টাকা, যেখানে এমবিবিএস চিকিৎসকেরা জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে ৬০ হাজার টাকায় নিযুক্ত হচ্ছেন। তাঁদের প্রশ্ন, কেন্দ্র যখন এই খাতে টাকা দিচ্ছে তখন সেই টাকা ব্যবহার না করে রাজ্য ফেলে রাখছে কেন? এতে শিশুদের রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ ধাক্কা খাচ্ছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আরবিএসকে প্রকল্পের এক শীর্ষকর্তার পাল্টা দাবি, ‘‘হয়তো কেন্দ্র বলছে যে ৬০ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দিচ্ছে তার মধ্যে ৪০ কোটি। ফলে যে টাকা আসলে পড়ে আছে বলে মনে করা হচ্ছে, অতটা আসলে পড়ে নেই। যে সরকারি কর্তারা আরটিআই-য়ের জবাব লিখছেন তাঁরা এই সার্বিক বিষয়টা ঠিকমতো জানেন না বলে তাঁদের পাঠানো হিসাব ঠিক থাকে না।’’
ওই কর্তার আরও বক্তব্য, ‘‘শূন্য পদে নিয়োগ আমরা কিছু দিনের মধ্যেই শুরু করব। কিন্তু আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসারদের বেতন বৃদ্ধির দাবি যথাযথ নয়। তাঁরা কখনই হাসপাতালে কর্মরত এমবিবিএস চিকিৎসকদের মতো বেতন পেতে পারেন না। আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসারেরা চিকিৎসা করেন না। শুধু স্ক্রিনিং করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy