Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সাংবাদিক খুনের তদন্তে সিবিআই

এক দিকে রাজধর্ম, অন্য দিকে জোটের বাধ্যবাধকতা। এই দুইয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত রাজধর্মকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিহারের সিওয়ানে সাংবাদিক হত্যার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০৩:০৭
Share: Save:

এক দিকে রাজধর্ম, অন্য দিকে জোটের বাধ্যবাধকতা। এই দুইয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত রাজধর্মকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিহারের সিওয়ানে সাংবাদিক হত্যার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।

এর ফলে সরকারের উপর জোটের গরিষ্ঠতম শরিক, আরজেডির চাপ তৈরি করার কৌশলকে মূলেই বিনষ্ট করলেন নীতীশ। কারণ এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহের আঙুল ক্রমশই আরজেডি-র বাহুবলী নেতা, জেলবন্দি সাহাবুদ্দিনের দিকে উঠছে। সিওয়ানের এই প্রাক্তন সাংসদ এতটাই প্রভাবশালী যে তিনি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পরেও লালুপ্রসাদ তাঁকে দলের সদ্যগঠিত পরিচালন সমিতিতে ঠাঁই দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিহার পুলিশ এই খুনের তদন্ত করলে প্রতি পদে আরজেডির তরফে বাধা আসার সম্ভাবনা ছিল। বিরোধী বিজেপি তো বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই খড়্গহস্ত। এরই পাশাপাশি, গত কয়েক দিনে নিহত সাংবাদিকের পরিবার এবং বিভিন্ন মহলে সিবিআই তদন্তের দাবিও উঠছিল। ফলে নীতীশ কুমার আর দেরি না করে সাংবাদিক-হত্যার ঘটনার সিবিআই তদন্ত করার সুপারিশ করে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি পাঠিয়ে দিলেন।

আজ ডিজিপি পি কে ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বসেন নীতীশ কুমার। জানান নিজের সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে বিরোধীদের জঙ্গলরাজের অভিযোগকে খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে আইনের শাসন রয়েছে। অপরাধীরা কোনও ভাবেই এখানে ছাড়া পাবে না।’’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অফিস থেকে বেরিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে সিওয়ান রেল স্টেশনের কাছে, বাজারের মধ্যে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন সাংবাদিক রাজদেও রঞ্জন (৪০)। ঘটনার পরেই এই খুনের ঘটনায় সাহাবুদ্দিনের নাম উঠতে শুরু করে। এর আগেও সিওয়ানে দু’জন সাংবাদিক খুনের অভিযোগ উঠেছিল সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতারা সরাসরি সাংবাদিক খুনের অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড় করান সিওয়ান জেলে বন্দি সাহাবুদ্দিনকে। বিহারে ‘মহা জঙ্গলরাজ’ চলছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

গত তিন দিনে সাংবাদিক খুনে জড়িত সন্দেহে আট জনকে আটক করে জেরা করা হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে স্টেশন-বাজারে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করে দেওয়ায় এক সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ারকে আটক করা হয়েছে। আজ ডিজি বলেন, ‘‘ওই ফুটেজের ৮০% উদ্ধার করা গিয়েছে। সেই ফুটেজ থেকে অপরাধীদের শনাক্তকরণে সুবিধা হবে।’’

রাজ্য-রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সিবিআই তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়ে নীতীশ ‘মাস্টার স্ট্রোক’ দিয়েছেন। রাজনৈতিক দিক থেকে তিনি এক দিকে আরজেডি-কে যেমন সামাল দিয়েছেন, তেমনই বিরোধী-বিজেপির আক্রমণের ধারকেও ভোঁতা করে দিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

journalist murder CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE