ধৃত মিখাইল শারগিন (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত।
অনলাইন সিস্টেম হ্যাক করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় (জেইই মেন) ৮২০ জনকে প্রতারণা করতে সাহায্য করেছেন রাশিয়ার পেশাদার হ্যাকার মিখাইল শারগিন। ধৃত শারগিনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দিল্লির এক আদালতে এই দাবি করল সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক অনুমান ছিল, জেইই-মেন পরীক্ষায় ২০ জন পরীক্ষার্থী প্রতারণা করেছেন। তবে সেই সংখ্যাটি বাস্তবে বহু গুণ বেশি বলে মনে করছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবার ২৫ বছরের শারগিনকে দু’দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির আদালত।
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৯ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিলেন। প্রতারণার অভিযোগে তাঁদের মধ্যে ২০ জনের উপর আগামী তিন বছরের জন্য এই পরীক্ষায় বসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত ২৪ জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। শারগিনকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়। কাজাখস্তান থেকে এ দেশের মাটিতে পা রাখতেই তাঁকে পাকড়াও করে সিবিআই। মঙ্গলবার আদালতে সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না শারগিন। শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, ‘‘শারগিন এক জন পেশাদার হ্যাকার। তিনি আইলিয়ন সফ্টঅয়্যার হ্যাক করেছেন।’’
সিবিআইয়ের অভিযোগ, জেইই-মেন্সের পরীক্ষায় বসতে ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের থেকে তাঁদের দশম এবং দ্বাদশের মার্কশিট, ইউজ়ার আইডি, পাসওয়ার্ড এবং পোস্ট ডেটেড চেক সংগ্রহ করতেন শারগিন। দেশ জুড়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে তা ‘সিকিওরিটি ডিপোজিট’ হিসাবে রাখতেন তিনি। এক বার তাঁদের প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়ে গেলে পরীক্ষার্থী পিছু ১২-১৫ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করতেন অভিযুক্ত।
শারগিন কী ভাবে ‘প্রতারণায় সাহায্য’ করতেন, তা-ও জানিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে অনলাইনে কম্পিউটারের মাধ্যমে জেইই-মেন পরীক্ষা হয়েছিল। সিবিআইয়ের দাবি, ওই কম্পিউটারগুলি নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও তাতে হ্যাক করেন শারগিন। যাতে ওই পরীক্ষার্থীরা শারগিনের সঙ্গীদের কম্পিউটারগুলির রিমোট অ্যাকসেস দিতে পারেন। শারগিনের ওই সঙ্গীরাই পরীক্ষার্থীদের হয়ে জয়েন্টের মূল পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর দিতেন। মোদ্দা কথা, পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে বসে অনলাইনে ওই কম্পিউটারের ‘দখল’ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতেন শারগিনের সহযোগীরা।
এই পরীক্ষায় সফ্টঅয়্যারের জোগান দিয়েছে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস বা টিসিএসের মতো নামজাদা সংস্থা। তবে তারও ফাঁকফোকর গলে হ্যাকিং করতে সমর্থ হয়েছেন বলে শারগিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ। শারগিনের কাছে থাকা বৈদ্যুতিন যন্ত্রগুলি হাতে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। সেগুলির ইউজ়ারনেম এবং পাসওয়ার্ড যাতে শারগিন তদন্তকারীদের জানান, তার নির্দেশ দিতে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy