Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Hate speech

Hate Speech: রাজধানীর বুকে অস্ত্রধারণের ডাক, ফের ঘৃণাভাষণ যতির

বিষয়টি অমিত শাহের নিয়্ন্ত্রণাধীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে দিল্লি পুলিশকে জানানো হলেও তারা এ নিয়ে বিশেষ কোনও পদক্ষেপ করেনি।

যতি নরসিংহানন্দ সরস্বতী ওরফে দীপক ত্যাগী।

যতি নরসিংহানন্দ সরস্বতী ওরফে দীপক ত্যাগী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪০
Share: Save:

একের পর এক মুসলিম বিদ্বেষী, উস্কানিমূলক ঘৃণাভাষণ, অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার ডাকের মতো বক্তব্য রেখেও নিশ্চিন্তেই আছেন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের ডসনা দেবী মন্দিরের প্রধান যতি নরসিংহানন্দ সরস্বতী ওরফে দীপক ত্যাগী।

কখনও হরিদ্বার, কখনও গাজ়িয়াবাদ তো কখনও রাজধানী দিল্লি। পুলিশের অনুমতি থাক বা না থাক, একের পর এক ‘ধর্মসংসদ’ আয়োজন করে উগ্র মুসলিম বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখা, মুসলিম মহিলাদের উদ্দেশে কুমন্তব্য করা বা হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলার মতো উস্কানিমুলক বক্তব্য রেখেই চলেছেন তিনি। গত বছর ডিসেম্বরে হরিদ্বারের ধর্মসংসদে তাঁর এ রকম বক্তব্য রাখা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিস্তর হইচই হওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে বিজেপি-শাসিত উত্তরাখণ্ডের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করলেও অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ফের জামিন পেয়ে বাইরে তিনি। সেই মামলার পরিণতিও কেউ জানে না। এই অবস্থায় দিল্লির বুরারিতে আরও একটি ‘ধর্মসংসদ’-এর আয়োজন করে সেখানে ফের উগ্র মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো এবং হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার কথা বললেন তথাকথিত এই ধর্মগুরু এবং ঘৃণাভাষণের পান্ডা।

বুরারির ঘৃণাভাষণের বিষয়টি অমিত শাহের নিয়্ন্ত্রণাধীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে দিল্লি পুলিশকে জানানো হলেও তারা এ নিয়ে বিশেষ কোনও পদক্ষেপ করেনি। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হওয়ায় তারা শুধু জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। দিল্লির পুলিশ এই দাবি করলেও অনুষ্ঠানের আয়োজক তথা সেভ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের কর্ণধার প্রীত সিংহের টুইটার হ্যান্ডেল কিন্তু জানাচ্ছে, গত ৪ জানুয়ারি বুরারির এই ধর্মসংসদের কথা ঘোষণা হয়েছিল।
এই প্রীত সিংহ এর আগেও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশে এ ধরনের ঘৃণাভাষণের আয়োজন করে পুলিশের নজরে এসেছেন।

গত বছরই দিল্লির যন্তরমন্তরে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশে ঘৃণাভাষণের আয়োজন করে গ্রেফতার হন প্রীত-সহ কয়েক জন বিজেপি নেতা। সে জন্য অবশ্য তাঁদের অল্প সময়ের জন্য গ্রেফতার হতে হয়। অতি সহজেই জামিন পান সকলেই। এ বারেও আয়োজক হিসেবে তাঁর নাম জড়ালেও এখনও অমিত শাহের পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
বুরারির অনুষ্ঠানে কী বলেছেন তথাকথিত ধর্মগুরু দীপক ত্যাগী ওরফে নরসিংহানন্দ? সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, তথাকথিত ধর্মগুরু নরসিংহানন্দ বলেছেন, ‘‘৪০ শতাংশ হিন্দু নিহত হবেন যদি ভারতে কখনও মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হয়। এটাই হিন্দুদের ভবিষ্যৎ। যদি এটা পাল্টাতে চান, তা হলে পুরুষ হোন। পুরুষ কে? যাঁর হাতে অস্ত্র থাকে।’’

‘পুরুষত্বের’ এমন ব্যাখ্যার পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ’দুয়েক জনতার একাংশ সাংবাদিকদের কয়েক জনকে মারধরও করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের কয়েক জনকে পুলিশ আটক করেছে। ধর্মসংসদে আসা লোকেদের হাতে সাংবাদিকদের মার খাওয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পুলিশ ব্যস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডিসিপি (উত্তর-পশ্চিম) ঊষা রংরানি এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কিছু সাংবাদিক জনতার ভিড় দেখে পিসিআর ভ্যানে বসেছিলেন। তাঁদের দেখে দর্শকেরা বিরক্ত হন। তখন সাংবাদিকরা পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছেন। কাউকে আটক করা হয়নি।
বিনা বাধায় একের পর এক ধর্মসংসদ ডেকে ঘৃণাভাষণ দেওয়া তথাকথিত ধর্মগুরুরা বুরারির অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, দেশের নানা প্রান্তে এ ধরনের আরও অনুষ্ঠান করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Hate speech Uttar Praesh Yogi Adiyanath
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy