বাদল অধিবেশন শেষ হতেই লালকেল্লায় নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা। চলতি সরকারে শেষ বার। সেটি ভোট-ভাষণও বটে। তার পরেই ভোটযুদ্ধে নামানো হবে মন্ত্রীদের।
যার ফলে সরকারি কাজকর্ম চৌপট হওয়ারই সম্ভাবনা।
এখন থেকেই নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় এমন অবস্থা যে, কোন মন্ত্রী কোন কাজটা করছেন, কার দায়িত্ব যে আসলে কী, সেটাই বোঝা দায়! পীযূষ গয়াল অর্থমন্ত্রী হয়েও মন্ত্রীর আসনে বসছেন না। মন্ত্রক ছাড়া অরুণ জেটলি আবার মন্ত্রকের বৈঠক করছেন। একের পর এক ব্লগ লিখছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে তাঁর পুরনো রেল মন্ত্রক এখনও ভুলতে পারেননি। নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলছেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করছেন যোগব্যায়াম।
এমন এক পরিস্থিতিতে বাদল অধিবেশনের পর মন্ত্রীদের দায়িত্ব বর্তাচ্ছে ভোটের প্রস্তুতির জন্য। বিভিন্ন মন্ত্রীকে এই দায়িত্বের জন্য তৈরি থাকার কথা বলেও দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকেও দলের সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মসূচিতে সামিল করা হয়েছে। বিজেপির সূত্রই বলছে, বিরোধীরা যে ভাবে জোট বাঁধছে, তাতে বিজেপির বেশির ভাগ আসনই আর নিরাপদ নয়। এ বারের অধিকাংশ সাংসদ, যাঁদের মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও রয়েছেন, তাঁদের আর প্রার্থী করা যাবে না। সম্প্রতি সুরজকুণ্ডে বিজেপি-আরএসএসের বৈঠকেও এই আশঙ্কা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কিন্তু মন্ত্রীদের কেন ভোটের দায়িত্ব দেওয়া?
বিজেপির এক নেতা বলেন, মায়াবতী যেমন প্রতি নির্বাচনী কেন্দ্রে এক এক জন ওজনদার নেতাকে দায়িত্ব দেন, বিজেপিও এ বারে দেশের সব ক’টি লোকসভা কেন্দ্রে সেই পথ নিতে চলেছে। শুধু তা-ই নয়, এর সঙ্গে প্রতি রাজ্যে আরও কিছু নেতাকেও সঙ্গে রাখা হবে। এঁদের দায়িত্ব হবে ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা। এত জন ওজনদার নেতা শুধু সংগঠন থেকে খুঁজে বার করা কঠিন। তাই মন্ত্রীদেরও কাজে লাগানো হবে। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, যত দ্রুত এই নেতা-মন্ত্রীরা কাজ শুরু করতে পারবেন, ততই মঙ্গল। সে কারণে অগস্টের পরেই মন্ত্রকের চেয়ে ভোটের কাজেই বেশি নজর দিতে হবে মন্ত্রীদের।
এ নিয়ে কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মন্তব্য, ‘‘নিজের মন্ত্রিসভার উপরেই আর প্রধানমন্ত্রীর কোনও রাশ নেই। পুরো অরাজক অবস্থা চলছে। কোন মন্ত্রীর কী দায়িত্ব, এখনই বোঝা দায়। আর এক বছরও বাকি নেই ভোটের। দেওয়াল লিখন স্পষ্ট, মোদী সরকারের বিদায় হচ্ছে।’’ বিজেপির এক নেতার জবাব, ‘‘এই নিয়ে বিতর্কের কী আছে? মন্ত্রীরাও তো দলেরই নেতা। যেমন প্রধানমন্ত্রীও দলের সৈনিক। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীও ভোটের সময় দলের নেতা হিসেবেই প্রচার করেন। গাঁধী পরিবারের বাইরে কাউকে কংগ্রেস নেতার মর্যাদা দেয় না, মনমোহন সিংহকেও কংগ্রেসই নেতা বলে মানতেন না, তাই তাদের কাছে এই বিষয়টি খটকা লাগতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy