Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
National News

কাশ্মীর নিয়ে সরব হওয়া ব্রিটিশ এমপি-কে ফেরত পাঠাল ভারত

ডেবির দাবি, চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর ভিসার মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

ডেবি আব্রাহামস। ছবি: সংগৃহীত।

ডেবি আব্রাহামস। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:৫৪
Share: Save:

কাশ্মীর প্রসঙ্গে বরাবরই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব তিনি। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পর প্রতিবাদপত্রও লিখেছিলেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সেই সদস্য ডেবি আব্রাহামসের অভিযোগ, সোমবার ভারতে পা রাখামাত্রই তাঁকে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও তা খারিজ করেছেন বিমানবন্দরের আধিকারিকেরা। শুধু তা-ই নয় , তাঁর সঙ্গে অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।

গোটা ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ডেবি এর সবিস্তার বিবরণ দিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত কাল সকাল ৯টা নাগাদ দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তিনি। ব্যক্তিগত কাজে এক সঙ্গীকে নিয়ে দু’দিনের জন্য ভারতে এসেছিলেন। বিমানবন্দরে ঢোকার পর রুটিনমাফিক ইমিগ্রেশন ডেস্কে নিজের ভিসা এবং অন্যান্য নথিপত্রও জমা দেন। সে সময় তাঁকে জানানো হয়, তাঁর ই-ভিসা খারিজ হয়ে গিয়েছে। ডেবির কথায়, ‘‘অন্য সকলের মতোই ই-ভিসা এবং সমস্ত নথি নিয়ে ইমিগ্রেশন ডেস্কে গিয়েছিলাম। আমার ছবি তোলার পর এক জন আধিকারিক (কম্পিউটার) স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়তে থাকেন। এর পর জানান, আমার ই-ভিসা খারিজ হয়ে গিয়েছে। এর কিছু ক্ষণ পর আমার পাসপোর্ট নিয়ে মিনিট দশেকের জন্য গায়েব হয়ে যান তিনি। এর পর যখন ফিরে এলেন, বেশ রূঢ় ভাবে চিৎকার করে বলেন, ‘আসুন আমার সঙ্গে’। তাতে আপত্তি করেছিলাম।’’

ডেবির দাবি, গত অক্টোবরে ভিসা করিয়েছিলেন তিনি। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত তার মেয়াদ রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, তাঁর সঙ্গে অপরাধীদের মতো ব্যবহার করেছেন বিমানবন্দরের আধিকারিকেরা। ডেবির কথায়, ‘‘আমাকে একটা ঘেরা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে লেখা ছিল, ‘ডিপোর্টি সেল’। এর পর আমাকে সেখানে বসতে বলেন ওই আধিকারিক। আমি তাঁর কথা শুনিনি। কী জানি! ওঁরা কী করতেন আমার সঙ্গে, কোথায় নিয়ে যেতেন! আমি চেয়েছিলাম, আশপাশের মানুষজন ব্যাপারটা দেখুক।’’

আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনড পদে নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

ভারতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে দিন দুয়েক থাকতে এসেছিলেন ডেবি। তবে বিমানবন্দরের ওই ঘটনার পর তা যে সম্ভব নয়, বেশ বুঝতে পারছিলেন। এর পর সেখান থেকেই ওই আত্মীয়কে ফোন করেন। এমনকি, ব্রিটিশ হাই কমিশনেও ফোন করেছিলেন তিনি। ডেবি জানিয়েছেন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’-এর আবেদনও করেছিলেন। তবে তা-ও মেলেনি।

আরও পড়ুন: পশ্চাদমুখী ও বোকা বোকা, বিবাহবিচ্ছেদ মন্তব্যে ভাগবতকে কটাক্ষ সোনমের

গোটা ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ ডেবি। বিবৃ়তিতে তিনি জানিয়েছেন, কেন তাঁর ভিসা খারিজ বলে জানানো হয়েছিল, বিমানবন্দরের কেউই যেন তার আসল কারণ জানতেন না। তিনি লিখেছেন, ‘‘বিমানবন্দরে দায়িত্বে রয়েছেন বলে মনে হচ্ছিল, এমন এক কর্তাব্যক্তিও এই ঘটনার কারণ জানেন না। শুধু জানান, তিনি সত্যিই দুঃখিত, যে আমার সঙ্গে এমনটা হয়েছে।’’ এর পর ডেবির হতাশ মন্তব্য, ‘‘এখন আমি শুধু ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি... যদি না, ভারত সরকারের মনের পরিবর্তন হয়! আমার সঙ্গে যে অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হয়েছে, তা-ও ভুলে যেতে রাজি আছি। আশা করি, আমার বন্ধুবান্ধব-পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেবেন ওঁরা।’’

গোটা বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও এ নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের কোনও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ঠিক কী কারণে ডেবি আব্রাহামসের ভিসা খারিজ বলে জানানো হল, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে ডেবির ওই সফরের সঙ্গী হরপ্রীত উপল। তবে অনেকের মতে, এর পিছনে মোদী সরকারের কাশ্মীর নীতির বিরোধিতা করাটাও একটা কারণ হতে পারে। ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পরই তার প্রতিবাদে ব্রিটেনে ভারতীয় দূতাবাসে একটি চিঠি লিখেছিলেন ডেবি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এই সদস্য ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ ফর কাশ্মীর’-এর প্রধান হিসাবেও কাজ করছেন দীর্ঘদিন। কাশ্মীর নিয়ে মোদী সরকারের নীতির বিরোধিতায় বরাবরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন ডেবি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy