ফাইল চিত্র।
নয়াদিল্লি, ২৭ জানুয়ারি: রাহুল গান্ধী প্রথম বার নির্বাচনের প্রচারে পঞ্জাবে পা রাখতে না রাখতেই রটে গিয়েছিল, দলের পাঁচ সাংসদ তাঁর অনুষ্ঠান বয়কট করছেন। একে ‘মিথ্যে প্রচার’ বলে খারিজ করে দিতে না দিতেই রাহুলের সামনে দাবি উঠল, দেরি না করে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হোক।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিংহ সিধু ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী—দু’জনেই আজ রাহুলের সামনে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ কে, তা ঘোষণা করে দেওয়া হোক।’’ সিধু ও চন্নীর মধ্যে কোনও এক জনকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করা হলেই দলের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়ে যাবে ভেবে কংগ্রেস হাই কমান্ড নীতি নিয়েছিল, নির্বাচনের আগে কাউকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরা হবে না। কিন্তু আজ জালন্ধরে প্রকাশ্য সভায় সিধু, চন্নী দাবি তোলায় রাহুলকে বলতে হয়েছে, কংগ্রেস নেতৃত্ব এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে। তাঁরাই এই সিদ্ধান্ত নেবেন।
আজ সিধু সুকৌশলে রাহুলের সামনে বলেন, পঞ্জাবের মানুষ জানতে চায়, কে দলের কর্মসূচি রূপায়ণ করবেন। সিধু বলেন, ‘‘আমরা সবাই এককাট্টা। কেউ টিআরপি-র জন্য লড়ছি না, সরকার গঠনের জন্য লড়ছি। আমাকে পুঁতে দেওয়ার দরকার হলে দেবেন, টুঁ শব্দ করব না। কিন্তু আমাকে শো-পিস করে সাজিয়ে রাখবেন না।’’ এর পরে চন্নী সিধুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘‘আপনি যে কারও নাম মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য ঘোষণা করে দিন। আমি সর্বাগ্রে তাঁর হয়ে প্রচার করব। কিন্তু অরবিন্দ কেজরীবালের মতো বহিরাগতকে বলতে দেওয়া চলবে না যে কংগ্রেসে অন্তর্কলহ চলছে।’’
জবাবে রাহুল বলেন, ‘‘যাঁর নামই ঘোষণা করা হোক, বাকি সব নেতা মিলে একটা টিমের মতো নতুন সরকারে কাজ করবে।’’ তাঁর দাবি, দু’জনকে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব নয়। এক জন নেতা হলে অন্যরা তাঁকে সাহায্য করবেন বলে কথা দিয়েছেন। মুখে কংগ্রেস কর্মীদের কথা বললেও কংগ্রেস নেতৃত্ব ভাল করেই জানেন, গান্ধী পরিবারকেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এবং তার ফলে দলের মধ্যে নতুন সঙ্কট ঘনীভূত হলে, তার ঠেলা সামলাতে হবে। অমরিন্দর সিংহকে সরিয়ে চন্নীকে মুখ্যমন্ত্রী করার পর থেকেই সিধু চন্নীর বিরুদ্ধে সরব। আবার দলিত নেতা চন্নীকে মুখ্যমন্ত্রী করেও ভোটের পরে সরিয়ে দেওয়ার কথা বললে ভুল বার্তা যাবে।
আজ অমৃতসরে স্বর্ণমন্দির, দুর্গিয়ানা মন্দির, বাল্মীকি তীর্থস্থল ঘুরে জালন্ধরের সভায় পৌঁছন রাহুল। তার আগেই রটে যায়, পঞ্জাবে কংগ্রেসের আট সাংসদের মধ্যে পাঁচ সাংসদ—অমরিন্দরের স্ত্রী প্রীণিত কউর, মণীশ তিওয়ারি, রভনীত সিংহ বিট্টু, জসবীর সিংহ গিল ও মহম্মদ সাদিক রাহুলের অমৃতসরের কর্মসূচি বয়কট করেছেন। তাঁরা রাহুলকে নেতা বলে মানতে নারাজ বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, এই ভুল খবর বিজেপি থেকে ছড়ানো হয়েছে। দলীয় সূত্রের দাবি, স্থানীয় সাংসদ বাদে কাউকেও রাহুলের কর্মসূচিতে ডাকা হয়নি। অমরিন্দরের মতো প্রীণিত এখনও কংগ্রেস থেকে ইস্তফা না দিলেও দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। কিন্তু বাকি চার জনের মধ্যে দু’জন দিল্লিতে কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন। এক জন কোভিড আক্রান্ত। আর এক জনের পারিবারিক অনুষ্ঠান রয়েছে বলে আগেই জানিয়ে রেখেছেন। ভুল খবর প্রচারের জন্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে আইনি নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy