৬০ বছর ধরে ভারতে বাস করছেন। এ দেশে বিয়ে করে সংসার করছেন। সন্তানও রয়েছে। অথচ তিনি এ দেশের নাগরিক নন। ৭০ বছর বয়সি সেই ইলা যতীন পোপাতকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া যায় কি না, তা পুনর্বিবেচনা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেন বম্বে হাই কোর্ট। মুম্বই শহরতলির উপজেলাশাসককে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি রেবতীমোহিত দেরে এবং বিচারপতি ডঃ নীলা গোখলের বেঞ্চ।
১৯৫৫ সালে আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডায় জন্ম হয় ইলার। ১৯৬৬ সালে মায়ের সঙ্গে চলে আসেন ভারতে। তখন তাঁর বয়স ছিল ১০ বছর। ইলার মায়ের ব্রিটিশ পাসপোর্ট রয়েছে। সেই থেকে ভারতেই রয়ে গিয়েছেন ইলা। এখানেই বিয়ে করেন এক ভারতীয়ের সঙ্গে। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। তাঁরাও ভারতের নাগরিক। ১৯৯৭ সাল থেকে ইলা ভারতের পাসপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা করছেন। বহু বার আবেদন করার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। শেষে ২০১২ সালে তাঁকে বলা হয়, আগে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে। কারণ, নাগরিকত্বের প্রমাণ ছাড়া পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা যাবে না।
২০১৯ সালে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানান ইলা। প্রয়োজনীয় নথিপত্রও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়। ইলার কোন দেশে জন্ম হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও তথ্য নেই মুম্বই পুলিশের খাতায়। তাঁর কাছে কোনও বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসাও ছিল না বলে জানায় পুলিশ। বস্তুত, ২০১৯ সালেরই মার্চ মাসে ইসার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
এর মাঝে উগান্ডার কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। উগান্ডার নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য কিছু সইসাবুদের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা করেননি ইলা এবং ভারতেই থেকে যান। তাঁর বৈধ নথিপত্র না থাকলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া যায় না। মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট জানিয়েছে, মামলাকারীর স্বামী এবং সন্তানদের ভারতের পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি নিজেও একজন প্রবীণ নাগরিক। গত ৬০ বছর ধরে তিনি ভারতে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অবৈধ কাজের অভিযোগ না-থাকলে তাঁকে রাষ্ট্রহীন ভাবে রেখে দেওয়া যায় না। এই মন্তব্যের পরে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ২৯ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।