প্রতীকী ছবি।
৭ বছরের ভাইঝি যখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এসে জানতে চাইল, ‘ব্লু হোয়েল গেম’-এর মানেটা কী, তখনই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন দিল্লির বাসিন্দা প্রিয়ঙ্কা বনশল। কোনওমতে ভাইঝিকে সামলানোর পর তাঁর মাথায় আসে, তাঁর ভাইঝির মতোই আরও অনেক শিশুকে বাঁচানোর দরকার। তাই সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট করে দেন গায়ে কাঁটা দেওয়া একটি ভিডিও।
সেই ভিডিওটি দিয়ে তাঁর ফেসবুক পোস্টে প্রিয়ঙ্কা যে লেখাটি লিখেছেন, তার শিরোনাম ‘সাবধান। ব্লু হোয়েল গেম: আমাদের ঘরে ঢুকে পড়ছে ধীরে ধীরে’।
তাঁর পোস্টে প্রিয়ঙ্কা লিখেছেন, ‘‘আমার ৭ বছর বয়সী ভাইঝি খুব অ্যান্ড্রয়েড প্লে স্টোর নিয়ে খেলে। যখন তখন ডাউনলোড করে নানা রকমের গেমস। আর সেই সব নিয়েই সারাক্ষণ মশগুল হয়ে থাকে। আমরা ব্যাপারটাকে এত দিন হালকা ভাবেই নিয়েছি। খেলাধুলোর জন্য চাইলেই ওকে (ভাইঝিকে) আমাদের ফোন দিয়ে দিতাম। আজ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই আমার ভাইঝি ওর মায়ের কাছে ‘ব্লু’ বানান কী জানতে চায়। ওর মা কিছু না ভেবেই সেটা বলে দেন। তার পর ভাইঝি ওর মায়ের কাছে জানতে চায় ‘হোয়েল’ বানানটা কী? সেটাও ওর মা ওকে বলে দেন। ওর মা কিছু বুঝতেই পারেননি।’’
আরও পড়ুন- বর্ণময় এবং বিতর্কিত, কে এই রাম রহিম
আরও পড়ুন- তিনটি নয়, ২৫০ সিলিন্ডার এনেছিলাম স্যর: কাফিল খানের ভিডিও ভাইরাল
পোস্টে প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছেন, সে দিনটা ওই ভাবেই কেটে যায়। তার পর রাত ১০টা নাগাদ ওঁরা যখন শুতে যাওয়ার তোড়জোড় করছি, ভাইঝি তখন প্রিয়ঙ্কাকে প্রশ্ন করে, ‘‘পিসি ব্লু হোয়েল গেমটা কি জিনিস গো?’’ প্রিয়ঙ্কা চমকে গিয়ে শিশুটিকে বলেন, ‘‘ও কিচ্ছু না। তুই কি আমাকে তিমির কথা বলছিস?’’ সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার ভাইঝি বলে, ‘‘না না, আমি তোমার কাছে ব্লু হোয়েল গেমটা কী জানতে চেয়েছিলাম।’’ তখন প্রিয়ঙ্কা ওকে বলেন, ‘‘সিয়া এ সব জেনে তোর কী হবে? ওটা তো ভূতের খেলা।’’ যাতে ভাইঝি খুব ভয় পেয়ে যায়, সেটা ভেবেই ভূতের কথা বলেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। তার পর তাঁর ভাইঝি খুব কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। কাঁদতে কাঁদতেই শিশুটি তার পিসিকে জানায় সে কিছু না বুঝেই ব্লু হোয়েল গেমটি ফোনে ডাউনলোড করে ফেলেছে। এ বার তো ভূত এসে ধরে ফেলবে তাকে! সেটা শুনে প্রিয়ঙ্কা আরও ভয় পেয়ে যান। বউদিকেও জানান গোটা ব্যাপারটা। তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখতে শুরু করেন বাড়ির আর কোন কোন ফোনে ওই গেম ডাউনলোড করেছে ওই শিশুটি। জানতে পারেন, শিশুটি শুধু ওর বাবার ফোনেই ডাউনলোড করেছে ওই গেম।
ভাইঝিকে প্রশ্ন করে কী জানতে পেরেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। দেখুন ভিডিও
‘‘এর পর আমি ওকে জিজ্ঞাসা করি, কে তোকে বলল এই গেম ডাউনলোড করতে?’’, পোস্টে লিখেছেন প্রিয়ঙ্কা। জানিয়েছেন, তার জবাবে শিশুটি তার পিসিকে জানায়, স্কুলভ্যানে তার দুই বন্ধু তাকে ওই গেম ডাউনলোড করতে বলেছিল। সেই বন্ধুরা নাকি প্রিয়ঙ্কার ভাইজিকে বলে, এটা খুব মজার খেলা। সেই বন্ধুরা সব ক্লাস ফোর ফাইভে পড়ে।
ফোনটা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে প্রিয়ঙ্কা ওই গেমের সব কিছু মুছে দেন। তার পর গোটা বিষয়টা তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান। তাঁরা প্রিয়ঙ্কাদের জানান, সব অভিভাবকদের ডেকে তাঁরা এ বার সতর্ক করে দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy