ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে নিযুক্ত বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) বানান কর্মশালার পরামর্শ দিলেন শহরের বিশিষ্টজনেরা। আজ শিলচরে আনুষ্ঠানিক ভাবে কাছাড় জেলার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনতা ভোটার তালিকায় অশুদ্ধ নাম-ঠিকানা নিয়ে সরব হন। কাছাড় কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৌরীন্দ্রকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আগে নামের ভুল বানানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো না। ভোট দেওয়াই ছিল আসল কথা। সে জন্য এখন এনআরসি-তে নাম তোলার সময় উত্তর-প্রজন্মকে ভুগতে হচ্ছে।’’ অসমের মতো রাজ্যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিজেপি নেতা শশাঙ্কশেখর ধর বিএলও-দের সমালোচনায় মুখর হন। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি যাওয়া তাঁদের কর্তব্য হলেও কেউ তা করেন না।’’ এমনকী, বিএলও-দের খুঁজে পাওয়া যায় না বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁদের জন্য বাংলা বানান কর্মশালার আয়োজন করতে জেলা প্রশাসনকে পরামর্শ দেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান সুবীর কর। ভবিষ্যৎ নিষ্কন্টক করতেই এটা জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
লাগাতার দোষারোপে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন সভায় উপস্থিত বুথ লেভেল অফিসাররা। শশাঙ্কবাবুর বক্তৃতার মধ্যেই তাঁরা বলেন— সমস্ত বিএলও-দের এ ভাবে দোষারোপ করা ঠিক নয়। কারও বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ থাকলে নামোল্লেখ করা হোক। পরে মাইক্রোফোনে গিয়েও বিএলও প্রতিনিধি সীমা দাস শশাঙ্কবাবুর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘‘কম্পিউটার অপারেটরদেরও বড় ভূমিকা থাকে। কম্পিউটারে লিখতে গিয়ে অনেক সময়েই ভুল হয় এবং থেকে যায়, সে দিকটি সবাই এড়িয়ে গেলেন।’’ তিনি নির্বাচন শাখাকেও দোষারোপ করতে ছাড়েননি। সীমাদেবীর অভিযোগ, সংশোধন-সংযোজনের জন্য তাঁরা যত ফর্ম সংগ্রহ করেন, সব ঠিক ভাবে অফিসে পরীক্ষা করা হয় না। অনেকগুলি ফেলে রাখা হয়। তাতে তাদের ভোটারদের গালমন্দ হজম করতে হয়। জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন আশ্বস্ত করেন, সমস্ত বিষয় তিনি খতিয়ে দেখছেন। মূল লক্ষ্য নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন। নির্বাচন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক জিতু দাস জানান, এই বছর একটি নতুন সফ্টওয়ার কাজ করছে। একাধিক জায়গায় যাঁদের নাম রয়েছে, তার সাহায্যে সেগুলি চিহ্নিত করা হচ্ছে।
খসড়া ভোটার তালিকায় কাছাড়ে ৫ হাজার ৫৪০ জন ডি-ভোটার রয়েছেন। সব চেয়ে বেশি কাটিগড়ায়— ১ হাজার ৪৭৫ জন। ধলাইয়ে ১ হাজার ৯ জন, উধারবন্দে ৯১৩ জন, শিলচরে ৭৯৩ জন, বড়খলায় ৭১৪ জন, লক্ষ্মীপুরে ৩৭২ জন এবং সোনাইয়ে রয়েছেন ২৬৪ জন ডি-ভোটার।
খসড়া তালিকায় জেলার মোট ভোটার ১০ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮৮৮ জন। তার মধ্যে শিলচর আসনে ২ লক্ষ ৫ হাজার ৫২১ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy