রতনলাল নাথ, বাদল চৌধুরী এবং মানিক সরকার।
বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পূর্ত দফতরে অর্থ নয়ছয় হয়েছে এবং তার তদন্ত হওয়া উচিত, এমন তথ্য ত্রিপুরার বর্তমান বিজেপি সরকারকে ‘গোপনে’ দিয়েছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার! এমন দাবি করে আগরতলার উড়ালপুল দুর্নীতি-বিতর্কে চাঞ্চল্য নিয়ে এলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রতনলাল নাথ। মন্ত্রীর ওই দাবিকে ‘প্রলাপ’ বলেই নস্যাৎ করে দিয়েছে সিপিএম। বামফ্রন্টের ভাবমূর্তিতে কাদা লাগাতেই এমন ‘গল্প’ আমদানি করা হচ্ছে বলে সিপিএম নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মানিকবাবু আইনি পথে যাবেন কি না, সেই ভাবনাও চলছে।
দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত বাম সরকারের পূর্তমন্ত্রী এবং সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাদল চৌধুরীকে হাসপাতালেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি আসন্ন। গোটা ঘটনাপ্রবাহে ত্রিপুরার রাজনীতি সরগরম। এরই মধ্যে আইনমন্ত্রী রতনবাবুর দাবি, বামফ্রন্ট আমলে পূর্ত দফতরে দুর্নীতির খবর বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারকে মানিকবাবুই দিয়েছেন বলে তাঁর কাছে খবর আছে! আবার একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বাদলবাবু কোথায় লুকিয়ে ছিলেন, তা জানতেন মানিকবাবু কিন্তু কিছু বলেননি। যিনি দুর্নীতির খবর প্রতিপক্ষ সরকারকে দিলেন, তিনি প্রাক্তন মন্ত্রীর লুকিয়ে থাকার খবর জেনেও দিলেন না কেন? রতনবাবুর দাবি, বাদলবাবু জনসমক্ষে হেয় হবেন, এটাই চেয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী!
মানিকবাবুর নাম জড়িয়ে রতনবাবুর মন্তব্য, ‘‘উনি খবর দিয়ে রাজ্যের মানুষের ভাল করেছেন। কিন্তু এখন তিনি মুখ খুলছেন না কেন? কুম্ভকর্ণের নিদ্রা ভঙ্গ করে কিছু বলা উচিত! ওঁর অবস্থান রাজ্যের মানুষের কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার।’’
যোগাযোগ করা হলে অধুনা বিরোধী দলনেতা মানিকবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেন, কী উদ্দেশ্যে এগুলো বলা হচ্ছে, তা বোঝাই যাচ্ছে। কী ভাবে অভিযোগের মোকাবিলা হবে, দলই সেই বিষয়টি দেখছে।’’ তিনি কি মানহানির নোটিস দেবেন? মানিকবাবুর মতে, ‘‘দলই সবটা দেখছে।’’ রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল ও সিপিএমের আইনজীবী-নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য আজ, বুধবার আগরতলা পৌঁছচ্ছেন। তখনই বাদল-কাণ্ডের সব প্রশ্নে তাঁর সঙ্গে ত্রিপুরার সিপিএম নেতৃত্বের কথা হবে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি জোট সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক অভিযোগ করা এবং গুরুতর অসুস্থ চিকিৎসাধীন বাদলবাবুকে হাসপাতাল থেকে বার করে এনে আদালতে পেশ করে হেনস্থার অপচেষ্টায় রাজ্যব্যাপী জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাতে ভীত হয়ে মন্ত্রী রতনবাবু প্রলাপ বকছেন এবং মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।’’
যে দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ বা প্রাক্তন মন্ত্রী-সাংসদ দুর্নীতি, ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত, তাদের মুখে ‘নীতি কথা’ মানায় না বলে সরব হয়েছে সিপিএম। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে সিপিএমকে ‘চোরের দল’ এবং বাদলবাবু ‘অসুস্থতার ভান’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন, তারও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। বিধায়ক, সাংসদ ও মন্ত্রী হিসেবে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাদলবাবু সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখেই কাজ করছেন বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন মানিকবাবু, গৌতমবাবুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy