Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কংগ্রেসের আশায় জল ঢেলে হরিয়ানায় ঘর বাঁচালেন শাহ

৭৫টি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে আসরে নেমে মনোহরলাল খট্টরের রাজ্যে বিজেপি পেয়েছে ৪০টি আসন। কংগ্রেস ৩১টি। সরকার গড়তে দরকার ৪৬ জন বিধায়কের সমর্থন।

এক মঞ্চে: সাংবাদিক বৈঠকের আগে (বাঁ দিক থেকে) জননায়ক জনতা পার্টির নেতা দুষ্মন্ত চৌটালা, বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জেপি নড্ডা, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং মনোহরলাল খট্টর। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

এক মঞ্চে: সাংবাদিক বৈঠকের আগে (বাঁ দিক থেকে) জননায়ক জনতা পার্টির নেতা দুষ্মন্ত চৌটালা, বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জেপি নড্ডা, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং মনোহরলাল খট্টর। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৩১
Share: Save:

রাতভর অপারেশনে কংগ্রেসের আশায় জল ঢেলে দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। নিশ্চিত করলেন হরিয়ানায় ফের দলের ক্ষমতায় আসা। আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন, ‘‘বিজেপি এবং দুষ্মন্ত চৌটালার জননায়ক জনতা পার্টি মিলে সরকার গড়বে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী, দুষ্মন্তের দলের উপমুখ্যমন্ত্রী।’’

৭৫টি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে আসরে নেমে মনোহরলাল খট্টরের রাজ্যে বিজেপি পেয়েছে ৪০টি আসন। কংগ্রেস ৩১টি। সরকার গড়তে দরকার ৪৬ জন বিধায়কের সমর্থন। ত্রিশঙ্কু বিধানসভায় ‘কিং-মেকার’ হিসেবে উঠে এসেছিলেন আইএনএলডি থেকে বেরিয়ে নতুন দল গড়া দুষ্মন্ত। তাঁকে পাশে পাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন রাজ্যের কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। তার পরেও অবশ্য অন্তত পাঁচ নির্দলের সমর্থন দরকার হত কংগ্রেসের।

শাহ কিন্তু খেলা শুরু করলেন উল্টো পথে। প্রথমেই নির্দলদের ‘টার্গেট’ করলেন তিনি। কাল রাতেই কয়েক জন নির্দল বিধায়ককে বিশেষ বিমানে দিল্লি নিয়ে আসা হয়। যাঁদের মধ্যে ছিলেন বিতর্কিত গোপাল গয়াল কান্ডা। রাত তিনটে পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ। আজ সকালে দেখা যায়, ৭-৮ জন নির্দল চলে এসেছেন বিজেপির পাশে। এর মধ্যে অবশ্য বিতর্ক বাধে কান্ডাকে নিয়ে। বিরোধী শিবির তো বটেই, তাঁকে নিয়ে আপত্তি তোলেন বিজেপি নেত্রী উমা ভারতীও কিন্তু কান্ডাকে ছাড়াও সরকার গঠনে এখন বাধা নেই বিজেপির সামনে।

শুধু কান্ডা নন, অমিতের চালে কার্যত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়েছেন গত কাল থেকে নিজেকে ‘অপরিহার্য’ ভেবে আসা দুষ্মন্তও। কংগ্রেস অথবা বিজেপির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে দর কষাকষির যে-ইঙ্গিত তিনি দিচ্ছিলেন, তার আর কোনও মূল্য রইল না।

অমিত অবশ্য দুষ্মন্তকেও হাতছাড়া করেননি। আজ দিল্লিতেই ছিলেন দেবীলালের প্রপৌত্র। আর সকালে অমিত চলে গিয়েছিলেন গুজরাতে। সেখানে আগামিকালও তাঁর বিস্তর কর্মসূচি। তবু দুষ্মন্তের সঙ্গে কথা বলতে দিল্লি ফিরে আসেন তিনি। সন্ধ্যায় দুষ্মন্তকে নিয়ে শাহের বাড়িতে যান তাঁর পড়শি অনুরাগ ঠাকুর।

দুষ্মন্তকে শাহ সাফ জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নই নেই, বড়জোর উপমুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়া যেতে পারে তাঁর দলকে। পরে তাঁর ভাই দিগ্বিজয়কে পাঠানো হতে পারে রাজ্যসভায়। দুষ্মন্তের আরও কিছু দাবিদাওয়া অবশ্য মোটের উপরে মেনে নিয়েছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, জাঠ অধ্যুষিত রাজ্যে অ-জাঠ নেতৃত্ব তুলে ধরার যে-চেষ্টা হয়েছিল, সেটা এ বারের ভোটে ধাক্কা খেয়েছে। তাই জাঠ উপমুখ্যমন্ত্রী করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন শাহ। সেই সঙ্গে বার্তা দিলেন আসন্ন দিল্লি বিধানসভা ভোটের জাঠ ভোটারদেরও।

বিজেপির অন্দরে আবার ক্ষোভ রয়েছে খট্টরের বিরুদ্ধে। অনেকের মতে, দলের খারাপ ফলের জন্য তিনিই দায়ী। তাই তাঁকে সরানো হোক। খট্টর অবশ্য আজ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, আগামিকাল রাজ্যপালের কাছে সরকার গড়ার দাবি জানাবেন তিনি।

দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেখানে আসরে নেমেছেন, সেখানে যে টক্কর দেওয়া সম্ভব নয়, সেটা বুঝে রণে ভঙ্গ দেয় কংগ্রেস। প্রদেশ সভানেত্রী শৈলজার অভিযোগ, ‘‘বিজেপি নির্দলদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। সব রকম সরকারিতন্ত্র ব্যবহার করে তাঁদের জোর করে তুলে নেওয়া হয়েছে।’’

ক’জন নির্দলকে পাওয়া গিয়েছে, তা অবশ্য আজ স্পষ্ট করেননি খট্টর।

অন্য বিষয়গুলি:

Assembly Election 2019 Haryana BJP Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE