Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

‘চাণক্য’ অমিতের মধ্যে সর্দার পটেলকে দেখছে বিজেপি

‘সর্দার’ মানে বল্লভভাই পটেল। আর তাঁর সঙ্গে যাঁর মিল খুঁজে পেল বিজেপি, তিনি দলের সভাপতি ও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই শুরু।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৩২
Share: Save:

লোকসভাতেই রীতিমতো আঙুল তুলে শাসাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিশানায় এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। গত মাসের ঘটনা। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা সংশোধনী বিল পাশের সময়। ওয়েইসি বলছেন, ‘‘এ ভাবে ভয় দেখাতে পারবেন না।’’ শাহের জবাব, ‘‘আপনার মনে ভয় ঢুকে গেলে কী করতে পারি?’’

সে দিনই সন্ধ্যেয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিল বিজেপি, ‘‘এ তো নতুন সর্দারের আবির্ভাব! হুবহু!’’

‘সর্দার’ মানে বল্লভভাই পটেল। আর তাঁর সঙ্গে যাঁর মিল খুঁজে পেল বিজেপি, তিনি দলের সভাপতি ও দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই শুরু। তার পর থেকে বিভিন্ন মঞ্চে বিজেপি এখন খোলাখুলিই বলতে শুরু করেছে। এমনকি গত দু’দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে বিজেপি সাংসদদের যে কর্মশালা হল, সেখানেও। অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সকলের সামনেই বলেন, ‘‘অমিত শাহ ‘চাণক্য’, তাঁর মধ্যে সর্দারের ছায়াও দেখতে পাই।’’

দলে এক সময়ের ‘লৌহপুরুষ’ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে টিকিট না দিয়ে অমিত যখন লোকসভা ভোটে গুজরাতের প্রার্থী হলেন, বিজেপির নেতারা হিসেব কষতে শুরু করেছিলেন। তিনশোর বেশি আসন পেয়ে মোদী ফের ক্ষমতায় এলে সেই অঙ্ক জোরদার হয়। আর রাজনাথ সিংহকে সরিয়ে অমিতকে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হল, তখন তো সেটি পাকাপোক্তই হয়ে দাঁড়াল।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

বিজেপির নেতারা তখনই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, ‘‘পাঁচ বছর পর অমিতই প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীর নম্বর-টু তিনিই।’’ বিজেপি বলছে, সময়ে সময়ে বদলে যায় ভাবমূর্তি। এক সময় উদার ছবির অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে জুটি ছিলেন কট্টর ভাবমূর্তির আডবাণী। মোদী ক্ষমতার কেন্দ্রে এলে আডবাণীর ভাবমূর্তি বদলে গেল। অমিতের ওজন বাড়তে তিনিই কঠোর মুখ। মোদী বরং নমনীয়। বিজেপির সভাপতি হিসেবে দলের রাশ তো ছিলই, এ বারে সরকারেও দাপট দেখালেন অমিত।

“এ দিনের পর জম্মু-কাশ্মীরে দুই নিশান, দুই সংবিধান আর নয়।” —অমিত শাহ

নর্থ ব্লকে অমিতের দফতরে সর্দার পটেলের ছবিও আছে। মন্ত্রকে এসেছে পটেলের মূর্তি। আজও টেনে আনলেন তাঁর প্রসঙ্গ। কংগ্রেসের কপিল সিব্বলরা যখন অভিযোগ করছেন, সর্দার পটেলও চেয়েছিলেন কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গেই যাক, তেড়েফুঁড়ে ওঠেন অমিত। বলেন, ‘‘দেশের বাকি সব প্রান্তের দায়িত্ব ছিল পটেলের উপরে। শুধু কাশ্মীরের দায়িত্ব নেন জওহরলাল নেহরু। পটেল কখনওই চাননি কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে যাক। সংসদের রেকর্ড ঠিক হওয়া জরুরি।’’

রাজ্যসভায় সব প্রস্তাব আর বিল পাশ হল, একে একে বিজেপি নেতারা বেরিয়ে বললেন, ‘‘সর্দার পটেলেরই স্বপ্নপূরণ করলেন অমিতজি।’’ ‘সাহসী পদক্ষেপে’র জন্য মোদী-শাহকে সাধুবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিলেন আডবাণীও। অভিনন্দন জানালেন ‘উপেক্ষিত’ সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিও। বক্তৃতার সময় রাজ্যসভায় এলেন মোদী। পাশে দাঁড়িয়ে অমিত দু’হাত নেড়ে তুলোধনা করলেন বিরোধীদের। সব অভিযোগের জবাব দিলেন। ঝুঁকলেন এক বারই। মোদীর সামনে। পিঠ চাপড়ে দিলেন তিনি। বেরিয়ে টুইট করলেন অমিত। কৃতিত্ব দিলেন মোদীকে। টুইট করেন মোদীও। অমিতের বক্তৃতার তারিফ করে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy